কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

নন্দিনী পাল

জ্যামিতিক

একটা রেখা, কম্পাসের কাঁটা এসে
দুপাশ থেকে ডানা দুটো ছেঁটে ফেলার আগে
সেটা রশ্মি হয়ে ছুটছিল মহাকাশে।
রেখা সরল হোক অথবা বক্র
চলাতেই তার আনন্দ, মুক্ত তার প্রা
দিশাহীন বক্রতায় দিকভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল
বৃত্তাকারে ফিরে আসতে পারে শুরুর বিন্দুতে
তবুও চলার আনন্দে সরল ও বক্র দুই মশগুল
যতক্ষ না আর একটা রেখা এসে পথ রুখে দাঁড়ায়।
তখন চলা বন্ধ রেখে শুধু কৌণিক অবস্থান।
কখনও সূক্ষকো্ণ, কখনও স্থূলকোণ
আর কখনও বা সমকো
কৌণিক বোঝাপড়াটা ততক্ষ চলতে থাকে
যতক্ষ না সরলকোণে থাকাটা শিখে নেওয়া যায়
একদিকে মুক্তি একদিকে বন্ধন 
নিজে নিজের মতো থাক, অন্যকে অন্যের মতো থাকতে দাও
কিন্তু সেটা তো বেশীক্ষ চলে না।
জ্যামিতির খাতায় আর একটা রেখার আগমন
আকস্মিক হলেও অবশ্যম্ভাবী
তখন কৌণিক অবস্থান কখনও বিপ্রতীপ,
কখনও একান্তর, কখনও বা অনুরূপ
কোণের মাপ সমান হয়ে যায়, কিন্তু দূরত্বটা বজায় থাকে।
 জ্যামিতির খাতায় রৈখিক সহাবস্থান
 সাংসারিক চিত্রটা সত্যিই জ্যামিতিক!  


রেস

গা
ড়িগুলো ছুটে চলেছে একটার পর একটা
অ্যাক্সিলেটরের উপর প্রতিযোগিতর চাপ
ক্লাচকে বারবার ডানদিকে ঠেলে দিচ্ছে
আগে সবার আগে -
সময়ের দাম, পজিশনের দাম অনেক
একবার ব্রেক মারলে অনেকটা নিচে নামতে হবে
নামাটা শুরু হলে পাঁচ থেকে একে নেমে আসতে কয়েক সেকেন্ড
উঠতে অনেক সময়, স্টেপ জাম্পের কোনো সম্ভাবনা নেই
ক্লাচের অদল বদলে তোমাকে কয়েকজন যাবে পেরিয়ে
পিছন থেকে আসা গাড়ির স্পীড বোঝার উপায় নেই
অথচ পিছনের গাড়িটা তোমার স্পীড মাপজো করে
কখন যে ছোট্ট একটা হর্ন দিয়ে বেরিয়ে যাবে 
তুমি ধরতেও পারবে না।
 
চলছে - ওরা ছুটে চলেছে
কালো পীচরাস্তাটা যেন একটা অন্তহীন রেসকোর্স
এ যেন অন্তহীন চলতে থাকা একটা ম্যারাথন
যাতে আজ পর্যন্ত কেউ জেতেনি, অথবা সবাই জিতেছে
তবুও প্রতিযোগিতাটা চলতে থাকে,
তবুও প্রতিযোগিতাটা চলতে থাকবে।
 
গন্তব্যে পৌঁছানোর পর দেখা যায়
আসলে প্রতিযোগিতাটা চলছিল নিজের ছায়ার সঙ্গে
কেননা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একমাত্র সেই ছিল তার সাথে
কখনও আগে, কখনও পিছনে
শুধুই ছুটিয়ে মেরেছে তাকে।
 
 
ঝরণা


আমার নিঃসঙ্গ দুপুরগুলো নুন হলুদ আর মশলা সহযোগে

রান্না করে যখন তোমার সামনে রাখি,
তুমি সেগুলো কুঁচো করা রুটির টুকরোয় পুরে 
মুখে চালান কর।
তখন তোমার চেবানোর শব্দে তার ভেঙ্গে পড়ার 
আওয়াজ শুনতে পাই।
কেউ যেন বলেছিল ছেলেদের মন আছে তাদের উদরে
কিন্তু কই এতদিনেও সেই মশলাদার খাবারগুলো
তোমার মন ছুঁলো না।
তোমার পায়ের চটির মচমচ্ শব্দে গুঁড়ো হয়
আমার নিঃসঙ্গ একলা দুপুর
আর সেগুলো জড়ো করে অনেক যত্নে আমি তুলে রাখি,
একদিন সেই গুঁড়োগুলো দিয়ে একটা ঝরণা বানাব।
দিনরাত ঝরঝর শব্দে ঝরে পড়বে,
সব পাহাড়ী নিস্তব্ধতাকে ভেঙে।
যদি একবার ফুরসৎ মেলে এসো
নিয়ে যাব সেই পাহাড়ী ঝরণার ধারে
একবার কান পেতে বসো তার পাশটিতে
তোমার নামটি শুনতে পাবে
কলকল্ শব্দের মাঝে

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন