কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

অপরাহ্ণ সুসমিতো

জীবন সে ধরে জীবনের রূপ

তাই বলেছি নাকি! দেখে অবাক হলাম, ভাবলাম ভুল করে দিচ্ছেন কিনা।
কেমন আছেন তা জিজ্ঞেস করি নাএত এত ভাবি যে সারাদিন কাজের চাপ বেড়েছে, কান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, শব্দদূষণ সহ্য হয় না।

সেখানে যেয়ে মিথ্যেমিথ্যি ভাবলাম আপনি বেশ লাল সোফাগুলোর একটাতে বসে গল্প করছেন কারো সাথে। মিথ্যে হাসিও দিলামতারপর ওদের কাছে শুনলাম এটা আপনার শহরের সেকেন্ড কাপের চেইন শপআরও কতদিন আপনাকে খুঁজতে যাব নিশ্চিত থাকুন।

আমি চা খেলাম। আমার বন্ধু রিজওয়ানআমি তো আর চায়ের বিল দেই না তার সাথে থাকলে। সে একটা বাংলাদেশি বড়লোকরিজওয়ানের সাথে অনেকদিন পর দেখা হলো।

উনার বাসা আমার অফিসের পাশেই। অদ্ভুত জটিল এক ৪০ উনি।

আমি বোঝার চেষ্টা করি বড়লোকদের কী ধরনের ক্রাইসিস থাকেআর এই চল্লিশেও মানুষ কেমন না পাওয়ায় ভোগে

উনি সুবিধাজনক কারণ আমার সাথে মোটেও প্রেম করতে চান না, প্রেমের ভাবও করেন না
মনে করেন আমার একজন লোনলি ৪০ বন্ধু

আমার ছবিটা খেয়াল করুন। ছবিটাতে হিংসুটে দেখাচ্ছে। আমি এরকম হিংসুটে না। লিপস্টিক দিয়েছি তাই এরকম লাগছে। নি:শব্দ কাল কায়রো যাচ্ছে নি:শব্দের সাথে যৌনতা আরও বিড়ম্বনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কী ভীষণ বিড়ম্বনা আমি আপনাকে বোঝাতে পারব না। আমি খুব চেষ্টা করছি ওকে সহযোগিতা করার, কিন্তু কোনো  উপায় হচ্ছে না। আবার আমি যদি ভাবি যে আচ্ছা এসব করবই না তাহলে ও আরও অপমানবোধে ভোগে। আবার যদি করতে যাই তো যা হয় তা ভয়াবহসেক্স করতে বসে তো ভদ্রতা করার কোনো উপায় জগতে নেই। আবার আমি কো্নো  ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাই না।
ওর প্রতি মায়া বেড়ে যাচ্ছে। করুণা না নিশ্চিত, মায়াই
আমি নিজের ইচ্ছার কথা ভুলতে চেষ্টা করছি। ভাবি যে দুনিয়ায় মানুষের এত সংকট, এখানে আমার এই যৌনতার আকাঙ্ক্ষা এবং নিরুপায় অবস্থা এ নিয়ে দু:খ করা বিলাসিতা।

কিন্তু নি:শব্দকে কী বলি, কী করি!

ডাক্তারের কাছে যাবে না, গেলেও কোনো কিছু হবে নাআরও মনে হয় আমি না হয়ে এই দুনিয়ার আর যে কেউ হলে এই ছেলেটাকে কী যে হেয় করত, কেমন অশান্তিতে ফেলে দিত!

আমি মহৎপ্রাণ তা বলছি নাকিন্তু আমি তো মায়া করি, ভালোবাসি

আমি হলাম গিয়ে বিবাহিত ব্যাচেলর। ভালোবাসা আছে, যৌনতা নাই

আমার বন্ধু প্রজাপতির অ্যাবরশন হলো, ও বিস্তারিত জানিয়েছে আমাকে। ও বলেছে খবরদার ন্যাকামি করে মায়া দেখাবি না, তাতে বেশি খারাপ লাগবেপ্রজাপতি আমার ভালো বন্ধু।

কাল প্রজাপতির জন্যে আপনার বই, অনেকগুলো ভাপা পিঠা, একটা কার্ড, গীতবিতান এসব কিনে পাঠালাম। তাকে আমি ভালোবাসি। আমার এতো ধরনের ভালো দূরে থাকা বন্ধু!

আর আপনাকে তো মাথার সাথে বেঁধে ঘুরি। আপনি আমার মস্তিস্কে থাকেনভাববাদী হলে বলতাম হৃদয়ে থাকে

ধরারও ধূলিতে যে ফাগুন আসে, কই তাহার মতো তুমি আমার কাছে কভু  আসো না তো...
ছোটবেলায় শুনতাম

শুনুন, আমাকে না বলে বেশি বেশি অসুস্থ হয়েন না, আপনার জন্যে আমার মাথার একপাশ ব্যথা। ঘুম ভেঙে গেলে মনে হয় আপনার বুঝি বুকে ব্যথা। আপনাকে এতো দেখতে ইচ্ছা করে!

আমাকে ১১টা সিলেটী মণিপুরী শাড়ি কিনে দিয়ে যান, তাড়াতাড়ি সব হলুদ লাল ছাইরঙা সাদা কালো আর ১১টা হতে যে কয়টি লাগে
শাড়ি পরে কোথাও যাওয়ার নেই। আচ্ছা আর কোনো শাড়ি কেনা হবে না। আপনি  একজন সুখী মেয়ে মানুষ হলে বরং আপনাকেই দেওয়া যেত। অসুখী মেয়েদের শাড়ি কিনে দেওয়ার কোনো মানে নেই।

আমি তো আপনাকে চোখে মুখে মেখে রাখছি। দূরে কে বলবে? দূরে থাকার উপায় নেই।
এমন যে পিছে পিছে ঘুরি সারাদিন! সারাক্ষণ বলি এই আমাকে দ্যাখো, শীত শেষ হোক

খারাপ সময় চলতেই থাকবে তা তো হয় না!

আপনাকে নিয়ে আমি ভুটান পালাবোরাস্তার পাশে ফলের দোকান থাকবে আমার। তাতে এমন তাজা আপেল, খয়েরি রঙ। আর সুতোয় ঝুলানো শুকনো শুকরের মাংস।

আপনার থাকবে গাড়ি, কোরিয়ান গাড়ি, পাহাড়ের পাশ দিয়ে গাড়ি চালাবেন, আমি হাতে ট্যাটু আঁকবো

আমাদের অনেক ট্যুরিস্ট থাকবে। কিছু টাকা জমলে আমরা চলে যাব মধ্য ভুটানে বেড়াতে, আমাদের কোরিয়ান গাড়িটা নিয়েই। যাওয়ার পথে যেখানে ইচ্ছা দাঁড়াবফলের দোকানের জন্যে আমার একটু মন খারাপ থাকবে। আপনাকে একটা চক্লেট রঙের জ্যাকেট কিনে দেব, আর আমি লাল
আহ! পাইন গাছের পাশ দিয়ে আমরা যাব কেমন সুন্দর লাল ও চক্লেটে...



1 কমেন্টস্:

  1. একটু ব্যতিক্রম ধর্মী লিখা - পড়লাম মন দিয়ে এবং আগ্রহ নিয়ে। অপেক্ষায় থাকলাম রেশ্মি সুতোয় বাঁধা রঙ্গিন ফানুশ কোথায় গিয়ে স্থির হয় তা দেখার জন্য।

    উত্তরমুছুন