কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০

রুমা ঢ্যাং অধিকারী



কবিতার কালিমাটি ১০২



স্বেচ্ছাচারিনী একটিমাত্র পঙক্তি

পুকুরের পিঠের ওপর নজির আঁকার আগে জনবহুল পাড় উচ্চারিত হচ্ছিল কিন্তু প্রতিবিম্বের কোনো শব্দঅরণ্যেই আমি অন্বয়ী হতে পারিনি। ব্যালকনির বনলতা শুধু এক উদাসীনতায় পথ চলে হরিণজাত প্রথার পরিচায়ক হয়েছেন। 

পায়ে পায়ে বেলা কেটে যাওয়ার মতো প্রতিটা মুহূর্ত ভেঙে থাকার গ্রন্থালোচনা একদিন সমাপ্ত হবে জীর্ণ ফসিলে। মনকেমনিয়া সুরের রেওয়াজ তুলে সেই একই জীবনীপাঠ করে চলেছে চতুর্দিক। 

করিডোরের কথা আর নাই বা বললাম! 

ফিনোলেক্স পাইপের বিপরীতে জুড়ে আছে যে বেদেনী ঘর ও অঘর সন্ধে হলে তবু শীতার্ত হয় তার আঠারো মাসের গল্প। 

একটু ওম পেতে যে দরবার এলিয়ে কুয়ো ছুঁতে যাই, প্রতিটা স্পর্শের অভিঘাতে একটি করে কঙ্কাল শাণিত ফলার মতোই চকচকে দেখতে পাই। অশ্ব না ছুটিয়ে হাঁটাপথে ফিরে আসি ষোড়শ উপাচারে।

আসলে উঠোনজমি হারিয়ে মানুষ উঠে যাচ্ছে মাত্রাহীন আকাশচারী হতে। স্লাইডিং পাল্লার বাইরে বেড়ে ওঠা বাগানে অহংকার নামক ফুল ফুটে থাকতে দেখে পায়ের কাছে রাত হুটোপাটি খায়। 

ভোর হলে দেখি গাছের ওপর থেকে প্রাচীন রামধনু হারিয়ে গেছে মেধার সিংহভাগে আর ব্যর্থতা নিকোটিন ধোঁয়ায় মিশে শুষে নিচ্ছে সমস্ত মিথ। 

যেসব তাবিজ আমাকে নিয়ত রক্ষা করত তাকে কোনো গর্হিত সিনেই গিঁট বাঁধতে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র গিঁট খোলা ও পড়ার মাঝে আটকে আমার আদ্যক্ষর -- স্বেচ্ছাচারিনী একটিমাত্র পঙক্তি...


প্রিসমসন্ধির সাতনরি হার

একনিষ্ঠ হওয়ার ডিঙিগুলো হারিয়ে গেছে যোজনপথের দ্বীপে 
চতুরাশ্রম বিস্তারের এই আবহাওয়া। উবে যাচ্ছে মন্তাগন্ধি গাল

ঘোড়ার ঘাড়ের ওপর নিশ্চিন্ত একটা হাত রেখে
দাঁড়িয়েছে স্থবির শ্বেতাভ চুম্বন

তবু স্থায়ী বলে কিছু নেই আর! 

হারাখুন্তির হোল দিয়ে যতটা ঢুকে গেছি গৃহস্থালির ভেতর 
স্বচ্ছ হয়েছে প্রিসমসন্ধির সাতনরি হার -- হ্যাশট্যাগ রিলেশনশিপের সুদ
ব্যর্থ আর্তির অববাহিকায় তাপ্পি দেওয়া সম্পর্কের সিম্ফনি টেনে টেনে
প্রগাঢ় হয়েছে সেরিমনিয়াল জন্মচরিত

বিশেষণপ্রিয় এই আগ্রাসনের জমিতে 
প্রাণাধিক মধুমাসের অপেক্ষায় কেটে যাবে বিরহজীবন

বোতলজাত পরিসীমায় বয়ে যাচ্ছে ঘৃত সৌরভ
বিশুদ্ধ বাসনার বিলম্বিত লয়ে


স্নেহচুমুর আত্মকথা

(১)

সেলফোন একটা ষোলআনার পাণ্ডুলিপি
একথা বলার পর বৃদ্ধাঙ্গুলির ঈশ্বরের চোখ হবে আকাশ সমান সফলতম 

কানাকানির আবৃত যৌবন 
সমস্ত অপাঠ্য ভেঙে মুছে দিয়েছে মানচিত্রের দাগ 

জমি বলতে মাটিকেই আপনি অডিটোরিয়াম ধরে নিতে পারতেন
যদি না খাদানের কথা আর জন্মাবধি ফেরিওয়ালার গোত্রজে একটি করে 
স্বপ্ন রেখে আসতাম! 

কীভাবে যেন ব্লু স্কার্ট অন্নজলে বেড়ে আজ পেতে রেখেছে শাড়ির আঁচল
শ্রেষ্ঠ দর্জিটার নিহত সুদিনের ভেতর দাঁড়িয়ে 
আজও হাজিরা দেয় লালচেলির ডাকে

(২)  

অন্যের চিবুকের রিডগুলো বেশি মাত্রায় জটিল মনে হয় 
ফেরার স্টেশন এলে... 
সে যাত্রায় কখনও কখনও ফুটে থাকে নার্সিসাস ফুল 

তবে অকারণেই আঠালোযুদ্ধ তার সুতো খোলে
আর ঝরে ঝরে পড়ে তার রক্তের শরিকি 

তবু ভাবিয়ো কেবল স্নেহচুমুর আত্মকথা







0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন