কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ২২ জুলাই, ২০১৭

মৌসুমী মণ্ডল দেবনাথ

অধর্ম


মাথার ভিতরে বাসস্ট্যান্ড খোলা হয়েছে। নীল বাসে যাবে খ্রীস্টানরা, সবুজ বাসে মুসলমান, কমলা বাসে হিন্দুরা আর বাকি হলুদ, লাল, বেগুনি, সাদা এইসব বাসগুলো বাইপাস রোডে চলবে। ওইগুলোতে বৌদ্ধ, পার্শি, ইহুদী, জৈন আরো যেসব ধর্মের ব্রাঞ্চ আছে, সেইসব ধর্মের মানুষেরা যাবে।
আমার রোল তবে কি? বাস কন্ডাক্টার? ধর্মগুলোতে থুরি টিকিটগুলোতে ছাপ্পা মেরে মেরে কি মানুষগুলোকে ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন দেশীয় স্টপেজে নামাবো?
নাকি স্টপেজে নেমে যাওয়ার ঠিক আগে, মানুষগুলোর ব্রেনকে খুলে খুলে ধোপার কাছে পাঠাবো, সাফাই করার জন্যে?
আর ব্রেনহীন জারে নিউক্লিয়াস স্বপ্নে দেখবো স্বর্গে পৌঁছে গেছি!
একদিন পৃথিবী স্যুইসাইড্ করবে, এই উন্মাদদের রক্তখেলা সইতে না পেরে।
আর মানুষ তার আত্মাকে মাটির তলায় পুঁতে দিয়ে, ঘুমোতে যাবে প্রস্তর যুগে।  
গত কিছুদিন ধরেই পৃথিবী একটা কঠিন পীড়ায় ভুগছে। এই রঙীন মানুষগুলো ভাইরাস হয়ে পৃথিবীর সব অর্গানগুলোকে অকেজো করে দিচ্ছে।
যে আয়ূধ বুকের গোপন কক্ষে রাখা আছে, তাতে ঘৃণার শ্যাওলা পড়ে পড়ে পিচ্ছিল  হয়ে আছে। হৃদয়গুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তাতে শান্তির স্নান মাখিয়ে দিতে হবে। ঠোঁটে যে কারফিউ পুষে রাখা, তাকে ঘষে তুলে দিতে হবে। আর বুকের ভিতরে সবুজের বীজ পুঁতে যেতে হবে, যতক্ষণ না সকাল হয়। আর না হলে   গ্রন্থকীট হয়ে সংবিধানের অসুবিধাজনক পাতাগুলো বসে কাটি চলো।


একটি বিপ্লবের জন্ম


পথময় ছড়িয়ে ছিলো কিশোরীর ছিন্ন বিচ্ছিন্ন
প্রথম বকুল মুকুরে গাঁথা অমল মালাখানা
বালুচরে পড়ে আছে ঝিনুক কন্যার আত্মা
ঢেউয়ের গায়ে জল আঁকে হীরের দর্পন
সামনের আশ্বিনে কাশফুলের চরে তার
মুক্তোর নথ আঁকা মুখ দেখতে আসবে
পথ হারানো গাঙচিল, ধানসিড়ি নদীর ধারে
তার নবজন্মের পরম ক্ষণে,    
রুদ্ধ শ্বাস আটকে নদীটির বেহাগে ও খাম্বাজে,
এই নদীর ধারে একদিন পুড়েছিলো অই মেয়ে
লোহিত বেনারসীর গলিত সোনা, জরির বাঁধনে
নেশার ঘোরে নিলাম হলো সতীর আয়ু
বাজিকরের মতো চলে গেছে দিগন্ত পেরিয়ে
অসংখ্য নিঃশব্দ ঋতুরা, ওরাও সাহস পায়নি
তেমন কথা বলতে, যা ভেদ করবে সাবেকি মন
আজ নববর্ষায় জন্ম হোক এক কঠিন মেয়ের
যার বৃষ্টি-আঁচলে লেখা অনন্ত বিপ্লবী গান

 
রবির প্রতি ওকাম্পো


তুমি আছ বলেই গোধূলির নদী হয় লা প্লাতা
ভোরের আলোয় এলাচবনে জেগে থাকে গান
তুমি আছ তাই চেনা, বিদেশী বিজয়া সন্ধ্যা
চোখের পরিখায় জমে থাকে পিয়ানোর সরগম
তুমি আছ তাই আলোয় ভেসেছে দু'চোখ
পাখিদের অবাধ্য প্রেমও মেনেছে প্রাচীন সকাল
সন্ধ্যায় রবি থমকে থাকে 'সান ইসিদ্র'র সবুজে
অতল জলে ডুবেই থাকে আমাদের কবিতা
গ্রীবায় মাখি ভৈরবী-শিশির গান্ধর্ব সাজে
এরিথ্রিনা - মন থাক পড়ে থাক নীল চিঠিতে
তোমার জন্যে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ক্রিসেন্থিমাম রঙ,
গেঁথে রেখেছি তারায় তারায় ধিকিধিকি আগুন
দূরবীনের লেন্সে আজ বহুদূর তোমার জাহাজ

সবটুকু প্রেম বুকে নিয়ে আমি ঈশ্বরী হয়ে যাই

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন