কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০

উমাপদ কর



কবিতার কালিমাটি ১০২



কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স  


(৪১)


মাথার আগুন পায়ে নামিয়ে বিশ্রাম।
স্যালুট ঠুকবে দিকভোলা ট্রেনগুলো
ডিজেল ফুরিয়ে ম্যাদামারা আলো-মাঠে।
তিনটে কাঁটাই চুপ, ঘড়ি-ভাইরাস।

পায়ের আগুন ডিগবাজি-পটু পেটে,
ভুল তার ঠিকুজিতে না-কদা-কস্মিন।
টুইঙ্কল টুইঙ্কুল লিট্‌ল স্টারেরা
চাঁদ খেতে চায়, মা-চোখ আকাশ ঢুঁড়ে।

হা-ডু-ডু’র দম ছড় টানে বেহালায়,
সিলিং-ফ্যানের জ্বর আজ তিনদিন।
হিমু মিস্ত্রি ট্রেনে তালপাখা, নাড়ে ঘোরে--
তারার শরীর থেকে নুন লম্বা-জল।

নেতিয়ে পড়ারা আগুন শরীরে নামে,
গোধিমুখী যন্ত্রে সেতারের ঝালা ট্রা-লা।



(৪৩)


চশমা না চোখ — কোথাও আলতো ঝুল,
সরাতে সরাতে হয়তো কিছুটা পর
জড়ো করি মৃদু অক্ষরের চালচিত্রে।
মাখন গলতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়
চারটে অক্ষর নড়তে পারে না আর।

দাগ কাটি, মুছি আরেকটা দাগ কেটে।
না-মেটা আশের লিকলিকে রেখাগুলো
স্নান সারে নিজেদের চোখের তরলে।
‘বইব না, বইব না’ বলেও তা-না-না
রঙের লাভারা, চশমার লেন্সে ভাপ।

বহুদিনের চোখটা লাশ-গ্রাফে শ্রান্ত।
মৃত্যুর ডট’রা একটা সংখ্যা মাত্র— বাড়ে
ব্রোঞ্জ-ভয়, রুপো-সংশয়, সোনা-মলী।
চশমা-চোখের ফাঁকে আঁশ-ঝুল দোলে।



(৪৪)


পায়ের সরষেগুলো চালে শোধবোধ।
গড়ালে পুবের ব্যালকনি চরাচর,
ভ্যাপসা মাথাটা ডুবো বালিহাঁস পাখ
ডোবে ভাসে, ডুবে-ভেসে পিটপিটে চোখ।

গ্রিলে মাথা ঠুকে গেলে চিলতে আকাশ।
কালপুরুষের রেত কোভিড উনিশ
ফোঁটা ফোঁটা পড়ে বিশ্বজুড়ে ড্রপলেট,
মেঘ আসে, বলে যায় মাথাটা সরাও।

জামাকাপড়ের ছোঁয়া বাঁচাতে হয়।
দ্রুতগামী ট্রেনে বয়সটা র‍্যালা মেরে
পঁয়ষট্টি প্লাস, লাল চিহ্নের ওপরে
বয়ে যায় নদী। ঘাট আড়মোড়া ভাঙে।

চালে ভাত ফোটে, পিছল ফালিতে মাড়,
পড়ে যেতে পারি, ভেসে বলে বালিহাঁস।



(৪৫)


রাত না-হতেই তারা ভরতি আকাশ।
যাচ্চলে, গপ্পোটা ছিল - জলে ভাসে শিলা
হয়ে গেল - ল্যাজ নেই তবুও নাড়ার,
কতটা অবাক হবে কতটা নির্বাক!

রাতে এক নয়া কিস্‌স্যা কায়েম হলো।
শুধু রাতজাগা নয়, সব পাখি-গ্রুপ
ডেকে গেয়ে রক্ত-গলা, গ্যাঞ্জাম মহাল।
স্বপ্ন কিনা ভাবা — তোমার প্র্যাক্টিস জোন।

বিষয়টা জমে যেত ঊষা আর সন্ধ্যা
যদি নিজেদের বিনিময়ে ফিদা হতো।
তারা আহির-ভৈরব, ভূপালীতে মেতে।
কীভাবে নিজেকে সাঁটবে তোমার চিন্ত্য।

হালের বদলে যাওয়া এ-সবে ফিট
করলে থাকো গো, নয় সশরীর ফোটো!



(৪৬)


একরত্তি উৎকণ্ঠা লালুম-লুলুম।
পরিযায়ী শব্দটার পতগ উড়িয়ে
হাঁটাতে হাঁটাতে রাস্তা শবের পিরেন।
কোথাও তো যাবে, মাইটানা শিশুচারা!

বেদম কাশছে আকাশের ধ্রুবতারা।
ধ্বনি-চিরকুট ফিরি করছে বাতাস,
বন্ধ দরজায় টোকা, বুঝি কেউ এলো,
খুলতে-চাওয়া হাতে ভয়ের মেহেন্দি।

পেটের দুনিয়া নাচে সরকারি ডোলে।
তাহলে রইল ও-কথাই, মরশুম
এলে ফিরে নেচো গো পেটের মালকিন।
নিলাজ কোকিল ডাকে গণতন্ত্র-কুহু।

ছটফটে ব্যালকনি ঘুমোবার আগে
রোজ-নামচায় এটুকুই লিখে গেছে।







1 কমেন্টস্: