সমকালীন ছোটগল্প
আত্মহত্যার স্মৃতি
‘কেমন
আছিস’, ‘এখানে তোর কোনও অসুবিধে হচ্ছে না তো?’, ‘সব ঠিকঠাক চলছে?’— না। এ ধরনের আলগা
পিরিত-মার্কা কোনও কথার মধ্যে না গিয়ে সঞ্জয় সরাসরি অনুপকে জিজ্ঞেস করল, তোর ব্যাপারটা
কী বল তো? তুই কি বিয়ে করতে চাস না, নাকি?
—আমি
কি একবারও সে কথা বলেছি?
—মুখে
হয়তো এটা বলিসনি ঠিকই, কিন্তু তোর কথাবার্তা, আচরণ তো এটাই বলছে। না হলে আমাকে এই সাড়ে
পাঁচশো কিলোমিটার ঠেঙিয়ে তোর সঙ্গে কথা বলার জন্য এখানে আসতে হবে কেন, বল?
অনুপ
বলল, সে দিন তো বাবাকে বললাম, আমি ফিরি, তার পর বলছি…
—আমি
তো বুঝতে পারছি না, এতে বলাবলির কী আছে! তুই যদি রাজি থাকিস, তোর বাবা-মা মেয়ে দেখে
রাখবে। তুই গিয়ে দেখবি। পছন্দ হলে ফাইনাল করবি। না হলে নাকচ করে দিবি, এই তো… ওঁরা
তা হলে আবার অন্য একটা মেয়ে দেখবেন।
—এত
তাড়াহুড়ো করার কী আছে?
সঞ্জয়
বলল, তাড়াহুড়ো মানে? তুই কি বুড়ো হয়ে গেলে বিয়ে করবি নাকি? চাকরিবাকরি পেয়ে গেছিস।
ঘরদোর আছে। আবার কী? আচ্ছা, আমাকে একটা সত্যি কথা বল তো, তুই কি কাউকে প্রেম করিস?
—না
রে বাবা। আমার অত সময় কোথায়?
—দ্যাখ,
ফালতু কথা বলিস না। প্রেম করার জন্য সময় বের করতে লাগে না। সময় নিজে থেকেই বের হয়ে
আসে। আর যদি অন্য কোনও ব্যাপার থাকে, তো সেটাও বল। আমি তোর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলি…
সঞ্জয়
থাকে নদিয়ার মালিঘাটায়। অনুপদের গ্রামেই। গ্রাম মানে হদ্দ গ্রাম। যতই ইন্টারনেটের যুগ
হোক। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের বিপুল ব্যবহার হোক। এখনও ওখানে মাইলের পর মাইল চাষের খেত।
গাছগাছালি, মেঠোপথ, মাটির ঘর, ক’হাত দূরে দূরে পুকুর। এখানে সেখানে ভেঙে ভেঙে পড়া
বহু পুরনো এই মন্দির সেই মন্দির। বাড়িতে বাড়িতে তুলসীতলা, গরু, হাঁস, মুরগি। নাম
বললেই আধ ক্রোশ দূর থেকে যে কেউ বলে দিতে পারে, তার বাড়ি কোথায়! সে কার ব্যাটা।
ছোটবেলা
থেকেই সঞ্জয় আর অনুপের বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব মানে শুধু বন্ধুত্ব না। একেবারে গলায় গলায়
বন্ধুত্ব। একজন জল খেলে যেন অন্য জনের তৃষ্ণা মেটে। সঞ্জয় যেমন অনুপদের ঘরের ছেলের
মতো, অনুপও তা-ই।
অনুপ
কাজ করে মিলিটারিতে। জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে বাসে প্রায় সওয়া এক ঘণ্টার রাস্তা— ত্রিহানায়।
চার দিক ঘেরা জঙ্গল। যখন-তখন হাতির উপদ্রব শুরু হয়। ওদের কয়েক জনকে নাকি একটা হাতির
পাল তাড়া করে কাউকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মেরে, কাউকে আবার পা দিয়ে পিষে মেরেছে। সমতল
হলেও ক’পা দূরেই পাহাড়। ও এখন সেখানেই পোস্টিং। সহজে টাওয়ার পাওয়া যায় না। কারও সঙ্গে
ফোনে কথা বলতে হলে মোবাইল নিয়ে উঁচু কোনও টিলায় উঠতে হয়। তাও যে সব সময় পাওয়া যায়,
তা নয়। পেলেও দু’-চার কথা বলতে না-বলতেই লাইন কেটে যায়। সে কথা ও ওর বাবা-মা’কে বহু
বার বলেওছে। কিন্তু সত্যিই লাইনটা কেটে যায়, না বারবার বিয়ের প্রসঙ্গে তুলে ওর বাবা-মা
যখন-তখন ফোন করে বলে ও তাঁদের এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই ওই কথা বলেছে, তা তাঁরা বুঝতে পারেন
না। ওঁরা ফোন করলে দু’-চারটে কথা বলার পরেই ও ‘হ্যালো’, ‘হ্যালো’ করে এমন ভান করে যেন
কিছুই শুনতে পাচ্ছে না। অথবা কথা বলতে বলতে ওর বিয়ের কথা উঠলেই ও ইচ্ছে করে লাইনটা
কেটে দেয়। পরে বাবা-মা জিজ্ঞেস করলে বলে, এখানে এই রকমই। কথা বলতে বলতে লাইন কেটে যায়।
তা ও নিজেই কেটে দেয়, না কি সত্যিই টাওয়ারের সমস্যা, সঞ্জয় বুঝতে পারে না। ওর বাবা-মা
তো পারেনই না।
তাই
বাধ্য হয়ে ওর বাবা-মা দ্বারস্থ হয়েছেন ওরই ছোটবেলাকার বন্ধু সঞ্জয়ের। বারবার করে বলে
দিয়েছেন, যে ভাবে পারিস বাবা, ওকে বিয়েতে রাজি করিয়ে ফিরিস, কেমন?
যেহেতু
সঞ্জয় তেমন কোনও কাজটাজ পায়নি। সামান্য একটা ব্যবসা করে। তাই নিতে চাইবে না বুঝতে পেরেই
যাতায়াতের ভাড়া ছাড়াও পথ-খরচা বাবদ কিছু টাকা জোর করে তার হাতে গুঁজে দিতে চেয়েছিলেন
তাঁরা।
কিন্তু
সঞ্জয় তা সবিনয় ফিরিয়ে দিয়েছে। শুধু ওর মা ভালবেসে রাত্রিবেলায় ট্রেনে খাওয়ার জন্য
নিজের হাতে আলুর দম আর পরোটা বানিয়ে টিফিন ক্যারিয়ারে করে দিয়েছিলেন দেখে ও সেটা নিয়েছে।
যাওয়ার টিকিট কাটার সময় একই সঙ্গে ফেরার টিকিটটাও করে নিয়েছিল।
গতকাল
রাতে ট্রেনে চেপেছে। সকালের দিকে নিউ জলপাইগুড়িতে নামার পর অটো পাল্টে পাল্টে ত্রিহানায়
এসেছে। তার পর সেই মুহূর্তে ও ঠিক কোথায় আছে, এর-তার কাছে খোঁজ করে করে শেষে ওর কাছে
পৌঁছতেই বেলা গড়িয়ে গেছে। আজই রাতের ট্রেনে তাকে ফিরতে হবে। তাই অনেক দিন পরে দুই
বন্ধুর দেখা হলেও কুশল বিনিময় বা ওই জাতীয় আজেবাজে কথা বলে সময় নষ্ট করতে চায় না সে।
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওকে রাজি করাতে হবে। ও বিয়েতে মত দিলে তখন নাহয় নিশ্চিন্ত মনে
অন্তত কিছুক্ষণ আড্ডা মারা যাবে। কিন্তু যতক্ষণ না ওর দিক থেকে কোনও সদর্থক উত্তর পাওয়া
যাচ্ছে, ততক্ষণ তো টেনশন থাকবেই। তাই ফের সে বলল, আমি কিন্তু তোর কাছ থেকে একটা পজিটিভ
উত্তর না নিয়ে যাচ্ছি না।
ও
বলল, কে তোকে যেতে বলেছে? আমার কাছে থেকে যা না…
—ইয়ার্কি
মারিস না। তোর বাবা-মা তোকে নিয়ে কিন্তু খুব চিন্তায় আছেন। বুঝতে পারছিস না? না হলে
এত দূরে আমাকে পাঠান? আচ্ছা, বিয়ের ব্যাপারে তোর কোনও ফিজিক্যাল প্রবলেম নেই তো?
—আরে,
না রে বাবা।
—মিলিটারিতে
ঢোকার পর আবার হোমো-টোমো হয়ে যাসনি তো?
—ধ্যাৎ,
তুই না… সেই একই রকম আছিস! কী যা তা বলছিস?
—বলার
যথেষ্ট কারণ আছে অনুপ। তোকে তো আমি ছোটবেলা থেকেই দেখছি। আমরা যখন আজ এই মেয়ে, কাল
ওই মেয়ের পিছনে ঘুরঘুর করছি, তুই তখন ভুল করেও কোনও মেয়ের দিকে ফিরেও তাকাতিস না। তাই…
—ঠিক
আছে, তুই যখন এ সব কথা বলছিস, তা হলে আমি তোকে একটা কথা বলি শোন। বিয়েতে আমার কোনও
আপত্তি নেই। কালো, বেঁটে, ন্যাড়া, মোটা, খোঁড়া, অন্ধ— মা-বাবা যে মেয়ে দেখে দেবেন,
আমি সে মেয়েকেই বিয়ে করব। তবে আমার একটা শর্ত আছে।
সঞ্জয়
বলল, বল না কী শর্ত, বল…
—আমি
কোনও মেজ, সেজ, ছোট, কিংবা ন’— এই ধরনের কোনও মেয়েকে বিয়ে করব না।
—কেন
?
অনুপ
বলল, কারণ, ওদের কাউকে বিয়ে করা মানেই, তাদের ওপরে তিনটে বা দুটো না হলেও, অন্তত একটা
না-একটা দিদি তো থাকবেই।
—হ্যাঁ,
থাকবে। তাতে তোর অসুবিধে কী?
—আছে।
অসুবিধে আছে।
—কী
অসুবিধে, সেটা তা হলে বল। না হলে বুঝব কী করে তোর প্রবলেমটা কোথায়?
—না।
আমি কোনও মেয়ের বোনকে বিয়ে করব না।
সঞ্জয়
বলল, কিন্তু কেন করবি না, সেটা বলবি তো…
—তোর
মনে নেই?
—কী?
—আমরা
তখন সেভেন-এইটে পড়ি… মনে আছে, নদীর ও পারে একটা মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল?
—না।
আমার মনে নেই। কত মেয়েই তো গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে! করতেই পারে। তার সঙ্গে তোর
মেজ, সেজ, ছোট, কিংবা ন’কে বিয়ে না করার সম্পর্ক কী?
অনুপ
বলল, আছে।
—আমি
তো সেটাই জানতে চাইছি। কী সম্পর্ক, সেটা বল তা হলে…
—ও
পারে একটি মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে শোনামাত্রই সেটা দেখার জন্য আমরা তখন
ছটফট করছি। বাড়িতে বললে আমাদের কেউ যেতে দেবে না। তাই আমরা কয়েক জন বন্ধু মিলে নদীর
পাড়ে বাঁধা মাঝিদের একটা ছোট্ট ডিঙি নৌকো চুপিচুপি খুলে নিয়ে মাথাভাঙা নদী পেরিয়ে
ও পারে গিয়েছিলাম…
সঞ্জয়
বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ, মনে পড়েছে মনে পড়েছে। মহেশচন্দ্রপুরে। ওই মেয়েটা একটা আমগাছের
নিচু ডালে গলায় দড়ি দিয়েছিল। তার কথা বলছিস তো?
—হ্যাঁ।
ও ছিল আমাদেরই বয়সি।
—পাশেই
ছিল ওদের বাড়ি। ওর মা কাঁদতে কাঁদতে বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলেন। ওর বাবা বুক চাপড়ে
খুব কাঁদছিলেন। কিন্তু কেউই সেই দড়ি কেটে বডিটা নামানোর সাহস পাচ্ছিলেন না। নামালেই
নাকি পুলিশি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে হবে…
অনুপ
বলল, হ্যাঁ। পরে থানা থেকে পুলিশ এসে সেই বডিটা নিয়ে যায়। ওই বয়সে চোখের সামনে আমাদেরই
বয়সি, কি দু’-চার বছরের বড় হবে, একটা মেয়েকে গলায় দড়ি দিয়ে ওই ভাবে ঝুলতে দেখে আমার
মনের ভিতরে এতটাই দাগ কেটেছিল যে, সেই দৃশ্য এখনও আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। এখনও
মাঝরাতে হঠাৎ হঠাৎ ওই মেয়েটাকে আমি স্বপ্নে দেখতে পাই। ধড়মড় করে লাফিয়ে উঠি। গলা
শুকিয়ে আসে।
—সে
কী রে!
—হ্যাঁ।
—শুনেছিলাম,
ওই মেয়েটা নাকি গলায় দড়ি দেওয়ার আগে একটা চিঠি লিখে গিয়েছিল।
—হ্যাঁ,
ও তাতে লিখে রেখে গিয়েছিল ওর মৃত্যুর জন্য কে দায়ী।
সঞ্জয়
বলল, সেই জন্যই বোধহয় পোস্টমর্টেম করার পর খুব হইচই হয়েছিল রিপোর্ট-টা নিয়ে…
—হ্যাঁ,
আর তাতে ধরা পড়েছিল, ও অন্তঃসত্ত্বা।
—হ্যাঁ,
সেটাও শুনেছিলাম।
অনুপ
বলল, কে করেছিল জানিস?
—হ্যাঁ,
ওর জামাইবাবু।
—তা
হলে?
সঞ্জয়
বলল, তা হলে কী?
—বুঝলি
না? শালিদের সঙ্গে জামাইবাবুরা কী করে!
—তুই
কি পাগল না কি?
—তা
জানি না। তবে সে দিনই আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমি কোনও দিন বিয়ে করব না। আর
যদি করিও, কখনও কারও কোনও শালিকে বিয়ে করব না।
—এ
কী বলছিস? সব জামাইবাবু কি ও রকম হয় নাকি?
অনুপ
বলল, সব না হলেও কিছু কিছু তো হয়। না হলে ওই ঘটনাটা ঘটল কী করে বল?
—সে
তো লাখে একটা। লাখে কেন, কোটিতে একটা হবে কি না সন্দেহ।
—কোটিতে
কেন, যদি দশ কোটিতেও একটা হয়, হয় তো?
—হতে
পারে!
—আর
সেটা যে আমার কপালে পড়বে না, কে বলতে পারে?
সঞ্জয়
বলল, তোর তো ভারি অদ্ভুত যুক্তি। যে-কোনও মেয়েই কারও না-কারও তো শালি হবেই।
—সব
মেয়ে কী করে হবে? যে-মেয়ে ঘরের মধ্যে সবচেয়ে বড়, তার বিয়ের পরে তার বোনেরা ওই জামাইবাবুর
কাছে শালি হবে ঠিকই, কিন্তু সে তো কারও শালি হবে না।
—আরে,
নিজের না-হলেও তারও তো পিসতুতো মাসতুতো দিদি থাকতে পারে… সেই সূত্রে সেও তো ওই জামাইবাবুদের
শালি হবে, না কি?
অনুপ
বলল, না। দূর সম্পর্কের জামাইবাবুদের নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই।
—ও,
তার মানে তুই যে কোনও বাড়ির বড় মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি আছিস, এই তো?
—হ্যাঁ।
—তো,
এটা বললেই তো হয়ে যেত। এর জন্য এত ভ্যানতারা কষতে গেলি কেন? এই সামান্য ব্যাপারটা ফোনে
বলে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যেত। আমাকে সব কাজ ফেলে আর এত দূরে ছুটে আসতে হত না।
অনুপ
বলল, সত্যিই, তোর বুদ্ধি না… একেবারে বাঁধিয়ে রাখার মতো। এ সব কথা মা-বাবাকে বলা যায়?
—ঠিক
আছে, তোকে বলতে হবে না। আমিই বলব।
—এ
সব মা-বাবাকে বলবি?
—এ
সব বলব কেন? বলব, ওর জন্য মেয়ে দেখুন। তবে এমন মেয়েই দেখবেন, যে-মেয়ে বোনেদের মধ্যে
সবচেয়ে বড়। তাই তো?
অনুপ
বলল, হ্যাঁ, একদম তাই।
—তা
হলে আমি উঠি?
—উঠি
মানে? এখন কোথায় যাবি? তোর ট্রেন তো রাত্রে!
—না।
সেই ওঠার কথা বলছি না। বলছি, কাছাকাছি কোনও পাহাড়ের টিলায় উঠি…
—কেন?
টিলায় উঠবি কেন?
সঞ্জয়
বলল, না হলে যে টাওয়ার পাব না!
—টাওয়ার
দিয়ে কী করবি?
—তুই
যে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিস, এই সুখবরটা তোর বাবা-মা’কে দিতে হবে না?
সঞ্জয়ের
কথা শুনে অনুপের মুখে হাসি ফুটে উঠল। আর অনুপের হাসি দেখে এখানে আসার পর এই প্রথম খুশি
হল সঞ্জয়। তার মনে হল, যে দায়িত্ব ওর বাবা-মা তাকে দিয়েছিলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পরে মনে
মনে যে প্রতিজ্ঞা সে করেছিল—যে ভাবেই হোক, ওকে সে রাজি করাবেই — অবশেষে সে তা করাতে
পেরেছে। সেই আনন্দেই প্রায় লাফাতে লাফাতে সামনের একটা টিলায় উঠতে লাগল সঞ্জয়।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন