কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

<<<< সম্পাদকীয় >>>>

 


কালিমাটি অনলাইন / ১৩১ / ত্রয়োদশ বর্ষ : চতুর্থ সংখ্যা

 


যোগ্য ও অযোগ্য, দুটোই বাংলাভাষায় বহুল প্রচলিত শব্দ, এবং একে অপরের বিপরীতার্থক শব্দ। ইদানীং বিভিন্ন সংবাদপত্রে, পত্র-পত্রিকায়, আড্ডা-আলোচনায় এই দুটি শব্দকে কেন্দ্র করে প্রবল চর্চা ও সমালোচনা চলছে। বিশেষত সাম্প্রতিক শিক্ষার ক্ষেত্রে, সাহিত্যের ক্ষেত্রে, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে, সামাজিক তথা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এমন কিছু অনভিপ্রেত ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এই শব্দদুটি প্রায়শই উসকে উঠছে। আরও দুশ্চিন্তার কথা, অযাচিত কিছু পারিপার্শ্বিকতায় যেভাবে যোগ্যতাকে ছাপিয়ে উঠছে অযোগ্যতা, যোগ্যতাকে ক্রমশই কোণঠাসা করে ফেলছে, এমনকি যোগ্যতাকে প্রতিস্থাপন করে অযোগ্যতা যোগ্যতার স্থান দখল করছে, তাতে সাধারণ বিচার-বুদ্ধি রীতিমতো গুলিয়ে যাচ্ছে, ঘেঁটে ‘ঘ’ হয়ে যাচ্ছে।  

একটা প্রশ্ন এখানে উঠতেই পারে, যোগ্য ও অযোগ্যের তুলনামূলক বিচার কীভাবে করা যেতে পারে, যেখানে যোগ্যতার মাপকাঠি নির্দিষ্ট করে রাখা সত্ত্বেও অনেক যোগ্যই বস্তুত প্রকৃত যোগ্য নয়! ব্যাপারটা সত্যিই ভাবার। আমি পেশাগতভাবে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা কাজে নিযুক্ত ছিলাম। সাহিত্যক্ষেত্রেও কাজ করছি অনেকদিন। আমার দেখা চেনা জানা অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত সহকর্মীরা সবাই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত অর্থাৎ কোনো একটা বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং অনেকেই পি এইচ ডি প্রাপ্ত। কিন্তু খুবই অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছি, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ অধ্যাপনার জন্য যোগ্যতার মাপকাঠি অতিক্রম করলেও যথার্থ যোগ্য হয়ে উঠতে পারেননি। প্রকৃত শিক্ষিত হতে পারেননি। এবং তাই মনে হয়েছে, কোনো বিষয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত মানেই কাউকে শিক্ষিত বলে চিহ্নিত করা ভুল। কীভাবে তাঁরা ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তা খুবই বিতর্কের ব্যাপার এবং এখানে তা আলোচ্য নয়; শুধু এটুকু বলা যেতে পারে, এভাবেই অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত যোগ্যদের পাশাপাশি অনেক অযোগ্য যোগ্য বলে পরিগণিত হচ্ছে। ঠিক এই কথাটাই প্রযোজ্য হতে পারে সাহিত্যের ক্ষেত্রে, আমি এখানে বাংলাসাহিত্যের কথাই বোঝাতে চাইছি। বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিকসাহিত্যসংস্থা যাঁদেরকে ঔপন্যাসিক, গল্পকার, কবি হিসেবে প্রচার করছে, তাঁরাই বাংলাসাহিত্যে ঔপন্যাসিক, গল্পকার, কবি রূপে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছেন, পুরস্কৃত হচ্ছেন, বাণিজ্যিক পত্র-পত্রিকায় লেখা প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে সত্যিই কারা যোগ্য, আর কারা যোগ্য নয়, তার বিচার করবে কে? অবশ্যই করবে পাঠক-পাঠিকারা, কিন্তু সেই বিচার গৃহীত হবে কোথায়? অনেক অযোগ্য সাহিত্যিক যে যোগ্য সাহিত্যিকের মর্যাদা পেয়ে নিজেদের জাহির করছেন, আর প্রকৃত যোগ্য সাহিত্যিকরা তাঁদের যোগ্যতার মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়ে হারিয়ে গেছেন, একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আমরা যারা প্রচন্ড আশাবাদী, সুদিনের অপেক্ষায় আছি, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাসাহিত্যের এইসব গরমিল উধাও হবে মনে করি।

জুন মাসের মৌসুমি শুভেচ্ছা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই সবাইকে।   

 

আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা :

kajalsen1952@gmail.com / kalimationline100@gmail.com

দূরভাষ যোগাযোগ : 9835544675

 

 

 


1 কমেন্টস্: