কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০১৭

পায়েলী ধর

নিজস্বী: এক ক্ষণজীবী বাতিজীন


(১)

অগ্নি-যোগ, সাহসী সম্ভার...

ইন্ধন ছিল কিছু স্বগত প্রত্যয়ের। প্রেক্ষিতে ঝুলে থাকা সংশয়ী রাত। সম্ভাবনার পৃষ্ঠাগুলো চাদরের মতো উড়তে উড়তে কোনও অজ্ঞাতবাসের শীত কেড়ে খায়। আমার পরিযায়ী পাখায় বেহেস্তের কারুকাজ। স্পর্শ দিলে তার ঈশ্বর স্খলন হবে। শোণিত ও স্বেদজনিত একটা স্বীকার্য ভাঙন অতল চিনবে বলে, দ্বিধাহীন এগিয়ে দিল একটা খয়েরিরঙা আশ্চর্য জাদুদণ্ড। শুক্রের গায়ে জোয়ার আসে অযথাই। তার ঢেউ মেপে মেপে রাখাল আমায় সমুদ্র হতে বলে। আমি বিস্তারে মেলেছি আজন্ম ভুখ। অকুস্থলে পরাগ প্রবণতা। রাখাল খননজীবী। অন্ধকার খুঁড়ে ভোর আঁকছে খনিজ আড়ালে। সূর্যজন্মের সাক্ষী স্বরূপ এরপরই কোনও ফলসা গাছের চোখ ফোটবার কথা...


(২)

হারাকিরির পাথেয় সম্বল...

দৃশ্যত আলো ঝেড়ে ফেলে মঞ্চের দু'ধারের জোকার এখন আমি ও রাখাল। একটা ফুসমন্ত্রের অছিলায় ক্রমশ ঘন করি মধ্যবর্তী ফাঁক। স্লাইড-শো সফরে সরে সরে যাচ্ছে স্মৃতিমেদুরতা। কয়েকটা বিভাজিত রাত, কয়েকটা বৃষ্টির মতো পাপ, কয়েকটা মিথ্যের মতো দৃঢ় বিশ্বাসঘাতী ভুল যুক্তাক্ষরের মতো নিঃশ্বাস বোনে সেলফিতে সেলফিতে। দেখি, আস্তিনে গোটানো বিষ  আর আমি সমার্থক হয়ে যাচ্ছি রাখালের বাঁশিতে। অথচ, স্নানঘরের দেয়ালে তখনও গোপন বেহতা ভ্রুণের বিষণ্ণ বিদায়।
আমি করুণায় পরিত্রাছুঁড়ি রাখালের গায়ে। আর ঈশ্বরের মতো অসংখ্য দোহাই সাঁতরে সাঁতরে আগুনের সখ্য করে আমার ধাতব কলম...


(৩)

পাতার নীচে ছলাৎছল জল...

ভাঙা ভাঙা শব্দশব কুড়িয়ে নিয়ে শ্মশানের গার্হস্থ্যে বেসাতি জমায় রাখাল। শহরের ঊনকোটি ভাঁজ ঘুম জড়িয়ে নিলে রাখাল পয়গম্বর সাজে।   টোকাটুকির ছেদ-যতি-ক্ষয়-বিলাপ জড়ো করে একটা অবাক পৃথিবী নামিয়ে আনে কোনও নিষিদ্ধ নীল মুষ্ঠিতে। ওদিকে বাড়ন্ত অভাবে তখন শুকিয়ে আসছে রাখালের আপাত সাজানো সপ্তপদী। উলটো পায়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে যায় আজন্ম প্রতিশ্রুতি।
রাখাল বলছে, স্তন্যের অভাব ওর জিভে বিস্বাদ গুলেছে দীর্ঘমেয়াদি।  আহা, বাৎসল্যে না হয় একটা অ্যালজোলাম উপহারে দিই ওকে। ঘুমের মতো বিশ্বস্ত আশ্রয়ে সমর্পণ শিখুক রাখাল...


(৪)

যবনিকায় চাঁদের ভরাডুবি...

দগদগে ঘায়ের ওপর নুন জড়ো হলে, যেমন করে বিফল হয় যাবতীয় প্রতিষেধক; রাখালের বুকও ঠিক ততখানি ঘুণপ্রবণ- উপশমহীন। দেখি, সম্পর্কের লাশ সব নুলো কাঁধে বইতে বইতে একটা অ্যাসাইলমের দিকে হেঁটে যাচ্ছে রাখাল। আর স্তোকবাক্য খইয়ের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনুসারী কিছু আহাম্মক ওকে এগিয়ে দিচ্ছে একটা দ্বন্দ্বময় ক্রুশের মুখোমুখি।
এখান থেকেই একটা নিষ্ক্রমণের পথ বেরোনোর কথা ছিল। অথচ, আজব ভুলভুলাইয়ার মহড়ায় মহড়ায় রাখাল আজকাল তুমুল অভিনেতা। কথিত স্বহনন শিকেয় তুলে মুখোশে গুটিয়েছে প্রতারক থাবা।
তবু, দৃশ্যতই ওর মুখে লেগে থাকে একান্নটা সতীপীঠ... রক্তস্নান... পাপ... অভিশাপ...


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন