কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০১৬

মৌসুমী মন্ডল

পরকীয়া

আমাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখবে?
বিশুদ্ধ প্রেমের কবিতা!
তাহলে এই নাও এক ঢোঁক শেষের কবিতা।
চকোলেটস্ট্রং কফিতে আমাকে মিশিয়ে পান করো।
তেতো মিঠের রেশ মিশিয়ে আমার শ্যামলা ঠোঁটে
তুলে নেব কফি মগের উড়ন্ত ধোঁয়া।
ওগো সন্ধ্যা রাতের নক্ষত্র প্রেমিক
আর যেও নাকো ফিরে চাঁদের পানসী করে
ময়ূরাক্ষীর দ্বীপে। রাতপাখির মতো জেগে আছি 
ঘুমপাড়ানির গান নিয়ে।
তোমার নিদ্রাহীন আঁখিতে 
ঘুমরঙা কালিতে লিখে দেব
অসমাপ্ত চণ্ডীদাস আর ঝরা শিউলির পান্ডুলিপি। 


ছিন্নকাব্য ১

কেউ কারুর জন্যে অপেক্ষা করে না আর। ঘুমন্ত গাছের মতো অরণ্যের 
পাশাপাশি রাত শুয়ে থাকে |
হারিয়ে গেছে ন্যায়ের বিভাটি।


ছিন্নকাব্য ২

জীবনটার প্রতিটি মোড়ে 
তামাটে রোদের
প্রহরী দাঁড়িয়ে। 
শহর কিংবা গ্রাম।
কম্পিউটার ব্রেনে জমিয়ে রাখে বিজ্ঞানী
পরমাণু বোমার নতুন ফর্মুলা। 
তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম বিশ্বযুদ্ধের মহড়া 
চলতে থাকে অস্থি মজ্জায়।


ছিন্নকাব্য ৩

আমিও স্বপ্নের সঙ্গে উড়ান দিলাম
মধুমতীর পারে।
সেখানে সপ্তডিঙা মধুকর উজান বেয়ে যায় শস্যের সোনার ভান্ডার নিয়ে।
আমারও ভিতর ক্ষেতে সম্ভাবনার শস্য যেদিন চিৎ সাঁতার কেটে কেটে 
হঠাৎ থমকে দাঁড়াবে উজানে
সেদিন আমাকে তুমি ডাক দিও আবার। আমিও সংসারী হবো জুঁই ফুলের 
পরিধেয় পরে।


ছিন্নকাব্য ৪

হাতে একমুঠো খুদ নিয়ে
সকালের বিদ্যুতের উঠোন থেকে রাতের মেঘের দরোজা অব্দি আধমরা ছটফটানি কই মাছের মতো বেঁচে আছি এই শহরের অপরাধ জঙ্গলমহলে।  
কোথায় গেল উজ্জ্বল একঝাঁক পায়রা?


ছিন্নকাব্য ৫

ওহে আমার রাত বিছানায় বয়ে যাওয়া নীলাভ স্বপ্নের রেশ
মউবনি হাওয়ায় উড়ে যাওয়া 
রাত ফড়িং-এর দল
আমার ঘাসে জমে থাকা শিশিরের ভোরাই কাব্যগাথা,
বালিশের তুলোর গভীরে ডুব দেওয়া 
দু’বিন্দু নোনা জল, 
আমায় বলে দাও
সুখের রঙটি কি?


ছিন্নকাব্য ৬

সুখ আসলে চাঁদনী রাতে 
তেপান্তরের গল্পবুড়ির স্বপ্ন দেখা। 
হাত ছুঁয়ে হাত 
মনের কথা বলবে যখন। 
সুখ বললেই তোমার আমার 
মহুয়া বনের পরাগ মাখামাখি।


ছিন্নকাব্য ৭

অতএব বিদায় মেঘলা কলকাতা। 
ট্রেন চলেছে ঝমঝমিয়ে গগন তলে। 
ফেলে এসেছি একগুচ্ছ বিনোদিনীর 
সুখী গৃহকোণ। 
সেলফে একা এবং একা বিদ্রোহী কবির কবিতা সমগ্র। 
এখন একা তুমি নিরুচ্চার ভিজতে থাকো একটানা সারা দিনরাত। 
সাদা কালোর কিস্তি মাত্ বৃষ্টিতে 
ভিজতে থাকো
কলকাতার ট্রামলাইন, মেট্রো স্টেশন 
এবং ভিক্টোরিয়ার শ্বেত মর্মর।  
ঢাকুরিয়ার লেকে ভেজা রেইনকোট পাশাপাশি ফেলছে দীর্ঘশ্বাস। 
রাস্তার মোড়ে কাকভেজা বউটা পোড়ানো ভুট্টার গায়ে মাখাচ্ছে লেবু, বিট্ নুন। 
আজ আকাশ ধুয়ে মুছে সাফ করুক ভালোবাসার বাড়তি কার্বন ডাই-অক্সাইড।
মুখোশের জলরঙ ধুয়ে মুছে যাক 
মায়াবী বৃষ্টির নগরীতে।

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন