কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

হীরক রায়চৌধুরী

 

কবিতার কালিমাটি ১০৯


দূর

 

হঠাৎ করে আগ্ৰাসী কথারা

ভিড় করেছিল মাথার ভিতরে

দেখেছিল ভাগাভাগির চোখে

সমুদ্রের চলার পথ

তার ওপরে ভেসে যাওয়া

নারী নিয়েও তরজা চালানোর

চেষ্টা করেছিল এমন প্রচেষ্টা

যে মানুষের বিষ্ঠা জলে মেশার আগে

তার গন্ধও কথাদের নাকে ঢুকছিল না

নেশার মতো সেই খেলা

জমে গিয়েছিল ভেদাভেদের

পরবর্তী ফলাফল কী হতে

পারে তা না ভেবেই

 

আসলে মূল সুর রথচক্রের

থেকে দূরে স'রে গিয়েছিল মনে হয়

 

সেইসব শেয়ালেরা

 

বহুদিন পর ভুঁড়ো শেয়ালগুলিকে দেখলাম আমি

উদাসী শেয়াল চালাক শেয়াল বোকা শেয়াল

এরা সরষে ক্ষেতের পাশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে চলেছে

তাদের মেটেরঙা শরীর নিয়ে

রাস্তার ওপারে যে বড় ধানের ক্ষেত

সেখানে বহুদূরে সরের মতো কুয়াশা জেগে আছে

মাঠ প্রায় ফসলহীন এধারে ওধারে সব্জি কিছু রয়েছে যদিও

সন্ধে নামব নামব করছে

দূরে যেখানে ধান লেগে আছে সেখানে এখনো

হাল্কা আলো ছুঁয়ে আছে শীতের বিকেলে

মৃদু আলোর বিকেলে হিম কুয়াশার বিকেলে

সেখানে সেইসব শেয়ালের আরেকটি অদেখা দল

একসাথে ডাকতে শুরু করেছে এই শুনে রাস্তার

এপারেরগুলি ধীরে স্থিরে খোলা বুক পেরিয়ে

চলে গেল ওপারে

আর ওগুলোকে তখন

আলাদা করে চেনা যাচ্ছিল না

 

ওরা সব অপ্রাকৃত শেয়ালই ছিল

মাঝে মাঝে হেঁটে যায় ওরা বাইকের আপার ডিপারের

আলোর নৃত্যে ল্যাপটপের স্ক্রিন বাঁচিয়ে

ওদেরকে যতটা খারাপ ভাবা যায় তার চেয়েও খারাপ

আবার যতটা ভালো ভাবা যায় তার চেয়েও ভালো

রাত্রির স্বকীয় আলোয় ওদের দেখেছি লেজ নেড়ে

দৌড়োতে আবার কারোকে বা কাঁদতে

 

গোমড়ামুখো শেয়ালেরা ব্যর্থ হয়েছে

অন্যের চালাকিতে ভুলে গিয়ে

তাই হাসি মুছে গেছে হয়তো বা চিরতরে

আমার ঘুমের আগে লালচে বাদামী শেয়ালগুলো

জড়ো হয় একজায়গায়

আর যখন আরেকটু স্বপ্নের ঘোর লেগে আসে

তারা নীলাভ আলো ছড়িয়ে

ডাকতে ডাকতে লতা পাতা বন আর মাঠ চিরে

কোথায় যেন চ'লে যায়

শুধু প'ড়ে থাকে শূণ্য গর্তগুলো তাদের

 

বেশ কিছুদিন পর পর এই ঘটনার পুনরাভিনয় হয়

আমার সকাল দুপুর বিকেলের খেলাঘরগুলিতে

 

করুণা

 

আমার অরণ্যের গাছের ওপরে

সরলতার  খোঁজে যে পাখিগুলি

এসেছিল তারা তার থেকে

মেঘ  নিংড়ে  নিয়েছিল

যন্ত্রণা দিয়ে নয় আদরে

শান্তির ভালোবাসায়

আর তারপর আমাকে

করুণা করেছিল বলেছিল

এ কাঠের পুতুল নাকি

এরই সম্পত্তি থেকে আমরা

প্রাণের রস জোগাড় করলাম

সুস্থির হয়ে এ সব শুধু দেখে

গেল এই ব'লে ডানা নেড়ে

উড়ে চ'লে গেল

 

তারা একপ্রকার করুণাই করেছিল আমায়

যেহেতু মাঝে মাঝে করুণারও দরকার হয়

 

রাত

 

মনে হয় রাত্রিতে বলা যায়

সব কথা

পৌষের প্রাক্কালে

যখন কুয়াশা পড়বে

পড়বে করছে তখন

রাতচরা পাখি ডেকে

ফেরে সকালে উঠবে

না  আর এই ভেবে কোনো

মন্ত্র বলে না অদ্ভূত রকমের

প্রাণের কথা গলা ছেড়ে ব'লে

যায় নিঃস্তব্ধতার ক্ষেতে

গলিত রাতের মাঝখানে এসে

 

সহসা মাঝরাতে জেগে উঠে

মনে হয় এই রাত কেন শেষ

হয় দূর থেকে ভেসে আসা

ডাকে যে লক্ষ বছরের ব্যথা

কায়াহীন হয়ে লেগে আছে

তার মায়া বড় কম নয়

 

স্মৃতি বড় জাগরুক হয় সে সময়ে

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন