আলোময়
অনেক আলো জ্বালিয়ে রাখি,
মনের ঘরে অন্ধকারে
পুড়ে যাবে আলোর তাপে
কালো ছায়ার হাত
তবুও সব আলো নিভে যাওয়ার
পরে,
শুধু তুমি আমি বসে থাকব
আলোর অভিমুখে…
মুহূর্তকালের অপেক্ষা
অভিমানের কালো দিব্যতা নিয়ে কেটে যায় অনেক রাতের আয়ু। রাতের কাছে রেখাচিত্রের অনুরাগ বাড়তে বাড়তে এক সময় ফুরিয়ে
যায়। অন্যদিকে আমাদের জমানো আড়মুড়ি ভেঙে উঠে পড়ে সূর্যছায়া। মান-অভিমান মরে গেলে, মরে যাবে রাতের নিঃসঙ্গ পাখিরা, খসে
পড়ে পালকের সুখ, পুড়ে যাবে অসংখ্য স্বপ্নের ভ্রূণ। যেভাবে বেঁচে থাকলে সবার মতোই আমিও প্রেমে পড়তে থাকি বা পড়তে চাই বেঁচে থাকার ইশারায়...
রঙেরা
ভেসে ওঠে আত্মার কাছে আর গরম জলে ভিজতে ভিজতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে দূরগামী ভাসমান পলকা
মেঘের বহর। যার চূড়া থেকে নৃত্যের
মুদ্রায় খসে পড়ে অজস্র বৃষ্টি ও মনের ভূগোল
আর একই সাথে নিঃসঙ্গতায় ভেসে বেড়াতে শুরু করে জলঘুমের মিছিল...
অনুভূতির মথ
ভালোবাসায় আঁকা যাবতীয় প্রতিচ্ছবি হাত বদলের সাথে সাথে প্রিয়
মানুষের প্রিয়তার ঘনত্ব আর গন্ধের মতো হারিয়ে ফেলে পূর্বরাগ, ভালোবাসায় শিশির ভেজানো শিউলি ও বকুল ফুলের আবহমান ঘ্রাণ লুকিয়ে। এখনও আমরা আগের মতোই অসম্পূর্ণ, তবু অপূর্ণতার ঘোর সরিয়ে রেখে ছুটে যাচ্ছি শূন্যলোকের
দিকে। দু’জনের চোখের তারায়
ভেসে যাচ্ছে কত কত সোনালু
দৃশ্যের মাঠ। কেউ কি জানে কীভাবে কাশফিয়ারা লুকিয়ে রাখে অনুভূতিময় ভালোবাসা, ঠোঁটের কৌণিক দূরত্বে সামুদ্রিক লবণের জোয়ার...
অবসাদের অন্যগ্রাম
এইসব অনুভূতির ঘোর ডিঙিয়ে হয়ে উঠুক উপলদ্ধির
সামিয়ানায় সবুজরেখা। কীভাবে সব কিছু থেকে নিরাবেগ যাপনের নিঃসঙ্গতা ছিন্ন করতে থাকে অপরিশোধিত
অন্ধকারের সীমানা কিংবা কতিপয় নক্ষত্রের
দিকনির্ণয়সূত্র ঠিক রেখে কাদের কাছে অনবরত পাঠাতে থাকে নভোজাগতিক ইশারা। তারপরও সৌরচক্রযান ও হাতের রেখায় ঘুরে বেড়ায় অভিন্ন
কয়েকটি গ্রহপুঞ্জ, যে গ্রহের দেখা হয়নি
কোনোদিন গ্রহদের সাথে। মানুষ মরে গেলেই তারা
হয় না, বেঁচে থাকলেও হয়। যখন কাছের মানুষ দূর সম্পর্কের মেঘ হয়ে অতিক্রম
করতে থাকে ক্রমসমানুপাতিক দূরত্বের গোলক। আর তখন থেকে মৎস্যগন্ধা
ভুলে যায় যোজনগন্ধের অগ্রহায়ণ। বেভুল বৃত্ত বড় হতে
থাকে আর একসময় ছাড়িয়ে যেতে চায় নিজস্ব পৃথিবীর আয়তন। সব তৃপ্তির স্বাদ শীর্ষদেশ থেকে নেমে আসে, গলে যায় বরফের গান শুনে অবসাদের অন্যগ্রামে, ভিন্নগ্রামের
পখে তবু চুম্বনগুলো ঠোঁটের কাছে রেখে যায় কারুকাজ,
অপূরনণীয় আকাঙ্ক্ষার সুখ আর অমোচনীয় সব কিঙখাবের
এপিক। অতঃপর তুমি, আমার নিজস্ব ছায়ার কাছে একা
এলে শুধু আমাকেই পেতে...
মনেট
শুনেছি অনেক রকম মোহ আছে। একটির নাম দিই প্রেম, আরেকটি মহুয়ার মোহ হতেই পারে। যা গভীর থেকে গভীরতার দিকে এগিয়ে গেলে আমরাই
রচনা করি মোহাবেশ আর অনুভূতির সঙ্গে যাবতীয় রঙ মিশে তৈরি
হতে থাকে ভালোবাসার মনেট। মন তো ছোটদের আঁকের
শ্লেট নয়, স্বেচ্ছায় সব কিছু মুছে ফেলব। সেখানে তুমি থেকেই যাও অগোচরে ডুমুর ফুলের কষ্ট নিয়ে কিংবা ভালোবাসি ফুলের কেশর, পরাগায়নের পরে গল্পসমগ্র। মেঘ কেটে গেলে দূরবর্তী হয়ে যা্ও দয়িতার উজ্জ্বল মুখ। অথচ অনেক দিন থেকে সেই একই পুরনো ছবি আঁকতে চাইছি, পারছি
না আর বুঝে যাচ্ছি ভাঙা আয়নায় ভেসে ওঠা জোড়া লাগানো বিকৃতির জলছাপ। সব ক্ষত সেরে গেলেও থেকে যাবে দাগের দৃশ্য ও অদৃশ্যমান ভালোবাসার
নৌকা। বেতার কেটে গেলে কী যেন থেকে যায়! যে স্মৃতির ঘ্রাণ নিঃশেষে বিভাজ্য নয় তার নাম বন্ধু, ভালো থেকো ভালোবাসা নিয়ে। নিজেকে হারালে নিজের জন্য শুধু স্মৃতিসত্তায় বেঁচে আমি আর
তুমি। কোনো এপিটাফ লেখার ইচ্ছে নেই। তবে তোমার জন্য জমিয়ে
রেখেছি একসমসুদ্র সফেদ প্রেম। তুমি চলে গেলে মনে পড়ে, প্রতিবেশীর পায়রা পোষ মানালে নবীনের
দল ঢুকে যায় স্বপ্নের ভিতর, সুতো ছিঁড়ে হারিয়ে যায় কেউ
কেউ কৃষ্ণপক্ষে...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন