কবিতার কালিমাটি ১০২ |
এমন দিনে...
এখানে প্রতিদিন বাঁশি বাজে
আর আসে মেঘস্বর, অনুসঙ্গে।
পাইন-ফারের ত্রিকোণ পাতায়
নেমে আসা সবুজ নিস্তব্ধতা,
যেন পরম আশ্রয়, গুরুর মতো বিরাট
অথচ স্থির, শান্ত।
একবুক শীতলতা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা
ঈশ্বর-চেতনা - অহংকার!
কান পেতে শোনা যায় অনাহত নাদ -
ওঙ্কার!
আরও একটু চোখ নিচে নেমে এলে
জাগতিক আলো,
কুয়াশা কুয়াশা মেঘ, বসতি - চলাচল।
জলে ভেসে যাওয়া শহর, পাহাড়ের ধ্বস
কাঁধে নিয়েও বয়ে চলে নিঃশ্বাস - প্রাত্যহিক ক্ষণ।
আপাতত যেই বেলা হল
মেঘ-বৃষ্টির অক্ষর নিয়ে, আদি স্বরে ফিরে এল মন
হল স্বপ্নে জাগরণ।
অথৈ শ্রাবণ
অথচ, আজ সারাদিন একটি’বারও
দেখিনি তোমায় আলো হতে,
ছিলে ছায়ার মতো!
তবু, শেষমেশ আসলে স্বয়ং
মায়া কাটিয়ে, আলস্যতে!
হাতে প্রান্তিক বক্ররেখা’র পথ বাঁচিয়ে
স্থলপদ্ম হবে’ই জানি।
একদিন নয় সন্ধ্যামনি!
হাবিজাবি বলছি এসব,
জলের মনে এখন আমি!
একলা আছি, বাইরে শ্রাবণ
আলুথালু ভিতরমহল।
অনভ্যস্ত হাওয়ায় উড়িয়ে আঁচল
দু’এক পশলা বৃষ্টি -
সাথে ফোঁটায় ফোঁটায় শব্দ এলো।
কাজরী সন্ধ্যা
এই শ্রাবণে, কাজরী সান্ধ্য আকাশ
মায়ার বাগানে থোকা থোকা জোনাক আলো
শাঁখা রঙের টুকরো মেঘের ঠোঁটের কোণে
লেগে থাকা চাঁদ
আঙুরের ফোঁটা রসের মতো, নিটোল।
জানলা বেয়ে আসা লেবু ফুলের গন্ধ
আর বাতাসে লেগে থাকা পদাবলি সুর,
ধীরে ধীরে খুলে দেয় নাভি কোরকে ঘুমিয়ে থাকা
পদ্মফুল।
বে-হিসেবি
ওই যে মৃদু মেঘলা আলো কাঁপছিলো ধানমঞ্জরি’তে
আর ঈষৎ হাওয়ায় ছড়িয়ে যাচ্ছে মেঠো ঘ্রাণ,
দু’হাতে কুড়িয়ে ফিরে যায় একলা মানুষ - একা,
নিরালায়!
আজকাল বড় একা লাগে ভোর দুপুর রাত্রিদিন
বিবর্ণ পৃষ্ঠা আর আলুথালু হিসেবে পাতা ওল্টাই,
বিষাদের সুতোয় গিঁট বেঁধে সাবধানে রিফু দি -
আঙুলের কাঙ্গালপনায়!
জ্যামিতিক আকার মিলবে না জেনেও কঠিন উপপাদ্য এঁকে
রাখি -
প্রমাণিত — শেষে লিখে দি।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন