কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৫

নভেরা হোসেন

অপেক্ষা

আমি অপেক্ষা করছি কিছু সময়
কেউ হয়তো বইয়ের পাতাগুলো উল্টে দেবে
খুলে দেবে কোলাপসিবল গেট-
ক্রেনের ভার তুলে নেবে অপেক্ষা করছি,  
পানিতে পা ডুবিয়ে সন্ধ্যা হওয়ার অপেক্ষা
পানি দিয়ে ওষুধ গুলে রাতগুলো কাটার অপেক্ষা-
হয়তো ট্রেন আসবে সূর্যমুখি ফুলে ভরে উঠবে তোমার দুহাত  
অপেক্ষা করছি-
দম আটকে মরে যাবার আগেই হয়তো চিঠি পৌঁছে যাবে
আঙুলের শেষ রক্তবিন্দু ঝরে পড়বার অপেক্ষা
আমি অপেক্ষা করছি কামিনীর গাঢ় ছায়ায়
তোমার ফিরে আসার...



ফটোগ্রাফ

তোমার ফটোগ্রাফে চশমা নেই
আমার রিমলেস ফ্রেম
ছবি দুটোও আলাদা
একই বাড়িতে নয়
একই শহরেও নয়
জমজমের কুয়ায় প্রতি বছর পানির নহর বইছে
ছেলে, বুড়ো, নারী, শিশু যে যার মতো পানি কুড়িয়ে নিচ্ছে
খেজুরের ফলনও ভালো
ছোলা, কাঁচা-মরিচ, বেসনের দামটা একটু চড়া
মাথায় সাইরেন বাজছে-
তোমার চোখে চশমা নেই
আমারও ফটোগ্রাফ রিমলেস
একটাই ছবি একই বাড়িতে
একই শহরে
এসব দুযুগ আগের কথা  
তারপরও যোগাযোগ হয়
দূর থেকে দেখলে দুজন দুজনকে চিনতে পারি
কফিরঙে তোমাকে মানায়
নীলে আমাকে
শহর যদিও আলাদা
এমন কী দেশ-
ছবি একটাই
একজনের চুল অন্য জনকে ছুঁয়েছে
এসব শুধু স্বপ্নেই ভাবা যায়
ফটোগ্রাফে যে যার মতো গম্ভীর


ফটোগ্রাফ থেকে ফটোগ্রাফে

আমরা সিন্দুকে তালাচাবি লাগাই
যত্ন করে ভরে রাখি দলিল দস্তাবেজ
মা
র শাড়ি, বাবার শার্ট, প্রেমিকের প্রথম চিঠি-
মেয়ের পায়ের ঘুঙুর দেরাজে বাজতে থাকে
ভাবি এগুলো অতি জরুরি
কেউ একজন পড়বে, কেউ একজন ছুঁয়ে দেখবে
নদীতে জল বাড়ে, সময় গড়ায়
এক শীতের সোয়েটার অন্য শীতে পুরনো হয়ে যায়
তুমি ভাব সব কবিতাগুলো বইয়ে ব
ন্দী হয়ে থাক,
প্রেমিকের প্রথম চুমুর মতো ঘন, রক্তিম হয়ে উঠুক
আলমারির প্রতিটা ড্রয়ার-

তুমি ভাব এইসব অতি জরুরি
কেউ পড়বে কোনোদিন-
নদীতে জল গড়ায়, বন উজার
হয়
চিঠিগুলো ঝাপসা হয়ে গেছে
বন্দী চুমুরা হাঁসফাস করছে বইয়ের শেলফে
কেউ ছুঁয়ে দেখল না পায়ের পাতা
গভীর ঘুমে তুমি
কবরে কাঁটা গজিয়ে গেছে
কেউ আজ এ পথ মাড়ায় না
ঘুঙুর বেজে চলেছে শিশুর পায়ে
জলের শব্দ আসছে
ফটোগ্রাফ থেকে ফটোগ্রাফে




0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন