কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪

০৫) অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়


শূন্য থেকে শুরু

মৃত্যু নিয়ে লিখতে চান কিছু! আচ্ছা মৃত্যুর একটা রূপক ভাবুন শিগগির। হরমোন বা ফুটো খুব দুর্বল হয়ে যাবে। ওসব বাদ দিন। শূন্য। বাহ্‌ ভালো ভেবেছেন  তো! সমালোচক বলছেন, হ্যাঁ আপনার হবে। আসুন তবে মৃত্যু সম্পর্কে আপনার  ভাবনাকে শূন্য দিয়ে বিয়োগ করে দিই। তবে মাঝে যদি শূন্যের জায়গায় উনিশ কিম্বা ১০৮ লিখতে ইচ্ছে করে! হবে না কিন্তু ততক্ষণে বনবন করে হারিয়ে গেছে  আপনার বাংলা স্যার শূন্যের ভেতরে। আপনার প্রিয় কবি যখন আপনার ‘মৃত্যু’  পড়বে, তখন আপনাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে টানটান। মেদহীন। কোনোভাবেই  দাদার মৃত্যু নিয়ে মিথ্যে আবেগ যোগ করা যাবে না। কবি হতে হলে আপনাকে শূন্যেরও ঊর্ধ্বে যেতে হবে। হালকা পালকের মতো পাখি থেকে খসে পড়তে হবে  ভরা বসন্তে। প্রেম আর শূন্য গুলিয়ে ফেলবেন না। শূন্যকে রূপক করার সময়েই আপনি মুছে ফেলেছেন এক, দুই কিম্বা দশমিক। ভুলে যান এইমাত্র বউকে আপনার লেখা শেষ প্রেমের কবিতা শুনিয়ে এসেছেন। তখন সে মশারির ভিতরেমশা আপনার প্রিয় পশু নয়। বাঘ অনেক বেশি প্রিয়তাই আপনি মশার শূন্য হয়ে  যাওয়াতে কষ্ট পান না। কিন্তু বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত। আপনি এখন লেখায় শ্মশান কিম্বা শরীর আনতে চাইছেন। কিন্তু শূন্যের জন্য পারছেন না। ভাবুন। আরও ভাবুন। কীভাবে শরীরকে শূন্য দিয়ে গুণ করে শ্মশান বানাবেন।  মাঝে মাঝে হাঁফিয়ে জল খান। বউ রাতের ডাক দিয়ে যাক। আপনাকে মৃত্যু নিয়ে লেখা দিতেই হবে আজকের মধ্যেসুখপাঠ্যের অশ্লীলতায় আটকে গেলেও ভয় নেই। কিছু দুশ্চিন্তা জাতকের মতো জন্ম নিয়ে থাকে। তাকে নিয়ে গল্প ছাড়া আর কিছু হয় না। এই তো আপনি বেশ এগিয়ে চলেছেন মূল শূন্যের দিকে। এবার কি মৃত্যুর  সাথে তবে মহাকাশকে মিলিয়ে দেবেন ভাবছেন! তবে তো চাঁদ এবং লাইকা চলে আসবে। আপনি তো বিলিতি কুকুর ভালোবাসেন। তাকে শূন্যের আওতায় আনবেন  না। মহিলা পাঠকেরা কিউট কুকুরের শূন্য হওয়ার কাহিনী মেনে নেবে না। সাবধান। তার চেয়ে বরং ঈশ্বর আনুন। ওই জিনিসটা সব জায়গাতেই ফিট করে যায়। অদ্ভুত ইলাস্টিক। আস্তিকের সংখ্যা বেশি বলে নাস্তিকেরা চিরকালই একটু  বেশি নোটিশ হয়। তাই ঈশ্বরকে চাকর বা চোর টাইপের সম্বোধন করে বেশ  কয়েকটা প্যারা লিখে ফেলুন। বাপকেও তো আপনি ছেলেবেলায় ভয় পেতেন। আবার আড়ালে খিস্তি করতেও ইচ্ছে করত। ঈশ্বরের নাম দিয়ে সেসব চালিয়ে দিন। শূন্য নিয়ে এই ভ্রমণটুকু আপনি কাগজে লিখুন। ছিঁড়ে ফেলুন। কিছু দুমড়ানো কাগজ যেমন নৌকা হয় না। তেমনি আপনার মুঠো পাকানোর সময় যে শূন্যতা তৈরি হবে, তাই দিয়ে কিছু সফল ঘুড়ি উড়বেই মাঝে অবশ্য সম্পাদককে দুবার   ফোন করবেন। বুঝিয়ে দেবেন সোনাঝুড়িতে সস্ত্রীক এলে বসন্ত পালানোর পথ পাবে না। মৃত্যু ছাপা হলে আমায় ভুলে যাবেন। খুব ছোট অক্ষরে এমন কিছু লিখবেন যা কেউ দেখতে পাবে না। খুব একা আর শূন্যতা আপনাকে প্রকৃত দেখা দিলে আমি না হয় সন্ধেবেলা আসব আপনার বাড়িএকসাথে কবিতা পড়া যাবে।

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন