প্রতিবেশী সাহিত্য
সোনি
পান্ডে’র কবিতা
(অনুবাদ : মিতা দাশ)
কবি পরিচিতি : ড.
সোনি পান্ডে হিন্দী ভাষায় কবিতা লেখেন। তাঁর জন্ম উত্তরপ্রদেশের মউ জেলায়। হিন্দী ভাষা
ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। পেশা শিক্ষকতা। হিন্দীতেই তিনি একটি লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা
করেন। পত্রিকার নাম ‘গতান্তর’। বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত ভাবে তাঁর লেখা কবিতা ও গল্প
প্রকাশিত হয়। এখনও পর্যন্ত তাঁর একটি কবিতা সংকলন ‘মন কি খুলতি গিরহে’ ও একটি গল্প
সংকলন ‘বালমা জী কা স্টুডিও’ প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন পুরস্কার তিনি অর্জন করেছেন
– শীলা সিদ্ধান্তকর ইয়ং পোয়েট্রি অ্যওয়ার্ড (২০১৫), ইন্টারন্যাশনাল সেতু পোয়েট্রি অ্যওয়ার্ড
(২০১৬) এবং মা ধনপতি দেবী স্টোরি অ্যওয়ার্ড (২০১৭)।
এই মারাত্মক সময়ে
এই মারাত্মক সময়ে
সবচেয়ে বড় হত্যা
প্রশ্ন ও তর্কের।
আসলে ওদের সত্ত্বা ভয় পায় প্রশ্নকে
থেঁতলে দিতে চায় প্রশ্নকর্তার মাথা
থেঁতলানো মাথা দেখে ভয়ে জব্দ মানুষেরা
নুয়ে পড়ুক মেরুদন্ডহীন পশুর মত
মাথাকাটা ওই মানুষগুলির ভাবনাচিন্তা
থাকুক ওদের হাতের মুঠোয় বন্দী
ওদের চোখে পট্টি বেঁধে পড়াতে চায়
সম্প্রদায়ের ভাষা ও আমাদের প্রশ্নকে বন্দী করে চরাতে চায়
কিন্তু ওদের ও জানা নেই, ওদের বন্দুকের সব গুলি শেষ হয়ে যাবে
গুলিও ক্লান্ত হয়ে উঠবে
কিন্তু প্রশ্ন গুঞ্জরিত হতে থাকবে নিরন্তর বাতাসে
প্রশ্নই মানুষকে মানুষ করে
অসম্পূর্ণ কিছু কথা
কিছু চিঠি অসম্পূর্ণ রয়ে গেল আজন্ম
কিছু ঠিকানা লেখা খাম রয়ে গেল দেরাজে
কিছু কথা চাপা রয়ে গেল আজ অব্দি মনে
কিছু কথা স্মৃতির বাক্স থেকে উথলে পড়ছে ঠিক
বর্ষার নদীর মত জীবনের ধাপে ধাপে
একটি অসম্পূর্ণ কবিতা পথ চেয়ে রয়েছে পূর্ণতার জন্য
আর দুটি কবিতার বই ছাপাও হয়ে গেছে
আর আমি গোটা পৃথিবীর থেকে পাওয়া দুঃখ গিলে
ডায়রি লিখে ও কতগুলি অসম্পূর্ণ কবিতা লিখে
ঘুমের দায়ে ঘুমিয়ে পড়ি
সেই অসম্পূর্ণ কবিতার সঙ্গে দেখা হওয়াটা
বেশি ভালো সেই মানুষগুলির সঙ্গে দেখা হওয়ার চেয়েও
অসম্পূর্ণ কবিতার সাক্ষী রইল
আমি নিজের মনের কথা আর মা’কে লিখতেই পারবো না
ঠিকানা লেখা খাম জানে সে কথা
যা আমি মা’কে বলতেই পারিনি এতদিন
সেই সব কথাগুলি নথি করা রয়েছে এই চিঠিতে
আমি জানি আমার চিঠি পেয়েই তোমরা আবার ফিরে আসবে
কিন্ত তোমাদের ফিরে আসাটা এই দোরে তো আর সম্ভব নয়
তাই পড়ে রয়েছে খামখানা দেরাজে
স্বপ্ন
সারাটা রাত জেগে থাকি
স্বপ্ন চুপ করে এসে আমার কোলে ঘুমিয়ে পড়ে
আমার সারাটা দিনের কান্না চাপা পড়ে যায়
আর ওকে চুমু খেতে খেতে ভোর হওয়া অব্দি স্মিত হাসি
স্বপ্ন একটা আমার আঙ্গুল ধরে নেয় পথ হাঁটার সময় চুপ করে
লাফঝাঁপ করতে করতে সে সঙ্গে হেঁটে যায়
আর আমি ওকে আদর করতে করতে পার হয়ে যাই
সব কাঁটাযুক্ত পথ রোজ রোজ
একটা দিন মজুরের মত খেটে যখন ক্লান্ত
অনন্ত পরিশ্রমের একভাগও সুখ পাই না তখন
মৃত্যুর দিকে তাকিয়ে এগিয়ে যাই
স্বপ্ন ছটফট করতে করতে এসে বসে আমার কাঁধে
ওর ঠোঁটে চাপা খড় ধরেই ফিরে আসি এই দুনিয়ায়
ধন্যবাদ আমার প্রিয় কবি ‘পাশ’
তুমি আমায় স্বপ্ন দেখতে শিখিয়ে গেছো
বাঃ, ভালো লাগলো!
উত্তরমুছুনধন্যবাদ দাদা
মুছুন