কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়

 

কবিতার কালিমাটি ১০৪


পাখি

রাতজাগা পাখি তুমি,

নিঃসাড়ে উড়ে এলে,

ঝাউবনে – যেখানে রাত,

পাড়ে আসা বেলাগাম ঢেউয়ে,

দোলা দিয়ে গেছে –

রাতজাগা পাখিদের মতো,

 

একেকটা শীতের ভোরে,

সুদূরে আকাশ দেখেছি,

ফিকে হয়ে আসে,

ফ্যাকাশে রঙিন জলে,

ফেনা হয়ে সুখ যেন,

একা হয়ে ভেসে আসে,

রাতজাগা পাখিদের মতো,

 

তুমিও মেলেছো তাই,

ডানাগুলি তোমাদের,

দিগন্তে শুকোনো দিন,

জোয়ারের টানে ভেসে,

সাগরের দিকে,

 

ডানা মেলে পাড়ি দিও,

দিগন্তে যেখানে ভোর,

মেলট্রেনে রাতজাগা –

নদীদের পাড়ে...

 

নবজন্ম

আরও কিছু?

কথা বলে দেখো – এখানে ফুরিয়েছে,

সমস্ত কেতাবী সুখ,

বোকা হয়ে ঘরে বসে আছি,

 

সৈন্যেরা ফিরেছে ব্যারাকে,

দিগন্তে গোলাপী রোদ, নেমেচে শ্মশানে,

কবরের পথ বেয়ে তারা চলে গেছে,

সান্ত্বনা দেয় যেন পৃথিবীরই মতো,

 

পিতার মন্ত্র শুনি, ধ্বনিত হয়েছে রোজ,

মন্দির ছেড়ে গেছি,

নিস্তব্ধ মাঠের বুকে, এতটুকু ভেজা মাটি,

যেখানে চাঁদের সুরে, স্তব্ধতা বেজে ওঠে,

সব থেমে গেছে,

 

রাজা হবে তুমি, সবকিছু কেটে গেলে,

তুমি রাজা হোয়ো,

শীতার্ত রাতের ভয়ে তুমি জেগেছিলে,

জেগে থেকো, আজও জেগে থেকো,

ঈশ্বরপুত্র হয়ে খড়ের গাদাতে,

 

আমি ক্রুশ আঁকি, ধরাতলে সুখ আসে,

শূণ্য মন্দির পানে চেয়ে থাকি,

যেখানে মাঠের শেষ,

যেখানে ক্ষেতের শুরু,

সেখানে জন্ম হোক, সহস্র তারকার মতো...

 

মাটি – সুখ - জল - নদী

নতুন এক পৃথিবীর মতো...

 

আগামীকাল

ঘুম আসে,

নিশ্ছিদ্র ঘুম,

কতদিন – ঘুমোতে পারিনি,

ঘুমোতে চাই,

 

সারাদিনকার ভয়ের আগল পেরিয়ে,

ঘুমোতে চাই,

হাতটুকুতে স্পর্শ থাক,

অল্প সুখ,

চোখের আলোয়, অন্ধকার,

 

আমার বাগানে রজনীগন্ধা ফুটেছে,

সেখানে সুখ,

 

গভীর গোপনে,

যা কিছু লিখেছি, সেসব লুকোবো,

সেগুলো থাকুক বন্ধ দেওয়ালে,

নিশ্ছিদ্র ঘুমের আড়ালে, যেখানে পাই...

 

আমার শহরে, রাত জাগবার অনভ্যাস,

জারি থাকুক, অন্ধকার নয়,

আমি তো ভোর,

এনে দেবো সকাল তোমাকে – আগামীকাল।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন