দৃশ্যায়নের
মন্ত্র উড়ছে অদৃশ্য অয়নাংশে
মাশরুমে
ম্যাজিক বসলে অলীকশ্রবণ। আর শ্রবণের ভেতর শ্রুম্স জমে জমে পাপবোধে বিভ্রম। আসলে
বোধ এক বিমূর্ত বিদ্যুৎলেখা। লতানো তরঙ্গে ওঠে আর পড়ে পাপের আপেক্ষিকতা আর পুণ্যের মরীচিকা দ্বন্দ্ব। আমাদের অলীকদর্শনের
ভেতর হেসে ওঠে ঝরনা ও ঝরনায় নামা পা। আমরা বিচারসভা খুলে মাপতে বসি কতটা জীবন আর
কতটা সাজানো সরঞ্জাম। ম্যাজিকের কিছু সাজ থাকে, সজ্জাও নিতান্ত কম নয়। অথচ
ম্যাজিকের হাত পা খুলে নিলে অনায়াসে নাভি বসে কেন্দ্রে। ওড়নকলা উৎকেন্দ্রিক হয়ে
উঠলে পেনিসিলিনের খোঁজে যাই। আর শ্রুম্স জমে ওঠে বিষণ্ণ রাতের গায়ে, কাউচের গর্ভমূল
অন্ধকারে,
পারসেপশনের
কাদম্বরীত বিভ্রান্তিতে। আমি ক্রমশ হেঁটে যাই অরূপে আলাদিনে ম্যাজিকে।
দৃশ্যায়ন
যখন রহস্যময় অন্তর্বন্ধনের ভেতর নিজেকে খোঁজে, অদৃশ্য অয়নে হেঁটে যায়
আমাদের রক্ষিত সুড়ঙ্গগুলো। পরিপাটি গণ্ডির ভেতর আত্মমুক্তির দুরূহ কল্পনায় এলোমেলো
হয়ে যায় নিভৃত কাঠামোয় জড়ানো সুতো। আলগা হয়ে আসে আঙুলের স্বরধ্বনি। অতর্কিত কথার
ঝাঁকে উড়ে যায় সমস্ত হিসেবের পারিপাট্য; বিশেষণের বাহুল্য থেকে ঝরে যায় বিষণ্ণ পাতারা।
আলোর মহড়ায় ক্লান্তি নেমে এলে নিবিড় মেঘের সঙ্গে ঢুকে পড়ি সুড়ঙ্গের ভেতর। মুখ থেকে
মুখোশে এই যাত্রা কোনো অয়নের খোঁজে কিনা জানা নেই। শুধু নাস্তির ভেতর জেগে ওঠে
জলধ্বনি। সুড়ঙ্গের আরপারে অসীম তৃষ্ণা নিয়ে পড়ে আছে কার মুখ? কার দর্শনচেতনার
সমস্ত পথ জুড়ে বাসা বাঁধে অন্ধবিন্দুরা? পথিকের শুধু পথ থাকে যেখানে আরোহণ অবরোহণ
সমস্তটাই আনন্দমগ্ন। আর দর্শকের মাথার ভেতর বাহিত হয় বিদ্যুৎতরঙ্গ যাদের
দর্শনমাত্রায় বসত করে ভেতরবাড়ি; যে গান গায় সুড়ঙ্গের ওইপারে-
অদৃশ্য
অয়ন
কে
দেখে তাকিয়ে?
তোমার
ভিতরে কোনও দর্শক নেই
এলোমেলো
সূতা। কোথায় কার মুখ লেগে গেছে কোথায় কার মুখে
[সুড়ঙ্গ]
জুয়াঘরের
পিছনে কোনো জুয়া নেই। আসলে আঙুলের গল্প। তিনটে আঙুল। তুমি দাগের কথাও ভাবতে পারো।
কিংবা ভগ্নাংশ। আমি অংশ নিয়ে ঘুরে ফিরে। ইতিবাচক সমস্ত সবুজ আলো নিভিয়ে টকটকে লাল
বাতি জ্বেলে দিই। খুন হয়ে যায় ভাবনার পারম্পর্য; ভাস্কর্যসম্ভব প্রতিমা। ফলত
সাইরেন বেজে ওঠে পুলিশি প্রতিষ্ঠানে। কবি তবু কালাপাহাড়। নেভানো ল্যাম্পপোষ্টের নীচে
খেলা করে। হাতের পিঠে ছায়া ছায়া তারকা আঁকে। জ্বলতে নিভতে থাকে আলোরা। যাপনের
ছাড়পত্র অতিক্রম করে যায় কুলসংক্রমণ। ইস্পাতে বদলে যায় নদী। ইস্পাতের ধার ঘেঁষে
তার যে যাত্রাপথ, সেখানে থরে থরে সাজানো থাকে দৃশ্য। চলিষ্ণু জীবনের ঘাত প্রতিঘাত।
ঘাতের ভেতর বিশ্বনাগরিকের পংক্তিসকল। প্রতিঘাতে জেগে থাকে নিবিষ্ট দর্শন। চোখের
কুর্নিশ গলা নির্যাস পান করে দ্বন্দ্বে মাতাল হয় আপাত বাস্তব। দর্শন পেরিয়ে গেলে
জেগে থাকে শুধু আঙুলের উদ্বেগ; অলীক বিদ্রোহের দুর্মর জিজ্ঞাসা –
এখানে
কয়টা আঙুল?
আমি
বললাম ওইটা কি প্রস্টিটিউট?
ছয়
ভাগ দুই ভাবতেই
উল্টাপাশের
বাড়িতে ভাল্লুল ভাল্লুক বলে চেঁচিয়ে উঠলো কেউ [জুয়াঘরের পিছে]
কাচঘরে
দেয়ালে গড়িয়ে নামছে একফোঁটা জল আর সেই জলের ভেতর খেলাভঙ্গের দুরূহ দর্শনে মিশে
যাচ্ছে হরমোন। প্রতিবর্তী ক্রিয়ারা তখন নিজেকে উন্মোচনের নেশায় মাতে। যজ্ঞানল
জ্বেলে ওঠে দেয়ালে দেয়ালে। ফলত তাক তাক হাড্ডির ঘ্রাণেও স্তিমিত হয়ে আসে পাভলভের
কুকুর। প্রথার অনুগামী সমস্ত ক্রিয়াগুলো চ্যালেঞ্চ জানায় কবিসত্তার চৌকাঠে
দাঁড়িয়ে। মূল্যবোধের আসন্ন সংশয়গুলো হাত পা মেলে বসে পড়ে প্রগল্ভ কবিতাপ্রণালীর
পাশে। দিস্তে দিস্তে যোগাযোগের ভেতর অনিবার্য হয়ে ওঠে অসঙ্গত বিভ্রান্তি। কবির
কোনো ভ্রান্তি নেই। ছায়া থাকে। ছায়া দিয়ে বোনা মৌচাকে নিঃশব্দে জ্বলে যায় মোম আর
চোখের ভেতর রেখে যায় অনির্দেশ্য ঠিকানা। প্রতিটা বিম্ব অলীক হয়ে আসে বিবর্ণ দেয়ালের
কাচে। প্রতিটা ঘর বিস্ময় রেখে যায় বিম্বিত ভুরুর বিপন্ন বিন্যাসে। ছায়ার মাধ্যমের
ভেতর তীব্র হয়ে ওঠে আমাদের প্রাত্যহিক সংকটগুলো। দুলতে থাকে কাচঘরের ঝাপসা দেয়ালে
আর বিম্ব থেকে প্রতিবিম্বের চলাচল মুখর হয়ে ওঠে মনস্তাত্ত্বিক অবয়বে-
কাচঘরে
দেয়ালে গড়িয়ে নামছে একফোঁটা পানি
মিশে
যাচ্ছে হরমোন
দপ্তর
ভরা ফাইল। পাভলভের কুকুর। তাক তাক হাড্ডির ঘ্রাণ
কুঞ্জবনে
গড়িয়ে যায় সবুজ তারকাটা
যেন
চেনা খুব। ভুরু,
চিবুক, চোখের ভিতরে মৌচাক
দিস্তার
পর দিস্তা যোগাযোগ
কাচঘরে
দেয়ালে
প্রতি
বিম্ব দেয়ালে কাচ প্রতি ঘর বিম্বিত ভুরু [কাচঘরে
দেওয়ালে]
বেলুন
এক দুরন্ত প্যাশান; যার ভেতর আমরা পুরে দিতে পারি উড়ে যাওয়ার গোপন ইচ্ছেগুলো। মাটি
সম্ভুত শারীরিক বিকারগুলোর ভেতর হাওয়া নেই কোথাও। শুধু জমাট বেঁধে থাকে চাপ চাপ
বিষাদের মূর্তি। তাদের হাত পা মাথাগুলো যন্ত্রণাবাহী শিরা উপশিরায় গঠিত হতে থাকে।
গঠনের ভেতর প্রাত্যহিক মান অভিমানের নিঃশব্দ চলাচল। হাড়ের ভেতর গজিয়ে ওঠা ছায়ারা
নৃত্য জুড়ে দিলে মাঝরাতে উড়ে আসে কালো মেঘ আর বেলুনওলার গাড়ি তৈরি করে নির্জন
রাস্তার অবসর। যেখানে জীবনমন্থনের সংকটগুলো অসহযোগ আবর্তের ভেতর নিজেদের গড়েপিটে
নেয়। তীব্র হয়ে ওঠে ব্যক্তিমানসের বিচ্ছিন্নতার লড়াই। বিদেশী অচেনা গান রক্তের
ভেতর গভীর স্বরে বাজিয়ে দেয় ঐশ্বরিক নিঃসঙ্গতার সুর। অন্তরঙ্গ স্বরূপ তখন উড়তে
চাওয়া বেলুনের সুতো কেটে দেয়। দক্ষিণ আকাশের বিস্ময় অলখ অলখ স্বরে ডেকে নেয় হলুদ
কমলা রঙের বেলুনগুলো –
বেলুনওলা
জিজ্ঞেস করল আমার ফুসফুস ঠিক আছে কিনা
উত্তর
না দিয়ে আমি বেলুনগুলো দেখতে থাকলাম
মেঘের
নীচে খুব কালো গাছের নীচে সূতা ছিঁড়ে
রাত
দুইটার সময় দক্ষিণ দিকে উড়ে যেতে চাইছে
হলুদ
আর কমলা বর্ণের কয়েকটা বেলুন [বেলুন]
ঘুমের
ভেতর আমাদের দুর্লভ অতিক্রমণ। আর না-ঘুমের ভেতর অন্তর্দ্বন্দ্বে থাকা সূচিমুখ।
প্রতি রাতে সে তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠে। সেরিব্রামের কোষকলায় বর্ণান্তর ঘটে যায় নিঃশব্দে।
আর কোষের মধ্যবর্তী শূন্যস্থানগুলোর দখল নেয় নিঃসঙ্গ অন্ধকার। অন্ধকারের রূপ বড়
মোহময়। সেই নাস্তির ভেতর উদ্দীপিত হতে থাকে কোষের দেয়াল, ক্রমশ ছড়িয়ে যায় কেন্দ্র
পর্যন্ত। ফলত ছুটি নেয় ঘুম আর ঘুমের দোসর। মাথার ভেতর দুলতে থাকে মন্ট্রিয়াল শহরের
অন্ধকার রাত;
যেখানে
হাই হিল আর খাটো স্কার্ট অন্ধকার রাস্তার মাঝ থেকে উঠে যায় ঝাপসা মোটেলে।
অন্তর্লোকের বারান্দায় পা মেলে বসে ঘুমের সমস্যা আর ফায়ার এগজিট দিয়ে নামতে থাকে
সিঁড়ির ধাপগুলো। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ তখন চোখের ভেতর আঙুল ঢুকিয়ে তুলে আনে অসুখের নাম
ধাম। আপাত অমসৃণ সামাজিক বিষয় একান্তই বহিরঙ্গ অথচ সেই রঙ্গের ভেতর বসত করা
না-ঘুমগুলো প্রতিদিন ছিটকে যায় সিঁড়ির ধাপে আর পলকাটা হিরের বিচ্ছুরণ ঘটতে থাকে
ঘুমের সমস্যার ভেতর–
আমি
কাল রাতে কোথাও যাই নাই
মেডিকেশন; আমার মাথায় দোষ আছে
কাল
রাতে ঘুমিয়েছি পরশু ডাক্তার
আমার
ডাক্তার কাল রাতে ঘুমিয়েছে মাথার ভিতরে
একফোঁটা
খাইনি কোথাও [কালরাতে আমি কোথাও যাই নাই]
মাছের
ক্যান খুলতে গিয়ে আঙুল থেকে রক্ত ঝরে। আর আঙুলে উঠে আসে কিছু দৃশ্য কিছু সাদৃশ্য।
দৃশ্যে থাকে বিকেল লিলি চামচিকে। আর সাদৃশ্যে অন্ধকার সিঁড়িঘর থেকে সন্তপর্ণে সরে
আসারা। ভাবনার ভেতর ক্যান্ড মাছের বোবা চোখ আর মরে কাঠ হয়ে যাওয়া পাগলাটে চোখের
সাজেদা। বোবা চোখের সংশয় থেকে অন্ধকারের অচলাবস্থা থেকে ডেকে নিয়ে যায় প্রজাপতি। চামচিকের
ডানায় বাসা বাঁধা অন্ধকার থেকে একটা একটা করে তুলে আনি রাত। শূন্যতার ভেতর জেগে
ওঠে কালবেলার অনিবার্য জীবনদর্শন। রহস্যের ভেতর উদাসীন নিয়তি। তবু আলোর নিগূঢ় টানে
রাতচরা উড়ন্ত চামচিকের গায়ে রঙ লাগে ডানা লাগে। মনভূমির অলীক বারান্দায় নেমে আসে
প্রজাপতি-
ঘড়িটা
একঘণ্টা আগিয়ে দিয়ে তাড়াহুড়া করি
তাড়াহুড়ায়
তাড়াহুড়ায় সাজেদার
পাগলাটে
বোবা আর চোখের কিনার হতে
সন্তপর্ণে
সরে গিয়ে ভাবি
উড়ন্ত
চামচিকা খুব বেশি নয়
প্রজাপতি
থেকে [মাছের ক্যান খুলতে গিয়ে]
সেটের
হাতলে ধুমপান বিরতিকে বসিয়ে দিলে সেটের ভেতর গড়ে ওঠে সমাবেশ-তুমি আমি সিগারেট
মেঘ... সেটের প্রসারণ ক্ষমতার ছড়ে পুরে দিই আমাদের অবস্থান আর গত দুদিনের বা আগামী
দুদিনের চর্চাপদ। এভাবেই বাড়তে বাড়তে সেটের ভেতর মনসিজ। মন নিয়ে আরো এক পারম্যুটেশন
খেলায় মাতে। অকস্মাৎ প্রজাপতি। প্রজাপতি কেন? চাবি ঘুরিয়ে পুবদিক থেকে আসা
বিকেলটি আরো লম্বা হতে হতে বদলে যাচ্ছে বিন্যাস। বিশৃঙ্খলায় নামছে সেট। সেটের আগে
বা পরে যেসব নিশ্চুপ নিউরন জেগে ছিল তোমার প্রশ্রয়ে, তাদের মাথার ভেতর টিক টিক
করে ঘড়ি। ঘড়ি কোন সময়ের কথা বলে? আমার এই ক্ষণ এই অবস্থানের আগের সময়টিও কি ঘড়ি রেখে
যাবে কাঁটার প্রতি তার প্রশ্রয়বোধে? কোথায় জমা পড়বে এইসব মুহূর্তের হিসেব –
প্রতিটা
ঘর থেকে নেমে আসছে আরেকটি সেট
যাদের
প্রত্যেকের নিজস্ব মন
দ্বিতীয়
স্তরের নতুন এক পারম্যুটেশন খেলায় অকস্মাৎ
খুলে
ধরছে প্রজাপতি –
ওক গাছ
–
প্রজাপতি
গাছের গোড়ায় ফিরে ফিরে
ফেরার মধ্যভাগে উড়ে
যাবে [সমবেত]
লুডোর
ছক থেকে উড়ে আসছে একটা তুলো। নির্জন। নিরল ডেকে ডেকে বাতাসের মই যোগাযোগে নামছে।
মনস্তাত্বিকের পিছল মস্তিষ্ক বেয়ে মই বাইছে তুলো; কথারা তখন সাপের গায়ে গায়ে
ফিসফিস ফিসফিস। আমার সুগন্ধি মাখা তুমি সন্দেহের চোখে দেখতেই পারো। কারণ, দেখার জন্য পায়ের
নিচে কোনো গণ্ডি দেবার দরকার নেই। গোল গোল ছকে তুমি পাগলের ভূমিকায়। প্রস্তাবনায়
যেসব শেভিং ক্রিম ঘষে ঘষে তক্তকে হয়ে উঠছিল বাথরুম, তাদের আনাচে কানাচে দেখো
লুকোনো সবুজের চারা। আর সেই সবুজের স্বপ্নাতুর মেঘ ডেকে উঠলে তুমি বৃষ্টি হয়ে যাবে
মুহূর্তে। সেই মুহূর্তের গায়ে যদি কিছু ছক জেগে ওঠে মধ্যরাতে, পৃথিবীর সব কটা
প্লেট সরে সরে যায়। কেঁপে ওঠে যোগাযোগ সেতু আর পায়ের নীচ থেকে সরে যায় সমুদ্রপার।
আসলে এইসব সরে সরে যাওয়ার ভেতর জমা থাকে আমাদের সমস্ত কথারা। কথার গায়ে লেগে থাকা
দৃশ্যরা মই ভেঙে ভেঙে উঠে যায় পাগলের চোখে। চোখ সংক্রান্ত সমস্ত মিথ নোঙর নামায়
আপাত সরল দৃশ্যে, স্বতন্ত্র শব্দে –
আমি
শেভ করি। সুগন্ধি মাখি। আর
সমস্ত
পাগল আমাকে সন্দেহের চোখ দেখে
মধ্যরাতে
একটা নির্জন তুলা উড়ে বেড়ায়
এই ছক
থেকে ওই ছক
এতটুকু
তুলা,
যেন
লুডুর ঘর আকাঁ বাতাসের মই
সাপের
গায়ে পিছলে যাওয়া পাগল,
মনস্তাত্বিক
যোগাযোগের কথা বলে ফেলা – গায়েবী আওয়াজের কথা [ছক]
সাবধান!
রবি তার কিরণ লাগা তুলো নিয়ে এখনও হাজিরা দেয় – তোমার সঙ্গে আমার সঙ্গে এই
যে তার প্রাণের খেলা, নিত্যদিনের বহিরঙ্গে রাঙিয়ে কখন পালিয়ে যাবে, উতল করে হার মানাবে।
কাজ কি! বরং আয়নায় জ্বোরো মুখ কিংবা হ্যাঙ্গারে শার্টের বুক – এই সব ছোটো ছোটো
দৃশ্যেরা কথা বলে যাক কিছু কথা না বলে। আসলে দৃশ্যের গায়ে থাকে সময়গ্রন্থির বাঁধন।
কোনো বিশেষ সময় বা অবস্থানে বসে কবি তার গ্রন্থি খুলতে থাকে। আর সেই অবস্থানের
প্রেক্ষাপটে এক সামান্য টুপি বা হ্যাঙ্গারে ঝোলানো শার্টও শব্দমন্থনে নিজেকে
সাজায়। আর অন্তর্বর্তী পঙ্ক্তিরা নিজেকে মেলে ধরে অলখঝোরা ভাবনাধারে –
আমার
একটা টুপি আছে
দেড়
ফুট লম্বা। মাথায় দিলে সুন্দর লাগে
আমি
মাথা দোলানো টেক্নো
দুলে
দুলে অনেকের মধ্যে কাতর
একটা
মুখ ভাবি [আয়না]
প্রচ্ছদে
ডেভিড ব্যাপটিস্ট শিরো, ছাঁচ শিল্পের আধারাধেয় ভাব। পেনসিল ঘষে ঘষে ঘর্ষকলায় জাগছে
আনোখা রূপকল্প; যে কল্পের ভেতর রূপ হাঁটছে অরূপে, ছবি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ভাবছবিতে। আর
দৃশ্যের অলীক কেন্দ্রবিন্দুতে রূপদক্ষ হচ্ছে কবি আর শিল্পীর রাবআর্ট।
------------------
যে
কবির পঙ্ক্তিতে দৃশ্য-ধ্বনি বাজিয়ে তুলে এইসব প্রাণের খেলা তার পোষাকি পরিচয়ঃ
কবি
মেসবা আলম অর্ঘ্যর জন্ম ঢাকায়, ১৯৮১ সালে। প্রথম কবিতা প্রকাশ ‘কথকতা’ পত্রিকায়
১৯৯৯-এ। এরপর বাংলাদেশের কিছু দৈনিকে বিচ্ছিন্নভাবে লিখেছেন। ২০০৫ থেকে ঢাকা ও
কলকাতার বিভিন্ন সাহিত্যপত্রে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হচ্ছে। কম্পিউটার প্রকৌশলে
স্নাতক। অর্ঘ্য পড়াশোনা ও কর্মসূত্রে কানাডা নিবাসী। প্রকাশিত বই- ‘তোমার বন্ধুরা
বনে চলে গেছে’(২০১০, বাংলায়ন, ঢাকা), ‘মেওয়াবনে গাণিতিক গাধা’(২০১০, ফ্রি একুশ শতক, ঢাকা), ‘তোমার সাথে আক্ষরিক’(২০১৬,
জনান্তিক)।
আলোচ্য বইটি ‘আমি কাল রাতে কোথাও যাই নাই’ প্রকাশিত হয় কৌরব থেকে ২০০৮-এ। মূল
প্রচ্ছদ –
ডেভিড
ব্যাপটিস্ট শিরো; পু্নঃরূপায়ন- অমিতাভ ইসলাম।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন