কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১৩১

শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

শিশির আজম

 

কবিতার কালিমাটি ১৪৬


সবকিছুতেই ঝুঁকি আছে

 

রোদ চচ্চড় করে বাড়ছে, নৌকোর ওপর চড়ে বসলো নদীটা।

আমি ৪৫

মেদ জমে পেটের কিম্ভুতকিমাকার অবস্থা

কিন্তু নদী তো নদীই।

কিশোরী মেয়েটার বোঝা দরকার ও কিশোরী

কেবলই কিশোরী

নদীর মনমর্জি বোঝার বয়স হয়নি ওর

আর লোকটা কবিতা লেখে

আর কবিতা লিখে ভাত হয় না জানে সবাই।

কিন্তু ব্ল্যাক স্কচ ওর পছন্দ

কার

ঐ কবির,

কয়েক ফোঁটা স্কচ পড়ে আছে ওর বিশ্রী ভুড়িটার ওপর

আর ঐ মেয়েটা তা আঙুলে তুলে নিচ্ছে

অবলীলায়,

ঠোঁটে চাটছে।

এ কি খানিকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে না

বিশ্রী পেটের ঐ কবির জন্য

আর ঐ নির্বোধ কিশোরীটার জন্য?

 

পুলিশ দেখিনি

 

পুলিশ দেখিনি কিন্তু শেষ অব্দি পুলিশের ওপরই আস্থা রাখছি

টেবিলের ওপর ছুরি আর হুইস্কির গ্লাস

ডিকশোনারি আর দেশলাই

কাটাপড়া গাছগুলি ছাদের কার্নিশ বেয়ে উঠে আসবে

জানি

আমার টেবিলে

অথবা দখল করবে এই চেয়ার কমলালেবুর রস চুঁয়ে পড়া

এই চেয়ার

আমাকে মেনে নিতে হবে পুলিশ দেখছে সব

 

আমি আমার মতো

 

'আমি আমার মতো', বউরে কইলাম কতবার।

আমার শীতের রোদ আমার

আমি আমার বিড়ালরে দুধ খাওয়াই

আর ছোট ছোট তাজা মাছ

আর ভোরের শিশির।

কিন্তু অর পছন্দ আমার কবিতা

বিশেষত যেগুলার অর্ধেকটা লেখা হইছে

আর সেগুলার এখন অব্দি কোন নামকরণ করা হয় নাই।

 

যা হোক অর তো জানতে চাওয়া উচিৎ বাকি অর্ধেক কবিতা

কই আছে।

হ্যাঁ ওগুলা আমার কাছেই আছে।

কিন্তু ঐ অসম্পূর্ণ এ্যান্টিকোলাজ কবিতাগুলার

মতিহতি

কাকনিদ্রা

আমার তো ভাল ঠেকতেছে না

আর কিছু কইলেই ওরা আমার ওপ্রে চেইতা যাইতেছে

বলতেছে

সেই একই কথা, 'আমি আমার মত'।

 

পেরেক বিষয়ে বাবা আমারে কিছু বলেন্ নাই

 

জীবদ্দশায় এই চেয়ারটা ছিল বাবার সম্পত্তি

এখন আমার

এইটাতে এখন আমি বসি

 

চেয়ারের দুটো হাতলের একটাতে

একটা পেরেক

আমারে ও ভ্যাংচাইতেছে

ওর ছোট্ট মিষ্টি মুখখানা বাইর কইরা

 

এই পেরেকের কথা বাবা কি জানতেন না

না কি জাইনা শুইনা আমারে উনি বসায়ে গেছেন

এই অমায়িক চেয়ারে

পেরেকের

বিষাক্ত ছোবলের মুখে

 

ফল

 

মরা পাতাদের নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই

ওরা খায় না

পড়ে না

নিজেদের ভেতর কেচ্ছা করে না

 

কিন্তু এটা তো স্বীকার করা দরকার যে একদিন ওরাই

ওই পাতাগুলোই

সৃষ্টি করেছিল এই গাছকে

আর ছোট থেকে বড় করে তুলেছিল

আর গাছকে ফুলে ফুলে ভরিয়ে তুলেছিল

 

আজ

আমাদের লোভাতুর চোখ

তাকিয়ে আছে ফলের দিকে

ফলেরই দিকে

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন