বিনিময়
এক সময় ভাবতাম একদিন সমুদ্রে যাব আর তার বিশাল জলরাশির মধ্যে একটু একটু করে হারিয়ে যাব। কোনো স্মৃতিই অবশিষ্ট থাকবে না। মিশে যাব অনন্তে। এখন প্রতি বছর সমুদ্রে যাই। হোটেলের পাথর ঘেরা পথ পেরিয়ে সি বীচে যাই। ছাতিওয়ালা চেয়ারে চুপচাপ বসে থাকি জলের সমান দূরত্বে। কখনো তাকে ছুঁয়ে দেই, কখনো সে আমাকে। ঝিনুকের মালা কিনি, বার্মিজ ফতুয়া, রাখাইন মেয়ে। এখন আর জলের মধ্যে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে না, এখন যে কোনো দূরত্বে জল, এখন যে কোনো জল আমি।
জন্মদিন
জন্মদিনের রাতে অনেক বাজি পুড়ল
ইয়াম্মি ইয়াম্মির কেক আর কাচ্চি বিরিয়ানির সুগন্ধ
বাতাসে
তুমি ভাবছো এবার বয়স কত হলো?
তেত্রিশ,
ছত্রিশ, চল্লিশ
দিন দিন বয়স বাড়ছে
আর পেটের চামড়া স্ফীত হয়ে উঠছে
সারারাত
ট্রাকের শব্দ
মোবাইল,
এসি, ল্যাপটপে গান
রাস্তা দিয়ে গাড়ি ছুটে চলেছে
মানুষ,
গরু-মহিষ, সব্জি
তুমিও তাদের সাথে ভ্রমণ করছো পুরো একটা বছর...
রঙধনু
রঙধনুর কথা
শুনে ঠিক সেদিনকার দুপুরের কথা
মনে পড়ল
দুপুর গড়িয়ে
প্রায় বিকেল-
বটের লাল
লাল ফল জেগে আছে প্রান্তরে
আকাশে একটা
গাঢ় রঙধনু
বৃষ্টির ঠিক
পরের আলো-ছায়া
তোমার চুল
থেকে ঠিকরে পড়ছিল
জ্যোৎস্নার আগুন জ্বলা আলো
এখানে বহু
লোক, নাগরিক, অভ্যাগতজন
জারুল-জামরুল-পদ্মের সারি-
এখানে মৌমাছি
আর ফুলেদের স্বর্গোদ্যান
নিভৃতে বয়ে
চলেছে বিস্তির্ন সাগর
এইখানে নীরবতা
রঙধনুর গাঢ়
রং তোমার মনে
চোখে শুনশান
অতল জলরাশি
হে পাতক, হে
প্রেমিক
যখন ঘৃনা এবং অপমান তোমাকে ছেয়ে ফেলবে
রাতগুলো বালিশের কোনায় লুকাবে কান্না
আমি তখনও তোমায় বাঁচাতে চাই-
শত শত বোমা আর রাইফেলের শব্দে
যখন প্রকম্পিত হবে শহরের প্রতিটি রাস্তা
যখন জল আর পারদের মাঝে কোনো ফারাক থাকবে না
রক্ত হবে পানীয়
আমি তখনও তোমাকে বাঁচাতে চাই-
প্রতিটি মাঠ যখন হাশরের ময়দান হয়ে যাবে
নমরুদ পোড়াবে আতশবাজি,
তুমি যখন পালিয়ে বেড়াবে পাহাড়ের নাভীস্থলে
হে পাতক আমি তখনও তোমাকে বাঁচাতে চাই
হে তৃণ আমি তখনও তোমাকে বাঁচাতে চাই
প্রেম যখন ঘৃণায় পরিণত হবে
আমি তখনও তোমাকে বাঁচাতে চাই
হে মানব
তখনও তোমাকে বাঁচাতে চাই
হে মানবী
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন