কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

অমলেন্দু চক্রবর্তী

 


সমকালীন ছোটগল্প


বৃষ্টির নামকুম

 

--সহজ !

--নয় কেন?

--কেতা গো, ক‌ও সবাই পারে না তো!

-- না পারার কী আছে! পাহাড় ভাঙ্গা, হাল ঠেলা। ইনক্লাইন্টে নেমে  যাওয়া (সিঁড়ি খাদ)। অবশ্যই যোগাড়যন্ত্র সহ। নিধিরাম এমনকি কোরোনা মাহোল‌ও উহার সন্মুখে, নৈব নৈব নৈবচ।

--আরে ধূর্ ধূর্

--হাঁকালে না বাঁকালে।

--স্বচ্ছ হল না

-- হবে না, হবে না তো!

-- আর কত কঁৎ পাড়তে পাড়তে…

--জানাজানি জনে জনে ‌

--সমস্ত ম্যেচাকার

--রহস্য, ডব ডব ডব ডব ইয়ার্চে পশলা তাগড়া দক্ষিণবাগের তেড়ে। রাখঢাক হীন ঠিলেঠালে! রহস্য, দিন সপ্তাহ্ মাস বছর সাজের সমাজের কত উঠা কত নামা, চিহ্নিত আর হয়েও হয় না। গালগপ্পের গালভরা ফানুস মানুষ! তুলনা হয়।

--গর্ভ ধারণ হয়ে যায়

--আনতাবড়ির?

--তুবড়ি

--সিম্বলেরা সব ছুটাছুটি ছুটিছাটাতে

--থাকার সম্ভব রহস্য।

কেন আকাশ এতো ঋণগ্রস্ত কেউ খবর রাখে না। ঘনকালো হতে হতে মা-টি গর্মাই মা-টা নর্মায়। পাতপেড়ে উপুহারে উপুহার সাজের সমাজের নর্দায় জর্দার হিস্ হিস্। কিটপতঙ্গের প্যানোরামা। ব্রেকআপের মহলা মহল্লার ক্ষেতখামার আপামর চরাচাঁদ মাঠমঙ্গলে, সেই পোয়াতি পেটের ভরা আলোর মৌরুস  ঝলসানো পঙ্খুড়ি পৌনঃপুনিক হ্রসর হৃদিতারার কৌলিণ্য বনান্তের অমলিন রহস্য সে ধ্রুবতারাবত্ চুঁড়েইল বারাঙ্গনার অক্লান্ত হাঁটুরে ক্ষতিয়ান, চাঁদমাঠ অথবা চরাচাঁদেল বর্ষাতি দলদল। ঢ্যামনাপৌরুষ তার না-জল মীমাংসার  বাড়িবাস্তূর দখলন্দাজির ভারভরসাই অসুয়া ঢোয়ে ঢোয়ে মরে। পলাতক আসামীর মতো। কেন যে এত চাষাবাদ তাকে তো তাড়িয়ে তাড়িয়ে বেড়িয়ে বেড়াতে হবে! দিনান্তের কাঁসর কাঁকন, তবুও সবুজ ফসলের অহংকারী ভিখারী রাঘব।

 

*

বাইরে অঝোরে আকাশভাঙা। কেলেন্ডার বিইয়ে বিছিয়ে চলেছে মূলমন্ত্রের মতো  মূর্মূহ। জলবায়ুর আয়ুরমতো খেলা, বিশৃঙ্খল এক‌আধ ঝিলম নর্মদা কি তোর্ষা।  দিন সপ্তাহ মাস বছর বছর বহর সাজের বহর।

--লম্বা দম!

--দানবীয়

--মানবিয়ো!

--নয়? অমানবিয়

--হয় না?

--হয় না প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন হয় না!

--বিছানার শেষ নেই

--আকাশ আকাশ‌ই

--মেঘ মেঘ‌ই

--লাগে তো তুক্ না লাগে তো তাক্।

তন্দ্রা তার মোক্ষম সুযোগ পেলো। হালকা গুঞ্জন পাতলা হতে হতে দুই ত্রিকোণ মুখোমুখি সুতো কাটার আগে "লাত্থিয়ে মুখ ভেঙ্গে দেব।" ভেঙ্গে গেল। কেটে গেল তন্দ্রা বহু সাধনার অশুয়ার ব্যেরাম বিরাম বিদায়।

কেমন পালানো আলোর তাড়া ফরফরিয়ে ঝাপটা মেরে মেরে গুমোট সংলাপের কোনোখানে বেছে পেলো না, মুখ! বুক পেট নয় কেন? কার‌ এমন নরম মোলায়েম কন্ঠের মন্দিরা বেজেছিল? মাথা অব্ধি কেউ কোত্থাও নেই মুহূর্তেই উধাও! মধ্যযাম। বাইরে ইলশেগুঁড়ির ছমছমাছম। অথচ ছায়াদের খুনসুটি।  মহারাজ শৌচালয় কি ঔর পধার রহেঁ হ্যাঁয়...

কত কথা হরিলাল বেবীয়া পুতুলীয়া শীবাঙীয়া মদনলাল উমাপ্রসাদ কার্তিক গৌরীশঙ্কর নমিতা মৌমিতা গণপত মধুসূদন। আর আটকলাইয়ার হরির লুঠ।

আর সেই কাঠগোলার পাশের বিশাল ইন্দারার টলটলে কাঞ্চন দর্পণ। উপুড় শোয়া ক্যাড্ডেব্যেডেঙ্গ দীলুর ভাসমান। মৃত্যু! হত্যা! না অন্য কিছু, আত্মহত্যা! অনাবিষ্কৃত যেমন থেকেই যায়। যেমন তারানার সেতার আলুঙ্ মেলুঙ্ জেলুঙ্ গেলুঙ্ সঙ্গে তানের দীগর তাম্বুরা গায়ে গেয়ে যায় চেনা সুরসংলাপে। 'মুঢ়' আপনিই ডোলে। যবলেবা জবানিয়া উঢ়ায়ল্যে্ মৌজ বুব্বনি। সরেগামাপাধানিসা, সানিধাপামগরেস তবলিয়া ঝাঁ ঝাঁ ঝাঁ ঝাঁ করে বাংলার লৌকল বাসগুলির মতো হাম্প দেখে ডাঁঢ়ানর জন্য ব্রেকে চেপেবসে ঝঝঝঝঝঝসসস- - - - তারপর এ্যালজাইমার আঁইগা কি হলহ্? আহমি তেহাই ট হারাঁয় ফ্যেললম্ হল্ল কি?

-কেমন গাওনদার!

-তিরিকিটির বিভ্রম!

-সোমফাঁক দ্যাখাচ্ছে নাই

-বজ্রপাত্!

-ভয়ঙ্কর লয়?

-হঁ ব

-তবে আজ আমি উঠি।

-দিলুর সৎকার করতে হবে না?

-সে তো অনেক লক আছে।

-আপনাকেও থাকতে হবে।

-যদি পুলিশ আসে, আপনি সামাল দিবেন!

 

*

কেউ কোত্থাও আমকে চিনলে তবেতো র‌ইক্ষা। তেমন এলেম ক‌ই আমার। আঁটকাতে চাও আঁটকাও এসবের জন্যি জেলের ভাত খেতে হয় খাব। এ যেন বা চক্রবাক বিপরিতমুখী ধাকলানি খানিক পাশাপাশি। জের সেখান থেকেই শুরু। গলির চৌড়া আড়াই পৌনে তিন ফিট্ মাটির কাঁথ। বাইক কসরত করে ঢুকলো। বাইকের অপুষ্টি অযত্ন তার আসোল হুলিয়া উধাও খাটারা ধূসর ধূলার পরতে উদাস বেঢংবেরং বোঝা মালিক ও বোঝা ঢোয়াই তার একমাত্র কাজ। কাজের ঘর। পরলৌকিক কাজের ঘরে স্বর্গীয় অমুকের যথা সম্ভব ব্যেবহার্য্যের দানসামগ্রী ঐ লজ্ঝড় বাইকে বোঝঢৌয়া গাধ্হার পারা এনে দেয়ালে হেলান দিয়ে দেওয়া হল। খড়ম ছাতা শীতলপাটি ফোল্ডিংখাট গৌ পেতলের। কলস কিচ্ছুটি বাদ নেই তো। বাউন ভোজনের নিরামিষ অন্নরন্ধনের মম মহক্ গীতা পানসুপারি নগদ দক্ষিণা। শীতেল রাঁচির দিপ্রহরেও কনকনানি অব্যাহত্। দায়গ্রস্তের মার্কিনে শীত যায় না। লোকচক্ষুর আড়ালে হব্যিসি সন্দক লবণ ভালো ঘী আলুপোস্ত ঘীয়ের কাঁচকলা সিদ্ধ্।

-কাজকম্ম চুলায়

-চুলদাড়ির ভেক বারো তেরো দিন সাবান তেল হিন হুলিয়া দড়ির মতো।

-পন্ডিতকে বল দক্ষিণা বেশি পাবে দিন পাঁচেকের মধ্যেই দফারফা সারতে হব্যেক। কোন লাভ হয়নি পন্ডিৎ প্রস্তাব মালেক নাই। ভাইভায়াদে খন্ডযূদ্ধ বেঁধে গেছিলো।

বাইক থেকে নামিয়ে সাৎ, করে গবুরছড়া জায়গায় আসন পেতে "কত্দূর তুমাদের সাৎ্ অনেক বেলা গঢ়াব্যেক কিন্তুক্"

-ওঁ বিষ্ণু ওঁবিষ্ণু এতে দেবশর্মনণেঃ... কুরুক্ষেত্রানি- - - - প্রেতস্য... স্বর্গীয় অমুকের তৈলচিত্র। সামনে নৌকো সাইজের কলাগাছের পেটো। তিল অর্ধপক্ক তন্ডুলফেন সমেত গাওয়া ঘী। দূরে বৈষ্ণবরা কান্নার সুরে খোলকর্তালে হা হা কার গুম গুম করে গুমরে প্রাণকেঁদে ঠুকরে উঠছে। শোকের পরিবেশ। বাকিরা শুকনো খটখটে চোখে লুচি দ‌ই  মিষ্টির মহকে্ মসগুল চতুরন্তে। কাক গাছের ডাল থেকে সারমেয় পাকখাচ্ছে। মাঝে মাঝে হ্যাটহুট হুস্ হাস্।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন