কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

কানাইলাল জানা

 

কবিতার কালিমাটি ১৪৬


অনন্তের দিকে

ক্লান্ত জীবনের পাশে এসে দাঁড়ায় আর একটি  রিক্ত জীবন। ফুরিয়ে যায় বেলা, দেখি শস্যের ঘ্রাণ ছাড়া অন্য কোনোও সঞ্চয় নেই। তবুও ডুব দিই জলের শরীরে, উঠে আসে স্নান, উঠে আসে অবগাহন। ফুটন্ত ভাতের হাঁড়ি থেকে উঁকি দেয় খিদের আরাম। যখন আঙুলের ফাঁক দিয়ে গড়িয়ে পড়ে ধারাজল, হাল্কা জন্ম উড়ে যায় বোধিবৃক্ষের খোঁজে...

জীবন স্রোতে বঁড়শি ফেলি, ফাতনা ডোবে না। তবুও জেগে থাকে বীজতলার আকাঙ্ক্ষা। যখন পুরনো রোদের গম্বুজ ওঠে, স্বপ্নে দেখি মাথা তুলেছে শালুক-পুকুর। যে-যাওয়া ভেতর থেকে, পথচলা শুরু করে অনন্তের দিকে...

 

সন্ধ্যারতি

সব কিছু জানে পাখি যেমন সব জানেন ঈশ্বর। বিনাদ্বিধায় ঈশ্বর ক্ষমা করে দেন আমাদের সকল অক্ষমতা তেমনি পাখিও। পাখি তন্ত্রাজল ছড়িয়ে দেয় আকাশে, আমরা প্রদীপ তুলে ধরি উর্ধে। তখন ঈশ্বর হাঁকেন 'শান্ত হও স্থির হও'....

পাখি এসে বসে যে গাছে সে-টি আসলে নিঝুমপুরী। নিঝুমপুরীর মধ্যেই ঈশ্বরের আবাস যিনি জড়ো করেন আলো আধাঁরির সকল খেলা। যখন শঙ্খধ্বনি করে ওঠে নিঝুমপুরী ক্রমে সেদিকেই ধাবিত হয় আমাদের সন্ধ্যারতি...

 

না-মানুষি রাজ্য

বরাবরের বাসনা এমন এক রাজ্য গড়ি যেখানে পাতিহাঁস পেতে দেয় বসার আসন, সর্ষেফুল উঠোনে আঁকে উৎসবের আল্পনা। বাস্তুঘুঘু সঙ্গে যায় সদরঘাট। মশা-মাছি গায় আনন্দ গান। মহানিম রাখে পাড়াপড়শির খবর। গেছো ইঁদুর মেঠো ইঁদুর আয়োজন করে দৌড় প্রতিযোগিতা। ছাতিমতলায় মুখোমুখি বসে থাকে জন্মদিন মৃত্যুদিন...

সেখানে তারের ওপর চড়ুই হয়ে বসে থাকে ইচ্ছেকুঁড়ি। চামচ চিমটে নাচে কত্থক। ছাতার মতো ছায়া মেলে মেলে চলে যায় মেঘ। সৈনিক সেজে কুচকাওয়াজে মগ্ন কীটপতঙ্গ। কীর্তন আসরের জাজিম পাতে প্রজাপতি ভ্রমর। ঢ্যাঙা তাল ঠিকই জেনে নেয় সামনে কোনো দুর্যোগ আসছে কি-না...

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন