হেমন্তের রোদ
হৈমন্তিক দুপুর রোদ ক্লান্ত হয়ে শুয়ে আছে মাঠে
আমি চোখ চেয়ে দেখি শুধু দেখি আনমনে
হৈমন্তিক রোদ এলিয়ে দিয়েছে শরীর সোনালি খেতে
আনমনা মাঠ আর রোদ কোলাকুলি করে সারাক্ষণ
নিস্তব্ধ মাঠের এককোণে একঝাঁক ঝগড়াটে চড়ুই
কিচির মিচির ঝগড়া করছে এপাশ ওপাশ উড়ছে
আকাশে তাকিয়ে দেখি রাশি
রাশি ক্লান্ত রোদ ঝরছে
স্তরে স্তরে জমছে মাঠে যেন অনন্তের এক ক্লান্তিহীন খেলা
বেলা নেমে আসে ধীরে
কুয়াশারা মৃদু হাতে
ওড়না ছড়িয়ে দেয় আকাশের অঙ্গনে অঙ্গনে
তারপর গগনে ভুবনে চলে আলো আর ছায়ার বিচিত্র খেলা
পশ্চিম দিগন্তে তখনো আলোর ঝাপসা মধুর দেওয়ালি
পূর্ব দিগন্তে সাজে কুয়াশার মত্ত কুহেলি
সাদা ডানায় সারি সারি বকেরা পশ্চিম থেকে যায় পূবে
ডানায় মেখে নিয়ে শেষ আলোর পশরা
আকাশের অন্য কোণে কাকের জটলা চেঁচামেচি
হৈমন্তিক রাত নামে অন্ধকার আর
কুয়াশায়
পাতায় ঘাসেতে জমে অলৌকিক সব জলকণা
নক্ষত্রের পতন
কাল শেষরাতে আকাশ
মাতিয়ে
একটি নক্ষত্রের পতন
হলো
চমকে উঠেছিল পৃথিবী
সসাগরা
মানুষের সব ঘরবাড়ি
প্রকৃতির ঘর
এভাবেই নক্ষত্রের
পতন হয়
গোলাপ বাগানে ঝরে
যায় গোলাপ
গগনে গগনে নক্ষত্রের
ব্যাকুল কান্না
অকাল বর্ষণে ভাসালো
আকাশ আঙিনা
ভেসে গেলো আমাদের
ঘরবাড়ি
মাঠের ফসল নদী হলো
খরস্রোতা
সমুদ্র ফোঁসে উঠলো
গভীর বেদনায়
এভাবেই নক্ষত্রের
পতন হয় জেনে গেছি
অন্তরে আমার শুধু
ভাঙ্গনের শোরগোল
আমি মৃত্তিকার মত
কোমল হতে চাই
আমি মৃত্তিকার মত
সহিষ্ণু হতে চাই
আমার নক্ষত্র সব যখন
একে একে
গ্যালাক্সির পথে
চূর্ণ চূর্ণ হয়ে পড়ে
মহাকাশ মহাবিশ্ব
বিপন্নতায় ডুব দেয়
আমি চাই বসরাই
গোলাপের মদির সুগন্ধ
শান্তির বাতাবরণ গড়ে
তুলুক বিশ্ব চরাচরে
না-হওয়া কথারা
না-হওয়া কথারা জেগে থাকে ঘুমগন্ধি রাতে
এই অশীতিপর অন্ধকারও ঝরা বকুল - সূর্য
ওঠার আগে
রোদের বাগানে হেসে ওঠে ভ্রমররহিত
ভোরফুল
আকাশের আর্কাইভ থেকে এইদৃশ্য
চিরপ্রচারিত
না-হওয়া কথারা জেগে থাকে তবুও
নিকষিত নিকোটিনের আলোয়-ভাঙা অর্গান
বাজিয়ে বাজিয়ে কাটিয়ে দেয়
নিরন্ন-দুপুর
স্মৃতিপুরে কাঠঠোকরার মত
ঠুকরে ঠুকরে খায় কৃশকায় আত্মার ফসিল
না-হওয়া কথারা জেগে থাকে বুকের
ব্যাসে
সন্ধ্যার আঁধার নিয়ে
আত্মার ফসিল, ভাঙা অর্গান,
না হওয়া কথা জলছাপ হয়ে জেগে
দুরন্ত কবিতা সাজাতে চায় শাশ্বত ছন্দে
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন