কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মদন কাশ্যপ

 


প্রতিবেশী সাহিত্য

 

মদন কাশ্যপের কবিতা           

(অনুবাদ : মিতা দাশ) 




লেখক পরিচিতি :  কবি মদন কাশ্যপের জন্ম ১৯৫৪ সালের ২৯ মে বিহারের বৈশালীতে। তিনি হিন্দি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক বিভিন্ন কাজে যুক্ত আছেন দূরদর্শন, আকাশবাণী, ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট,  সাহিত্য একাডেমি ও হিন্দি একাডেমির সঙ্গে। তিনি ইতিমধ্যেই সম্মানিত হয়েছেন নাগার্জুন পুরস্কার, কেদার সম্মান, শামসের সম্মান, বেনারসী দাস ভোজপুরী সম্মানে।


কিছু কিছু

কিছু কবি ফাসিস্ট

বাদ বাকি কবিরা

কবি হওয়ার কারণে

ওদের সঙ্গে ছিল

 

কিছু মহিলা ফাসিস্ট

বাদ বাকি মহিলারা

মহিলা হওয়ার কারণে

ওদের সঙ্গে ছিল

কিছু যুবক ফাসিস্ট

বাদ - বাকি যুবক

যুবক বলেই ওদের সঙ্গে ছিল

 

এইভাবে তৈরি হওয়া শুরু হল

কিছু ফাসিস্টদের বড় দল।

 

গণতন্ত্র

সব বিক্রি হয়

শুধু কেনার চাতুরী জানা থাকলে

সেই দুষ্টু বিশ্বাসের সাথে  

গণতন্ত্র গণতন্ত্র চেঁচায় অভদ্র সৌদাগর

সবচেয়ে আগেই বেশ সস্তায়

বিক্রি হবে জনতাই

 

আর যদি ওরা বিক্রি না হয় 

তাহলে লজ্জাহীন প্রতিনিধি বিক্রি হবে,  

যদি ওরাও না বিক্রি হয়

তাহলে নেতা সহ গোটা পার্টিটাই

বিক্রি হয়ে যাবে,  

বেচাকেনা যে কোন স্তরেই সম্ভব

 

নৈতিকতা

তাকে তো সবচেয়ে আগে ভাগেই

দ্বীপান্তরে পাঠানো হয়েছে

যদি দরকার হয়

কিনে আনবে বাজার থেকে

 

আর লাজুক লাজুক সততা যত দামী 

আবার ততই সস্তা

পাঁচ বছরে বাপের তিনশো শতাংশ

সততা বেড়ে গেলো

ছেলের তো তোমরা আর নাই বা জিজ্ঞাসা করলে

 

সবচেয়ে সস্তা দামে বিক্রি হয় ধর্ম

কিন্তু খুব পাওয়া যায়

টাকাও লাগে প্রচুর,

যা দিয়ে সবকিছুই কেনা যায়  

এমন কি গণতন্ত্রও।

 

কাকতাড়ুয়া 

সবচেয়ে আগে পৃথিবীকে বদলে দেয়ার স্বপ্নের মৃত্যু ঘটল

আমি ভাবতে লাগলাম এই সুন্দর পৃথিবীতে হোক

আমারও বাসস্থানের জায়গা

 

তারপর এক এক করে সবকিছুরই মৃত্যু ঘটল

সেই সবগুলির মৃত্যু ঘটলে মানুষেরও মৃত্যু ঘটে

 

নিজের কুটুম্বকে আপদে বিপদে বেঁচে থাকার জন্য

রাজি খুশি আমিই তো দাঁড়িয়েছিলাম

অনন্তের দিকে হাত দুটি বাড়িয়ে

 

আস্তে ধীরে আমার কাপড়

পরিবর্তিত হল একটা ন্যাকড়ায়  

পৃথিবীতে গাঁথা পা ও ছড়ানো হাত

জড়তার তাপে শুকিয়ে হয়ে গেল কাঠ

আর দেহটি একটি মাত্র কাঠের টুকরোতে বদলে গেল

তারপর একদিন মনে হল আমার মুন্ডুটা

মাসের পর মাস ডাল রাঁধার পর

ফেলে দেয়া কালো হাঁড়ির মত

কাত হয়ে পড়ে রয়েছে।

 

করিমভাই

কেউ পেটায় লোহা

কেউ পেটায় বুক

কিন্তু একি করিমভাই

তুমি তো হাওয়া পেটাচ্ছ

 

লোহা পেটানো একটি সম্পূর্ণ  কাজ

আর বুক পেটানো হল

সত্যি একটি চাপ, বাধ্যবাধকতা!

কিন্তু হাওয়া পেটানোটা? 

 

কিছু লোক কিন্তু হাওয়াকে বশ করে বাঁধতেও জানে

আবার কিছু লোক হাওয়া পাল্টাতেও জানে  

কেউ আবার হাওয়া ওড়ায় আবার কেউ হাওয়া তৈরিও করে

কিছু অল্প স্বল্প লোক হাওয়ার মেজাজ চিনতে পারে  

 

কিন্তু তুমি তো হাওয়াকে পেটাচ্ছ  

ঘন্টার পর ঘন্টা লাঠি ঘোরাচ্ছ

ঘামে ভিজে হয়েছ একসা

 

হাওয়া তো এমনিতেই সর্বক্ষণ মার খাচ্ছে  

বন্দুকের গুলি বুকে ঢোকার আগেই তো

হাওয়াকে ফুটো করে  

থাপ্পড় কসবার আগেই হাওয়া মার খায়  

তারপর কারো গালে গিয়ে বসে

তাহলে হাওয়াকে আলাদা করে পেটানোর

দরকারটাই বা কেন?

 

কিন্তু সত্যি ভাই মানতেই হয় করিমভাইকে

যখন প্রত্যেকবার হাওয়া মার খাচ্ছে,

আসলে হাওয়াকে পেটালে

তাকেও পেটানো হয়, যাকে  

আমরা পেটাতে চাই।

          


1 কমেন্টস্: