কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৪

০১) সাঁঝবাতি


মাথামুন্ডু

আমাদের একটা টিয়া আছে। যাকে আমি শকুনছানা বলে ডাকি। কখনো  ভালোবেসে ডাকি ‘শোক্‌নে’! বাবা সব্বার চেয়ে ছোট ছিল বলে যেভাবে বাবাকে 'খোকনে' ডাকা হয়, অনেকটা সেভাবে। তবে আমি শুধু ভালোবেসে নয়,  খারাপবেসেও বার বার বলেছি 'শোক নে'! শকুনছানা টিভিতে আসার আগেই  ফেমাস। একদিন ফেসবুকে তার ফুলে যাওয়া মুণ্ডুর ছবি দিতেই পেটা’প্রেমীদের বক্ষভেদী বান ছুইট্টা এলো - রে রে রে, ওকে ছেড়ে দে রে, খাঁচায় রাখিস কে রে! কাম অন, শকুনছানা নিডস আ চেঞ্জ! কেউ তোমরা খেয়াল রাখো না, সে বাচ্চা টিয়া থাকা কালীন ডানা ভেঙে জখম হয়ে এসেছিল যখন, আকাশে ওড়া  তো দূর, জমিন থেকে পা ওঠেনি তার। আকাশটাই তখন খাঁচা হয়ে গেছিল। গিভ  হার সাম স্পেস ম্যান! যাকগে, আমি তো খারাপ ছিলামই, এ আর কী নতুন কথা! কিন্তু টিয়া যে অ্যাবনর্মাল ছিল, প্রথমে কেউ বোঝেনি, এমনকি লিঙ্গটাও না। সারাক্ষণ মাথা ফুলিয়ে চোখ ড্যাবড়া ড্যাবড়া করে কক কক করে যেত, ভালোবাসতে এলে কামড়ে হাত ফুটো করে দিত আর কথা শেখাতে এলে পটি  করতহাইলি রেবেলিয়াস এবং সাসপিসাস! গা অদ্ভুত সবুজ আর ঠোঁটের রং লাল। আগে লঙ্কা খেত, এখন পেয়ারা খায়ওকে আজব গলায় 'কোবিতা' শোনালে  হঠাৎ করে মাথা মোটা (পড়ুন ফুলিয়ে) করে খাঁচাময় ছোটাছুটি করতে থাকে। আর রেস্ট নেওয়া কালীন দাঁড়ে বসে করে খাঁচার নিচের ফুটো দিয়ে মাথাটা ঝুলিয়ে  দেয় উলটো করেউলটো মুণ্ডু খাঁচার বাইরে গলিয়ে কক কক করে যায় এক নাগাড়ে। ওর দৃষ্টিতে দুনিয়াটা মোটেই জিওয়েড নয়, কিন্তু ডয়েওজি!


মা আমায় মাঝে মাঝে বলে, আমি খেঁচোটিয়াকেও একই কথা বলা হয়ও কিন্তু  এক নাগাড়ে কক কক করে যায়, কিছু না শুনে। আমিও আপন মনে চৌকি  চাপন গেয়ে যাই ‘ইয়ে দুনিয়া পিত্তলদি’! মা মাঝে মাঝে বলে, আমার সাথে টিয়ার  একটা কিছু যোগ আছে! এসমস্ত কথা কলরব রবাহুত আমি বিয়োগ করতে থাকি। খাটে পা ওপরে রেখে, হাফ ঝুলতে ঝুলতে, মাথা নিচের দিকে করে গাইতে থাকি- 
মুন্ডু গেলে খাবোটা কী!
মুন্ডু ছাড়া আছে বা কী!

#Hokkolorob



1 কমেন্টস্:

  1. এই টিয়ার কথা বলেছিলিস আমাকে। আজ আবার পেলাম। মুন্ডু গেলে খাবে কি?

    উত্তরমুছুন