কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০

জয়তী দাস

 

কবিতার কালিমাটি ১০৭


কালঘড়ি

 

ছবিতে যতটা আমি স্পষ্ট; তার থেকেও বেশি অপসৃত -

কানের পাশে অন্ধকার এক রাজত্ব-

ঘন অরণ্য জুড়ে দুচোখ - দৃশ্যাদৃশ্যে আগুনের নৃত্য!

 

তুমুল ঝড় উঠলে পাতার চিৎকার বেশ ক্রুদ্ধ!

কী ভাষায় কথা বলে সেসময় - পাখিরা!

শনশন করে উড়ে যায় কি! বুকের চেনা ভাষা!

 

এসব সবই নিজেকে চেনার ভান - উদ্বাস্তু এক ছল;

করুণ চোখের নীচে একরাত্রি যেন মহাশিবির পাতা!

 

এভাবে যেন দুর্বল যুদ্ধক্ষেত্রে মানিয়ে যাচ্ছি রোজ,

ভাইরাসের থালায় শূন্য হাভাতের গল্প বানিয়ে রাখছি;

অণুচক্রিকায় জিরিয়ে রেখেছি কয়েকটা প্রতিরোধ-

কোথায় ধরবো মুঠি! হাওয়া না স্রোত!

 

প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলে দেবতা পায় ফুল,

দাদুর নষ্ট ঘড়িতে কবেই যেন আটকে আছে; সেই মধ্যরাতের কাঁটা!

পূর্বাভাস ছিলো তোমাতে আমাতে একদিন ঠিক দেখা হবেই,

সময়-নক্ষত্রে পৌঁছাতেই দেখি - আমরা পরস্পর নিঁখোজ!

 

আকীর্ণ তেষ্টা

 

ঘাস-ফুল-নদীর ওপরে চড়ে বসেছে এই রাত্রি পাথর -

তোমাকে কাল খুঁজবো না সকালের পাখি -

যদি দেখো সেই কালো চাদরে ঢেকে আছি আমি -

ডেকো না আমাকেও -

শুধু জেনে যেও - ওর মতো আমি সহজ ছিলাম না -

যতটা কঠিন পাথরের জলে ভেসে থাকা -

তার থেকেও আমি কঠিন হয়েছিলাম।

তবুও বুকের ভেতরে পুষে রেখেছি সাদা সেই খরগোশ -

মাঝেমাঝে সবুজ কচি রোদে কি যেন খুঁজতে চায়!

এই জলের তেষ্টা আমাকেও তাড়িয়ে নিয়ে বেড়িয়েছিলো -

 

কূটকচালি

 

ঘর তো নয়, ঠাসা আসবাবে ভর্তি...

 

শরীরের বিকল যন্ত্রগুলো; নষ্ট সবজির ছেটে খাওয়া অংশ-

এখানেই তুলসীতলা, পিলসুজের ব্যবহার-

 

শিখাটুকু উঁচু করে জ্বালিয়ে রাখা সংসারের আয়নায়, ঝকঝকে আলোর ফরাসে কলপাড়টুকু বাঁধিয়ে রাখা স্নানঘরের সৌজন্যে-

 

জলের পাশে মায়াবী রাক্ষসের সমাধি, চির মিত্রতা সন্ধি…

বাকিটুকু লুকিয়ে ফেলা, জাহাজের ফেরারি আলো… ।।

 

রেটিনা

 

জমে ওঠে পাথরবাটির রহস্য

জামবাটিতে কালোগরুর লালচে সর  

দেবদারু গাছের মাথায় সোনালি চিলের বাসা  

উড়তে থাকে মিহি বোনা জরিসুতোর হাসিকান্না  

বেড়ালের ছায়া থেকে চুপিচুপি বেরিয়ে আসে চুরি হয়ে যাওয়া মোহরঝাঁপি

কাকের দল স্নান সেরে কুড়ায় এঁটো পাতকুঁড়ো  

ভরপেট ঘর লেখে উপোষী উপাখ্যান

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন