কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ২৩ মে, ২০১৬

দেবযানী বসু

ভূতহত ইতিগজ


ভূত হত্যার পর সে বাঁদিকে বসবে না ডান দিকে, এর তারতম্য বেশ ভাবিয়েছিল আমাদেরকে। অবশ্য এটাকে নিয়ে পার্টিগত ভাগবত রচনা করা হয়নি। যেমন ধরো পাঁচটা আপেল ষাট টাকা আর অ্যাপল ফাইভ ষাট হাজার টাকা। এ পর্যন্ত ঠিক ছিল,  কিন্তু ঢালিপাড়ার ঘটনাকে ভৌতিক বলতে পাড়ার সিন্ডিকেট দাদা রাজি একদম নয়। আসলে নামটা সিন্ডিকেট মানে এই নয় যে বাপি প্রকৃত সিন্ডিকেট করে। পাঁচ দশটা ছেলে একজোট হয়ে সরস্বতী পুজোর চাঁদা তুললেও বাপি তার নাম দেবে সিন্ডিকেট। কালীপুজোর পরের দিন লাবড়া সহ খিচুড়ি রন্ধনের প্রক্রিয়াটিকেও সে সিন্ডিকেট খিচুড়ি নাম দিয়েছে। নিজের জমিতে বাড়ি তুলতে গিয়ে মিস্ত্রি ঠিক করা নিয়ে মারপিট ঝুট ঝামেলায় জড়িয়ে গিয়ে জানতে পারল প্রকৃত সিন্ডিকেটের যাদু কথায় আছে। ওর মিস্ত্রি কাম বন্ধু সত্য সেইসব দাদাদের হাতে মার খেল কি! বাপি নিজে ডাক্তার দেখাতে এনেছিল আর মধ্যস্থতা করে দিল পুলিশকাকু! পুলিশকাকু সে অর্থে মামাপদবাচ্য হননি, হলে ভাবে, সপ্তমী করে  অনেক ফায়দা লোটা যেত। ইনি সত্যি প্রতিবেশী খুল্লতাত রোজ পুকুরে একঘন্টা করে স্নান করেন। আর স্নানের পূর্বে  একঘন্টা করে যোগব্যায়াম। ঝড় বৃষ্টিবাদল  ঝাঁ চকচকে শাওয়ারওলা বাথরুম কিছুই তাকে  পুকুরে স্নান করা থেকে নিবৃত্ত করতে  পারে না। সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন।ওনার দুটি সংসার। প্রথম সংসারে একটি মেয়ে। দ্বিতীয় সংসারে দুটি মেয়ে। অবসরে প্রাপ্ত বেশির ভাগ টাকা পাশের পাড়া ইঁটখোলায় প্রথম বৌকে দিয়েছেন। এদিকে ঢালিপাড়ার বুলি  কাকিমা দুই জামাইয়ের পরে অনেকটাই নির্ভরশীল। এখানে কাকুর খরচখরচার উদাসীনতা আছে। পাড়ায় গুজব কাকুর সঙ্গে বুলি কাকিমার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। হঠাৎ এক মোরগডাকা ভোরে বুলি কাকিমা সদর দরজায় সিঁদুর মাখা পয়সা আর আঞ্চি লম্বা পাঞ্জার লালরং পাঁচটা ছোপ দেখতে পেলেন। উনি ওখানেই পপাতধরণীতল। ব্যস পাড়াময় হৈ হৈ। জল দিয়ে ধুলেও সে রং যাচ্ছে না। ওঝা এসে কাজকর্ম করে গেল। ক্রমশ রাত হলেই আশেপাশের অনেকে ছাদে নানা শব্দ শুনতে পাচ্ছে। কাকুর চোখে অবশ্য ঘোর নিদ্রা। বাপির বৌ বিপিওতে কাজ করে। সে রাতের শিফ্ট সেরে বাড়ি ফেরার পথে জ্যান্ত ভূত দেখল কাকিমার বাড়ির ছাদে। ভূতটি দেখতে উপাধ্যায়ের মতো। ইয়া দাড়ি ইয়া চুল দশাসই চেহারা এবং কোমর  থেকে নিচে আর কিছু দেখা যাচ্ছে না... বড় বড় গাছের ছায়া আর রাস্তায় আলো  কাটাকুটি খেলছে। বাপির বৌ নিজের বাড়ির দরজায় পৌঁছে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।  অতএব আবার একগাদা হৈচৈ। কিছুদিন পর কেউ কেউ নাকি দেখেছে বুলি কাকিমা অ্যাপল ফাইভ হয়ে গেছেন গির্জাপাড়ায়। তবে মাঝে মাঝে রক্ত হাতের ছোপ পড়ে আর বাপির বৌ রাতের শিফ্টে কাজ করে কিনা... কে জানে! উড়িবাবা! 

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন