কবিতার কালিমাটি ১০২ |
পুনরুক্তি
যা কিছু বর্জিত,
যা কিছু ফেলে আসা,
ত্যজ্য পরিত্যক্ত সব,
একেবারে ফেলে আসি,
পিছনে তাকাতে নেই,
যেখানে মাটির আগুনে,
পুড়ে গেছে সবকিছু,
বিদায় নিয়েছে পৃথিবী,
ভরা নদী স্রোতস্বিনী হয়ে,
ভাসিয়ে নিয়েছে কূল,
যেতে দিও তাকে,
অজস্র ছোটো ছোটো পাড়ে,
ফেলে আসা কিছু বাড়ি,
কিছু ঘর, কিছু স্মৃতি,
যা কিছু পরিত্যক্ত আজ,
জাল বুনো, কাঁটা দিয়ে,
ফরাসী কুয়াশার মতো,
শহরের আবছায়া পথে,
একেকটা বাড়ির তারিখে,
দেখেছি ভোর, লেখা আছে,
বহুদিন আগের, ত্যক্ত বাসিন্দাঘর,
গিয়েছে হারিয়ে, উঠোনে সাজানো ফুল,
পড়ে আছে মালির অভাবে,
তিনশো বছর পার,
মানুষের স্রোতে, শহর ঘুমিয়েছে তবু, প্রতিরাতে,
আলো হয়ে তারা জ্বলে ওঠে
দীর্ঘচ্ছেদ
এখানে পাখিরা হারিয়ে যায়,
এখানে পাখিদের বাসা বাঁধতে বারণ,
এখানে, মুখোশের আড়ালে মানুষ,
এখানে জল্লাদের মতো ব্যবহার করে,
পাখিরা এখানে মরতে আসেনা,
শহরের অলিতেগলিতে,
ঘাতকের মতো,
কারা খুঁজে বেড়ায়,
পাখিদের শিসের আওয়াজ,
দম আটকানো একেকটা গ্যাসবাল্ব,
যেখানে পাখিদের মতো একেকজন,
বুক চেপে ধরে, হিসহিসিয়ে বলে উঠবে ঠিক,
“পালিয়ে যাও - এখানে নিষিদ্ধ মানুষ, এখানে শয়তানদের কবরখানাতে –
জীবনের অনুমতি নেই”
ধড়মড় করে জেগে উঠে দেখি,
ছাদের ওপরটায় ছড়ানো পালক, প্রত্যেকটা ফোকরে,
একেকটা দীর্ঘচ্ছেদ
এলিয়ট,
তোমাকে
এলিয়ট তোমাকে লিখেছি,
পৃথিবীর পোড়ানো মাটিতে,
তোমার খবর ছাপেনি কেউ,
এপ্রিলের গর্জনস্নিগ্ধ রাতে,
তোমার কবিতাগুলোকে,
কারা যেন পুড়িয়েছে,
মাটির ওপরে, ছাইয়ের ফসলে পরিণত,
তোমার সৃষ্টিকে, তোমার দেশ,
ভাইরাসের মতো পুড়িয়েছে,
এ আমার দুঃস্বপ্নেও সত্যি হোক,
পৃথিবীটা দুঃস্বপ্নের দিকে এগিয়েছে,
পাকসাট খেতে থাকা, একেকটা অজগর যেন,
যেখানে ফুলের বিকেলে,
তোমার টেরাকোটায়,
বিছিয়ে দিয়েছি মোহমুদ্গরের কাপড়,
সস্নেহে জিজ্ঞেস করেছি,
পৃথিবীর কবিতাকে, বির্সজন দেবে না তো?
পৃথিবীতে কবির অভাব ঘটেছে,
একেকটা চওড়া ফুটপাথের ভিতরে,
সংসার পাতবো আজ।
সুন্দর লেখা।
উত্তরমুছুন