কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮

ফারহানা রহমান




একঝাঁক শব্দের এপিফ্যানি


(১)  

এখানে কোন প্রেরণা নেই
নেই কোন উদ্দীপনার পংক্তি 
অথচ সূর্যতাপে উষ্ণ হওয়ার মতো হেঁয়ালি মাখা থাকে পথের প্রতিচ্ছায়ায়
সারা দিনভর কী এক অপেক্ষায় কেটে যায়
যেন ঘুমে জড়িয়ে আছে দু’চোখ  
আর এইসব হেমন্তের দিনগুলোতে
ম্যাপল পাতাদের উচ্ছ্বাসভরা আত্মহুতি দেখে ভাবি, 
দৃঢ় অথবা সূক্ষ্ম সব আবরণের মাঝে
গৃহত্যাগী সন্ন্যাসের মতো
কেউ হয়তো ডাকছে ইশারায়
জানিনা পুড়ে যাওয়া মোমবাতির আলোয় তখন
আমার হাতেও এসে ঝরবে কি না
কিছুটা কাতর শৈশবের স্মৃতি...
 
(২)
স্রোতের মতো গড়িয়ে পড়ছে সময় 
এই নীরবতা ভণিতাহীন...
স্মৃতিগুলো যেমন নীরব গূঢ়লিপি
অবিচল অস্ত্র, হেঁয়ালিপন 
কয়েদঘরে আঁটকে থাকা পাপী আত্মাদের বিষাদে 
প্রায় অন্ধকার কোন মরীচিকা অথবা দেহ 
আরো রণন তুলে চলে অন্যদের মনে
এখনো তো শেষ হয়নি শীতের হাহাকার
সূর্যতাপে উষ্ণ হয়নি শুকিয়ে যাওয়া ঠোঁট
অথচ বেদীর সমুখে শেষ পাতাদের গনগণে ছাই পড়ে আছে
আর সে সবই কিন্তু প্রতিবাদের ভাষা!

(৩)

প্রতিদিন কশেরুকায় জমছে একটু একটু বোধ,
নিপাট ভাঁজে ভাঁজে ব্যথা
জল ঝরে পড়ার আগের মুহূর্তে যে সব রঙ খেলা করে, 
তাকে নিজের করে পেতে চেলেই 
দেখবে সব বাতি নিভে যাচ্ছে ধীরে ধীরে...

(৪)

এবার ইন্দ্রিয়গুলোকে পাথরের মতো দ্বিধাহীন করে তোলো প্রিয়... 
মৃত্যুকে করে তোলো অন্তত রূপান্তর 
তবু যেখানে নিরন্তর দাসত্ব জেগে উঠে তোমার স্বচ্ছ আত্মার প্রাচীরে 
তুমি তাকে অশুভ আঁধার বলে ফাঁকি দিয়ে গেছো
আর হেমন্তের পাতা ঝরা বিকেলগুলোতে যখন 
বেজে ওঠে তোমার মৃদুল গল্পস্বর 
তুমি সেখানে ভিন্নতা আনবে বলেই
হেঁটে গেছো পিচ্ছিল মরুভূমিতে...

(৫)

অথচ তুমি শুধু দূরত্বেই বাজি ধরেছিলে
আর আমি লীন হয়ে গেছি তোমার বেদনায়
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি
তবে আরও স্পর্শে হেমন্তেও বৃষ্টি নামুক আজ
হয়তো এটাই নিয়তি যে আমরা একে অপরকে চিরদিন খুঁজবো
আর আমাদের মাঝে প্রতিটি রাস্তা দূরত্ব তৈরি করবে  
প্রতিটি অলিগলি, প্রতিটি মোড়
শুধু আমাদের নিজেদেরকে অচেনা করে দেবে...



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন