কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

আমিনুল ইসলাম

 

কবিতার কালিমাটি ১৩৪


মিষ্টিগন্ধের বৈরাগ্য

 

(১)

 

যেভাবে প্রথম গন্ধ চিনতে শিখেছিলে

 

মূর্ত থেকে বিমূর্ততায় নিঃসঙ্গ অন্ধকারে

জেগেছিল আবির্ভাব

 

যে সমস্ত ফিকে মরসুম

রোদে চটা রঙের গন্ধ

আজও মূর্ধায় আলো জ্বালে

 

যেভাবে একদিন কুকুরটি

প্রথম পর্যবেক্ষণ করেছিল পূর্বপুরুষ

 

(২)

 

ব্রহ্মের কাছে

অস্তিত্বের স্বরূপ জানতে

এ জীবন সর্বহারা পাখি

 

বিশ্বাসের জেরক্স মেশিন

তোর অবর্তমানে তোকেই খোঁজে

 

এসবের যোগ ও সাধনা

ততোধিক প্রিয় মূর্ছিত ফুল

পল্লবিত আকাঙ্ক্ষার

কেন্দ্রবিন্দু থেকে ছিটকে পড়ে

 

(৩)

 

স্পর্শ নয় গন্ধে কাতর

জলের আর্তনাদ

তারপর কঠোর চুম্বন কলসির কানায়

 

যেখানে শরীর তুলো মাধ্যাকর্ষণ

তপস্যার অতলান্তে ততধিক আগুন

 

(৪)

 

মেঘের ভেতর একঝাঁক উড়ান

 

কেউ তো মাটির জানলা খুলে বেড়িয়ে আসতে চায়

মুঠো ফুঁড়ে আসে পাথর

কুঠারে জলের শিকড়

 

অন্তরে মধুমাধবীর আঁচল

কাণ্ড রূপান্তরিত হয় পাতায়

 

(৫)

 

যে সমস্ত তড়িৎ অবলম্বনে বয়ে চলেছে সময়

তার স্পর্ধার কাছেই

মাথা থেকে পা

কাণ্ডজ্ঞানহীন ডালপালা মেলেছে কোকিল

কাকের বাসায় মহানন্দে দোলখেলে চতুর শিয়াল

ভিজে বিড়ালের গল্পে গৃহিণী রাঁধতে বসেছে মাছ

 

খেলনাপাতির চৈতন্য

 

(১)

পাথরের চোখে

উল্টো ছবি হয়ে যাওয়া

ইন্দ্রিয়জ সৃষ্টি ও লয়

পাহাড় প্রমাণ দেখছে পাথর

 

একটু বিরাম নিতেই সীতা হরণ

সময়কে সময় দিয়েই সোয়েটার

কুরুশের আধিপত্য দেখে রাজার কথাই মনপ্রাণ

 

আমি দেবীর পায়ে মাথা রেখে আলগা করি তালা

সব খিল-কপাট খুলে সময় কখনোই থেমে যেতে পারে না

 

(২)

 

স্টপেজ ছাড়া গাড়ি থামে না

আমাকে থামতে হয় প্রতিটি মূর্তির কাছেই

মুহূর্ত আর মায়ায়, অবাক ও অত্যাশ্চর্যে

মণ্ডপের ধোঁয়ায় পালকগুলি স্পস্ট দেখতে পাই

 

এবং হারিয়ে যাওয়া খেলনাগুলোই আমাকে মাঠে ঠেলে দেয়

 

(৩)

 

অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল বস্তুর থেকে যখন দেখলাম

আমার চাকাগুলো এগিয়ে এসেছে

 

স্তম্ভিত কাকের পাঁচিল

জড়তার ভাষা আমার ঘরের বাইরে

নিজেকে তাদের সম্মুখে খুলে ধরতে

একটি অস্ত্রোপচার অবশ্যম্ভবের দরজায়

 

বাইরে থেকে সব নিশ্চুপ-এর জানলায় বাতাস ঢুকতে চায়


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন