পনেরো মিনিটের আপেক্ষিক গুণবাদ
ডটেড
না প্লেন... স্ট্রবেরি কেন আনলি? আই লাইক চকোলেট
ফ্লেভারড। তুয়ার রাগ ঝালের কথায় আর্যর একটাই উত্তর, “পূজা
ভাট আলিয়া ভাট তোর সব ভাটের কথা তোর
ফেভারিট চকোলেট ইরেজার দিয়ে রাবিং... উঁহ্... নেকু!”
“তোমার জন্য মেডিক্যাল শপে আব্দারের ফর্ম
ফিলাপ করে প্রিপেড বুকিং করে আনতে হবে নাকি? এটাই রেলিশ
কর”। “কাম অন বেবি...!”
আর্য আর তুয়ার যখনই দেখা হয়, ওদের মধ্যে যেন সাপ আর বেজির মতো লড়াই লেগেই যায়। যেমন এই ক’দিন আগেই-
-
আবার কোথায়? হুম?
-
কোথায় আবার? কোত্থেকে কী টেনে বার করিস?
-
কিছু জানি না আমি, না? বুঝি না ভেবেছিস?
-
ভাট বকছিস... ফের রাবিং। যাই করি না কেন। অগ্রভাগ তো
তুমিই খাও ঈশ্বরী! হা হা হা...
-
একদম কথা বলবি না আমার সঙ্গে। যা বেরো!
-
ঘাড় থেকে নেমে দেখা না পেত্নী! আর্যই তোর কপাল।
-
ভেজা ফ্রাই করে খেয়েছিস আমায়। না হলে তোর
পাল্লায় পড়ি?
-
টেন্ডারের কোটেশন আগেভাগে জানতে এসব ভেঁট কাজে লাগে। রিতা টেং,
লিজা ফার্নান্ডেজ মালগুলোর খাঁই কী রে বাপ! চোদ্দপুরুষ হিমসিম
খেয়ে যাবে ওদের ঠাণ্ডা করতে। মার্গারেট
একটু বুড়ি, শালী নিজে না খেতে পারলে ওর মেয়ে সানিয়াকে পাঠিয়ে দেয়। আমার কী বে? গিভ এন্ড টেক। দিয়ে
দিই ভরে... হি হি হি...
-
লজ্জা করে না তোর? এক এক জনকে এক এক
রকমভাবে এক্সপ্লয়েট করিস?
-
আরে মার্গারেটের বরের হেবি হাইফাই লেভেলে ওঠাবসা। কন্ট্রাক্ট
কনট্যাক্ট কোনোটাই তো পাবো না নইলে। বুঝিস না
কেন ব্যাঙ কোথাকার!
সব সময় লড়াই হলেও ওরা থাকতেও পারে না একঘন্টা কথা বন্ধ করে। দমবন্ধ লাগে। মাথাটা খালি হয়ে গেছে মনে হয়। অবসাদে শিথিল হয়ে আসে সমস্ত শরীর। ভোরেবেলা সন্ধ্যে থেকে জ্বলে থাকা স্ট্রিট লাইট সব নিভে গেলে আবছা অন্ধকারটা আর্যকে যেন তাড়া করে বেড়ায়। মনে পড়ে, ক্লাস ফাইভের পড়ুয়া আর্য গিয়েছিল বাবা মা'র সঙ্গে বেড়াতে। শীত বিকেলে সেদিন খণ্ডগিরির কাছে বাস থামলে সবাই নেমে এধার ওধার ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল। ওর হিসু পেয়েছিল বলে এক খালাসিকাকু নিজে এসে ওকে হিসু করাতে নিয়ে গেছিল। তারপর মিনিট পনেরো সেই খালাসিকাকু অনেক অনেক বছর আগে এখানে ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসা কিছু ধার্মিক মানুষ কত শারীরিক কষ্ট অভ্যাস করে ধর্ম জ্ঞান লাভ করেছিল, সেরকম একটা কষ্ট আর্যকে সঙ্গে নিয়ে দেখিয়ে পরে বলেছিল কাউকে না বলতে। সবাই নাকি এমন কষ্ট সহ্য করতে পারে না। আর্য নিশ্চয়ই সেরকম ধার্মিক মানুষ তাই সে সহ্য করতে পেরেছিল, একথাও বলেছিল খালাসিকাকু। সন্ধ্যে নামার আগে বাসে সবাই ফিরে এসে বসলেও আর্য কাউকে কিছুই বলেনি। সকালে পটি করতে গেলে শুধু কিছুদিন ব্যথা লাগতো।
তুয়া ঘুম থেকে উঠে অ্যারোবিক্স করতে চলে গেছে লনে। আলো ফুটবে কিছুক্ষণ পরে। কেন ফুটবে! ভোরের লাল আলো এসে ছুঁয়ে দিলে আর্যর শরীরটা তখন সেন্টার অফ গ্র্যাভিটি খুইয়ে উপরে উঠতে থাকে। ঘুমিয়ে থাকলে ঝামেলা নেই, কিন্তু এই সময়টাতে ঘুম ভেঙে গেলে মনে হয়, সেই বিকেলের পনেরো মিনিট আলোটা এসে ছুঁয়ে দিচ্ছে আবার...। ভীষণরকম বিকট অনুভূতি... এরকম জীবনই কি আর্য চেয়েছিল! ধর্ম অধর্ম - পবিত্রতা অপবিত্রতা - কর্মফল - আছে নেই - ঈশ্বর শয়তান কিছু নেই, কিচ্ছু না... সব ভাট সব সব রাবিং... কোথাও ব্যথা নেই, তবু অসহ্য যন্ত্রণা। যেন খুলে খুলে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে আর্যর তলপেট-নাভি-বুক-দু’হাত-মুখ-মাথা-চুল - তারপর দুই ঊরু - হাঁটু থেকে দু’পা - কেবলমাত্র লিঙ্গ ছুটে চলেছে বায়ুমণ্ডল আকাশ ফুঁড়ে...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন