ধারাবাহিক উপন্যাস
সত্যান্যাস
(পর্ব ৩)
অথবা
গোদার দেখে ৩৮৬টি মনোলগ
গায়ের জোরে বলা উপন্যাস
A social media studies
যে বাজার থেকে মুক্ত সে মুক্ত
উৎসর্গ
ঋতস্বিনী দত্ত বকসী (কন্যাটি)
ঋণ, অনুপ্রেরণা ও কৃতজ্ঞতা
তরুণ গোদার
সর্বপ্রিয়ানন্দ
কপিল শর্মা শো
মৌমিতা ঘোষ
চন্দ্রিল
নিখিল ব্যানার্জি
অর্ণব নাথ
এবং
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ,
ইউটিউব
(এই
লেখাটি লেখার একটাই উদ্দেশ্য। যদি একে যাতে একে উপন্যাস বলা যায় তবে যে কোন সাক্ষর
ব্যক্তি কলম তুলে নিতে প্ররোচিত হবে! দীর্ঘদিন না লিখে হাতে জং ধরে গেলে, ব্রেন বেশি
কাজ না করলে আর পড়ার অভ্যাসও পুরোপুরি চলে গেলেও কীভাবে উপন্যাস লিখতে হয় তারই এটি
একটি উদাহরণ! মূল ইন্সপিরেশন অবশ্যই তরুণ GODARD—BREATHLESS! সেই ২০০৭-এর পর কাকতালীয়ভাবে
আবার প্রথম পর্যায়ের গোদার দেখতে বসে মনে হল, আরে! সবাই সিনেমা বানাতে পারে, সবাই উপন্যাস
লিখতে পারে তা সে যতই স্মার্টফোনে ক্ষয়ে যাক না কেন মেধা! যখন হাতে রইল শুধুই সোশ্যাল
মিডিয়া, তখন ফর্মে ও কন্টেন্টে না হয় তাই হল উপন্যাস, নিরক্ষরদের উপন্যাস! ব্যাস, সকলেই
একটি করে অন্তত উপন্যাস লিখুন! কারণ আপনাদের সকলের কাছেই একটি করে স্মার্টফোন আছে!
উপন্যাসটি
লেখার সময় খাতার প্রতিটি নতুন পাতা এক একটি নতুন অধ্যায়। সুতরাং যে কোনও পাতা থেকে
যে কোনও পাতায় চলে যাওয়া সম্ভব। পরে এডিটিং এর সময় আরো যাতে সেন্ট্রিফিউগাল হয়ে যায়
সেদিকেই নজর রাখা হয়েছে। একে উপন্যাস বলা যায় কিনা তা নিয়েও তর্ক হয়েছে অতি নিকট বৃত্তে।)
সেলফি বা ফটো পারতপক্ষে তুলি না। মোবাইলে
স্পেস খালি মাত্র ৫ এমবি। তুললেই হ্যাঙ করে যায়। ডিলিট করে রিস্টার্ট না করলে ফোন চলে
না। প্রসঙ্গত আমি নিঞ্জা হ্যাকারের মতো হাতে মোবাইল ১৫ মিনিট পেলে টোটাল ট্রাকিং করে
রাখতে জানি। জানি জানি। দিব্যাস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ জিতবো না।
- মানু মোবাইলের চার্জারের পিন চুষে
চুষে নষ্ট করে দিয়েছে। পৃথিবীতে কোনো ওরাল স্টেজ নেই। এই বয়সে প্রথম দাঁত উঠছে বলে
শিরশির করে। তখন সব মুখে দিয়ে চোষে। সেনসোডাইন। আর কেকপাখি বাবা বললে… ছৌ চিনিয়ে দেয় এই ব্যক্তিটি বাবা। এইভাবে বাচ্চারা
শেখে। সিগনিফায়ার সিগনিফায়েড ও লাঁকা প্রমাণিত হয়। প্রমাণিত হয় মানু মা’র নকল করে শব্দটি
বলল “টাটকা”। তার অর্থ সে জানে না। জানবে। অনেক পরে। এই জন্য কোনোদিনও তা রিয়াল হবে
না। সিম্বলিক থাকবে জানলে বা তার আগে ইমাগিনারি। এইভাবে আমার লাঁকা আমায় মানু বোঝালো।
আর ঠিক ১৮ মাসে মানু বলল “আমি”। হতবাক হয়ে গেলাম মিরর স্টেজের নিখুঁত রেপ্লিকা দেখে।
বাঙালি বাচ্চায় খেটে গেলেন তিনি। অথচ আমার
ভাষা তো ক্রিয়াভিত্তিক ছিল! ছৌ বলল, ইন্দো-ইরানিয়ান একরকম হতে বাধ্য। থোরি থোরি সি
ধাঁধাঁ লগতি হ্যাঁয়। শুধু এটা বুঝলাম যেভাবে দাবনা বাজিয়ে ওসব বাংলা ভাষায় খাটে না
বলে কেত মেরে এসেছি, মানুকে দেখে কাত হয়ে গেলাম!
#
#
#
- ফোকলা বুড়ি!
- তোমারো তো দাঁত নেই। আমি একাই কী ফোকলা নাকি!
- আমি তো দাঁতাল স্যার!
- তুমি টয়লেট স্যার।
- ল্যাটিন গার্ল জাহিরা।
- ব্যানানা স্যার তুমি।
- কাঁচকলা গার্ল জাহিরা।
- সজনী ও সজনী তোমার লাগিয়া! মন হবে গুঁড়া গুঁড়া!
- আমার স্কুলে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী পড়ে!
- জয় হিন্দ, জয় হিন্দ।
- প্রিয়াঙ্কা.গা. একটা সেলফি প্লিজ।
- স্যার তুমি আওয়ারা আছো।
- থ্যাংক ইউ।
- ওয়েল কাম।
ছৌ দেখা আলোয় বাবা, মায়াবতী আশ্রম ও মোনিকা মাঠে হাগে
আবহ ও আমায় কি গুলবাগিচার মালি পেয়েছেন জাতীয় রিফিউজালের চেষ্টা ও তোমার শুভবিবাহের
উপহার দিয়ে গেলাম – চলে গেলে খুলে দেখো “লাভ ইন দ্য টাইম অফ করোনা”।
- সবাই বল; জাহিরা… জাহিরা… জাহিরা …
- স্যার জাহিরা
- তো আমি কী করব!
- হেড ডাউন, পা আপ করলে, দেওয়াল বেয়ে উঠতে পারলে
অথবা ওই ছোট গর্তটা দিয়ে গলে যেতে পারলে একমাত্র তোকে পাশ করাবো!
স্যার আরবিনা চক চোষে।
- হ্যাঁ কেউ কেউ শিলনোড়াও চোষে। ওদের ডানপিটে বলে।
- খুশি আর পেন্সিল চিবিয়ো না।
- স্যার!
- বক্তব্য কী তোমার?
- স্যার আমার বিনুনি ধরে টানলো।
- তুমিও ওরটা টেনে দাও!
- স্যার ক্লাসে থুথু ফেলেছে!
- ভয়াবহ অপরাধ করেছ। এই ২ লিটার জলের
বোতল খেতে শুরু করো। থামলেই বাকি জলটা মাথায় ঢালা হবে!
আমি স্কুলে যাই এন্টারটেইন হতে, রিফ্রেশ
হতে। আমি ওদের খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড। কেউ কেউ আমায় প্রপোজ করে। আর কী করে যে ক্লাস টু’কে
বিনয় মজুমদার আর অবনীন্দ্রনাথ পড়াবো, আমি ১০ বছরেও বুঝলাম না।
- আমাদের অঙ্কে আছে রাম, রহিম ও অ্যান্টনি
একসঙ্গে একটি কাজ ৫ দিনে করে, তাহলে রাম আর রহিম দুজনে সেই কাজ কত দিনে করবে?
- করবে না স্যার, আগে খোঁজ নেবে অ্যান্টনি
কাজ করতে আসছে না কেন!
মি.মাসি.: জল দাও, পান দাও, চা দাও,
সিগারেট দাও, পড়া তো ভারী হচ্ছে!
- গুঁদ দাও, হিপ দাও, মাই দাও, ঠোঁট
দাও, স্মি দাও টপলেস, শুভস্মি দাও, ও.ওয়াই.ও, খপুষ্পী দাও, কিছু পাই অনুমানে, অন্তরঙ্গ
হলেই পালাই পালাই, ওহো আমার হতভাগ্যা ছৌ, ওর মুখ মনে পড়ে দেখেছি! তাই আমি র্যাঞ্চো,
রণ ছোড় দাস, কৃষ্ণ, যুদ্ধে কেস খেলে পলাতক, ২ লাখি দর দিয়ে বউ নিয়ে বাবু বেশ্যা খেলা,
পিছন ফিরে দেখবি একসময় জীবনের সব ভুল, দেখলাম লংটার্মে প্রতিটি অ্যাকশান আমার ভালোর
জন্য, সুতরাং শরণাগতি, হে অর্জুন, ত্রিগুণাত্মিকা প্রকৃতিই তোমাকে দিয়ে কর্ম করায়,
নদীর জলকে চাইলেই নদী থামাতে পারে না কারণ নদী তার জল চালায় না, জ্ঞান অসি দিয়ে প্রকৃতি
ফালা ফালা কাটো। কেননা বুদ্ধ উবাচ, বাসনাই দুঃখের মূল। একথা শুনেছি স্মি’র থেকে। মুহূর্তে
আমার স্মি শরীর শীতার্ত লাগলো! আর বেদান্ত আমায় শেখাল, কাম পাচ্ছে? তুমি বুঝচ্ছো? তাহলে
কাম আর তুমি আলাদা। কাম অবজেক্ট তুমি সাবজেক্ট। ব্যাস, এই এক থিওরি আমায় কতবার যে মাই
ডিয়ার লটারি জেতাল!
#
#
#
- ওর অনেক ডিগ্রী, ওর অনেক পরিচয়ের
মধ্যে ওর মাত্র তিনটে মনে পড়ছে… যেমন কীনা, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পরিচালক শার্লো, দ্বিতীয়
শার্লোই একটু ভেবে, থেমে, তৃতীয়ও শার্লোকেই বলতে হবে (ফ্রেঞ্চরা চার্লেস কে শার্লো
বলে, চ্যাপলিন)।
- তুই ওর বিষদাঁত এত ভালো চিনলি কী
করে? জিগরি দোস্ত ছিলি?
- আমি কম টক্সিক? বিষে বিষে বিষক্ষয়।
- সাপের ধর্ম ছোবলানো। কিন্তু কাছে
না গেলেই হল।
তা বলে দড়ি দেখে কেউ বলবে মালা, কেউ
বলবে টাই আর কেউ বলবে সাপ! তামসিক বুদ্ধি!
- তা দড়ি বস্তুটি তো নিষ্ক্রিয়, একক।
- সবই মায়া!
- না না, মনে ভয় না থাকলে কেউ দড়িতে
সাপ দেখে? নায়াত্মা বলহীনেন লভ্য।
- কিন্তু আগে থেকে দড়ির জ্ঞান না থাকলে
কী হবে?
- আমরা এই মুহূর্তে এই অবস্থাতেই মুক্ত।
শুদ্ধ চৈতন্যস্বরূপ। সেই vailing and projecting power of maya আমাদের চোখ ধাঁধিয়ে
রেখেছে। আবরণ শক্তি যা দড়িকে দড়ি বলে বুঝতে দিচ্ছে না আর বিক্ষেপ শক্তি যা দড়িকে মালা,
টাই, সাপ দেখেছে। মালা, টাই, সাপ – এ তিনের মধ্যে সত্যবস্তু কী? দড়ি। একটি টেবিল, একটি
চেয়ার, খাট, দরজা, জানলা – এর মধ্যে থেকে কাঠ বের করে নিলে কী থাকে? কিছুই থাকে না।
কাঠ এতকিছু হয়েছে, কিন্তু কাঠ কাঠই আছে।
চারটি মহাবাক্য।
প্রজ্ঞানাম ব্রহ্ম।
অহং ব্রহ্মাস্মি।
তত্ত্বমসি।
অয়ম আত্মা ব্রহ্ম।
লক্ষণার্থ বিচার করা হয়। চারটিরই এক
সূত্র। তুমি দ্য জীবাত্মা ইস ইক্যুয়ালস টু পরমাত্মা। তোমার চৈতন্যই বিশ্ব চৈতন্য! এতদমধ্যে
অহং ব্রহ্মাস্মি মিশনের সন্ন্যাস দীক্ষার মন্ত্র, মিশন সংশয়াতীতভাবে অদ্বৈত বেদান্তবাদী।
এবং মিশনের ভাইস প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে চিঠিচাপাটিও চলে। টুয়েন্টি নাইনে ২৭, চলে!
ব্রহ্ম ও শক্তি অভেদ। সাপ হল পাওয়ার।
শীতঘুমে খোলস ব্রহ্ম, ফণা তুললে প্রকৃতি। জল ব্রহ্ম, বরফ হলে সাকার। সূর্য মানেই আলো,
সূর্য মানেই তাপ। আলো তাপ ব্যতিরেকে সূর্য হয় না। এই গুণ হল নাম ও রূপ। একটি বস্তুর
নাম ও তার গুণ। কিন্তু ব্রহ্ম এঁটো হননি। তিনি ভাষার অতীত। তিনি সিগনিফায়ার ও সিগনিফায়েড
বদ্ধতার অতীত। তাই তিনি পাশ্চাত্য দর্শনের অতীত। তিনি সব প্রশ্ন, জিজ্ঞাসার অতীত। কিন্তু
তিনি কী বলা যায় না বটে, কিন্তু তিনি কী নন তা ভাবা যায়, তাই নেতি নেতি, তিনি যা যা
নন তাকে এলিমিনেট করতে করতে চলা। দড়ি সাপ নয়, টাই নয়, মালা নয় ইত্যাদি। অবশ্য এ ব্যাড
নেগেটিভ ইনফিনিটি অ্যাকরডিং টু হেগেল, ‘কুতুহল মোর এ জীবনের/ নিয়ে নে মা তোর ওই
চরণে/ মহানন্দে যাই চলে মা/ হয়ে সর্বরিপুজয়ী।’ হে সারস্বত অজগর ব্রত তোমাতে আশ্রয়
নিলাম। হে রিপুজয়ী পক্ষীব্রত, তোমাতে ভাসলাম। আর বুঝলাম আদিত্যই আদি দেবতা। আদিত্যই
চৈতন্য। একটি গঙ্গাজলের পাত্র, একটি মদভাণ্ড। দুটিতেই আদিত্য প্রতিবিম্বিত হচ্ছেন।
তা বলে মদপাত্রে আদিত্য কী দূষিত? না। চোখ তুলে দেখ। আমি সেই আদিত্যবর্ণ পুরুষকে দেখেছি।
আদিত্যবর্ণম মোহান্তম। তিনিই শিব। সূর্যদেবতা মানুষের মস্তিষ্ক পেকে ব্রহ্ম
হয়েছেন। মানুষের চিন্তনের সূক্ষ্মতার ইভলিউশান আছে। যতই মিথবাদীরা তাকে নিজের প্রয়োজনে
অস্বীকার করুন (তারা বলেন মিথ মেকিং ম্যান আর সাইন্টিফিক ম্যানের ইন্টালিজেন্স সমানই
ছিল!)। মানুষের সঙ্গে সঙ্গে তাই দেবতারও ইভলিউশান হয়। দৈবতত্ত্বেরও হয়। যা পরবর্তীকালের
সমাজের এথিক্সে আটকায়, দেবতার সেই গুণ অপসৃত হয়ে এক গুণহীন ঈশ্বরের ধারণা আসে যা সময়
ও স্থান নিরপেক্ষ। যত ধরনের জ্ঞান আছে, তার চরম একক। এই শব্দটি ব্রহ্ম আদতে ‘একক’।
ব্রহ্ম এক ও তার দ্বারা বিভাজ্য হইয়া মৌলিক হইলেন।
ও কী গো যাহা এক, যা পেলে বহুর কনফিউশন
দূর হয়? আগুন জ্বলছে, বাটি উত্তপ্ত হচ্ছে, দুধ ফুটছে। তা কী দুধের গুণ? তা কী বাটির
গুণ? না, মূলতত্ত্ব আগুন। একই বিদ্যুৎশক্তি হিটার চালাচ্ছে, এসি চালাচ্ছে। দুই বিপরীত
গুণ। উৎস? এক নিরবিচ্ছিন্ন ইলেকট্রন প্রবাহ। এভাবেই বিজ্ঞান সামান্যীকরণ করে। এবং গোটা
ধর্মতত্ত্বে একমাত্র বেদান্ত যা কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সঙ্গে একত্ব, সমত্ব বজায় রেখে
চলতে পারে। শুধু জড়ের নাম রূপকে যত সূক্ষ্মে যাবে সে আরো আরো নাম রূপ নিয়ে আসবে, তাও
সীমাহীন বহুত্ব! তাই নীরব নেতিতে এসো! এবং ঘটিটা, বাটিটাও ঈশ্বর। শুধু তার মধ্যে সূক্ষ্মপদার্থ
নেই যা চৈতন্যকে উদ্ভাসিত করে। বুঝতে অসুবিধা হলে ভাবো ঠাকুর সব হয়েছেন। ঠাকুরকে বিশ্বরূপে
কল্পনা করি। এই চৈতন্যই আগুন, সূর্য, ইলেকট্রিক; চৈতন্যের শক্তি ধার নিয়ে সব চলছে।
মঠের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুহিতানন্দজীকে
বললামঃ দেহ আত্মা আলাদা করব কীভাবে?
- ঠাকুরকে দেহের বাইরে ধ্যান করো!
ঠাকুর ছাড়া এদের জীবনে দ্বিতীয় কিছু
নেই। এভাবেই এনারা অদ্বৈত! এভাবেই এনারা বিশিষ্ট, এভাবেই দ্বৈত! ঠাকুরের কাজ করে কর্মী!
সত্যি সব কিছু পেতে এনারা সন্ন্যাসী হন! সব ছাড়তে নয়। গোটা নিউটাউনের কয়েক হাজার কোটি
টাকার সম্পদের পরিবর্তে আমি যদি মিশনের এক সামান্য ব্রহ্মচারী হতে পারতাম! জীবন অনুকূল
ছিল, এর থেকে অনুকূল হতে পারে না! বেটার লাক নেক্সট লাইফ অর্ঘ্য!
#
#
#
শব্দসমূহের
একক একাক্ষর ওঁকার। স্থাবর পদার্থ সকলের একক হিমালয়, নদীর একক গঙ্গা, বৃক্ষের একক
পিপুল, প্রাণীর একক সিংহ, অক্ষরের একক অ’কার,
সমাসের একক দ্বন্দ্ব, মন্ত্রের একক গায়ত্রী। ঋতুর একক বসন্ত, বারোমাসের একক অঘ্রাণ,
ক্রীড়াসমূহের একক জুয়া, বিদ্যাদের একক ব্রহ্মজ্ঞান।
এরূপ
একক হয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।
গীতার বিভূতিযোগে।
সেরূপে
আমার যৌনতার একক নিতম্ব।
অনুভূতির একক ক্ষমা।
ইন্দ্রিয়ের একক আলস্য, ঘুমের একক ১৪ ঘণ্টা। গ্রন্থের একক উপন্যাস। নেশার একক মদ্য।
দর্শনের একক মনঃসমীক্ষণ। ফুলের একক পলাশ। ব্যক্তিত্বের একক ঋত্বিক। নারীর একক
স্মি। ঈশ্বরের একক রামকৃষ্ণ।
না হলে বলো, তৈত্তিরিয় – তিতির পাখি,
মন্ডুক বা ব্যাঙ, শ্বেতাশ্বেতর – শ্বেত অশ্বেতর – সাদা গাধার উপনিষদ হয়! এমনকি আল্লা
উপনিষদও হয়। ঘুম আজকাল ন্যাচারালভাবে একবার চারটেয় ভাঙে। শুনি আজান হচ্ছে। এক রাউন্ড
জপ করে ঘুমিয়ে পড়ি। ব্রাহ্মমুহূর্তের রাগ আহির ভৈরব, বৈরাগী ভৈরব। ভৈরব প্রতিটি সতীপীঠের
রক্ষাকর্তা। আর এই একান্ন সতীপীঠ, শঙ্করের দ্বাদশ জ্যোতিলিঙ্গ, চার মঠ, আধ্যাত্মিকভাবে
ভারতের ভৌগোলিক একতার প্রাচীন সাক্ষী। বেদান্ত ইউনিটির… ইউনিটি ইন ডাইভারসিটির কথা
বলে, নট ইউনিফরমিটি!
- সুতরাং তাহলে দুটি বেদান্তভাষ্য।
ক্লাসিক্যাল শঙ্কর, অ্যাপ্লায়েড বিবেকানন্দ। এখানে উল্লেখ্য ফ্রয়েডের প্রভাব বিবেকানন্দের
পরবর্তী যুগের পাশ্চাত্যে। ক্ষতিকর প্রভাব। যাই হোক, যতই হোক, ধর্ম যে যুগপোযোগী করে
সেই যুগাবতার। তা শঙ্কর, তা নরেন্দ্রনাথ, ইয়ে মেধা কী মামলা হ্যায়। ইটস এ ওপেন অ্যান্ড
ব্রেন কেস! বৌদ্ধধর্মের প্রভাবে শঙ্করের সময় বেশ্যাও সন্ন্যাসিনী। বৌদ্ধধর্ম ঝাড়ফুক
তুকতাকে পর্যবসিত। আর বিবেকানন্দের সময়ে হাঁচি, কাশি, টিকটিকি, জাত, বর্ণ, অস্পৃশ্যতা,
কুসংস্কার, অশিক্ষার হিন্দুধর্ম। গরীব, না খেতে পাওয়া, অচ্ছুততা বিষম ব্যাধি, অহেতুক
কৃচ্ছসাধন, অর্থ অনর্থম ভাব, কর্মত্যাগ, খ্রীষ্ট ও মুসলিম আগ্রাসনে মৃতপ্রায় হিন্দুধর্ম।
তখন মানুষ সমকালীন বেদান্ত ও কুরুক্ষেত্রের কৃষ্ণকে ভুলে গেছে। তখন গীতার যুগোপযোগী
ব্যাখ্যা নিয়ে বিবেকানন্দ।
- আচ্ছা, সন্ন্যাসীর কাজ কী?
- পরচর্চা করা ও 555 খাওয়া!
- কী আবোলতাবোল বকছ?
- পরব্রহ্মচর্চা ও শঙ্করের ব্রহ্মসূত্রের 555টি
শ্লোকের স্মরণ, মনন, চিন্তন।
আর বুকে হাত রেখে বলো তো, ছোট্টবেলা
থেকে স্কুলে ১২ই জানুয়ারি পালন করে, র্যালি করে, “রাজনীতিবিদদের বিবেকানন্দের আদর্শ”
বলে বস্তুটি সস দিয়ে খায় না পটি করে? নিজের স্টাইলে নিজেকে প্রশ্ন করো, বিবেকানন্দের
আদর্শ কী? উনি আমার প্রকৃত শ্বশুর, কেননা আমার স্ত্রীর প্রকৃত পিতা তিনিই কিনা। তবে
রবীন্দ্রনাথের কথা, যে, তার সবই পজিটিভ, তেমন না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংগঠককে আপোষ
করতে হয়, ব্রহ্মজ্ঞানী বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন নেতা হলে কী দাঁড়ায়, এ একমাত্র তাঁকে দেখে
বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকার।
#
#
#
আমির খাঁ: উসে কুছ আতা হ্যায়! তিলক
কোমলে ভৈরবীও আছে।
তিলক কোমল
– দুর্গা – হংসধ্বনি – ভৈরবী। এর নাম দিয়েছি রিল্যাক্সেশন স্ট্রেস রিমুভাল থাট! কোমল
কোমল স্বর!
- হংসধ্বনি মানে তো, প্যাঁক প্যাঁক।
- আর রাজনীতি মানে পাঁক, পাঁক, জানো
তো! আই ডোন্ট বিলিভ ইন পাওয়ার পলিটিক্স!
- ছাড় ওর কথা, ও এখন মাল খেয়ে ফার্স্ট
সিটিজেন। ভালো, ভালো, তোর বই পানু হলে রিলিজ করবে।
- সিনেমাকে আর একবার বই বললে খাল খেঁচে
নেব!
অতঃপর খানোকিনন্দন, স্যাঁকাবীচি ইত্যাদি
সৃজনশীলতা। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ল ধীয়োযোনি প্রচোদয়াৎ-এ মলয়বাবুর ইন্ট্রোডাকশানটার কথা।
- এ কোন মলয়? হাংরি মলয়, পোস্টমডার্ন
মলয় নাকি ভীমিরতি বাঁহাতিয়া মলয়? যেই হও, কাউকে অপমান করতে এত বড় লেখা এক হাতে টাইপ
করার প্রয়োজনীয়তা আমার কখনও পড়বে না, এমনকী কারো প্রসংশা করতেও এত অতিরিক্ত পরিশ্রম
করতে আমি নারাজ।
- শুনেছি মাগী শব্দটা গালাগালি নয়।
মাগগি থেকে এসেছে। চাল মাগগি। বাড়ন্ত। মাগনা থেকে মাগা। মাগা স্ত্রীং মাগি। বুঝলে বেবীদা
গেছে, ছৌই এখন আমার অভিধান।
- বাবা, তাহলে তো শুয়োরের বাচ্চা পার্টস
অফ স্পিচ।
- সরস্বতীর বরপুত্র রাজশেখর। হরিচরণবাবু
শুধু খেটেই মরলেন। আর দেবপ্রসাদ স্যার ১৫ মিনিটের ঝড়ে আমায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কেন কলিম
খান না।
#
#
#
অর্ঘ্য, আপ কি আদালতে আপনার বিরুদ্ধে
অবাধভাবে বাক্যাংশ চুরি করার আরোপ লাগানো হচ্ছে। অবাধভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার কন্টেন্ট
চুরি করার অভিযোগ আছে।
- রেফারেন্স ব্যবহার তাহলে কীভাবে হতে
পারে? যদি কোনো কোট অবচেতনে অ্যাসিমিলেটেড হয় তো লেখার সময় মনে থাকে না কার কোট! ইহাই
স্বাভাবিক! সেইসূত্রে যাবতীয় মেধাবী পরিচালকদেরও দোষী করুন। গোদার কী করেন? যেখানে
সেখানে ক্লাসিকাল মিউজিক ব্যবহার করেন, যাবতীয় কবিদের কোটেবল কোটস ব্যবহার করেন, যদিচ্ছ
পেন্টিং ব্যবহার করেন, সংলাপও ধার করেন। তাহলে গোদার ও ঋত্বিক চোর! তারা তো নেম ড্রপ
করেন না।
দ্বিতীয়ত,
আমি নিরক্ষর এখন। গত দু বছরে আমি কোনো গোটা উপন্যাস পড়িনি। শুধুই সোশ্যাল মিডিয়া, তাতে
প্রেম ইত্যাদি। সুতরাং আমার লেখার কন্টেন্ট শুধু নয়, এই অসম্ভব দ্রুত আলটপকা এদিক ওদিক
কথাবার্তা, আবোল তাবোল… একে সোশাল মিডিয়া সার্ফিং বলে। সুতরাং ফর্মেও এটি সোশাল মিডিয়া
উপন্যাস।
- মানে, বলতে চাইছিলাম, শান্ত হোন।
শুধু কথা দিয়ে গল্প, উপন্যাস, সিনেমা কী হতে পারে? উইথ আউট স্টোরি, ক্যারাকটার, থিম
বা মিউজিক, পেন্টিং, পোয়েট্রি?
- জীবনানন্দ কী কাণ্ড করেছেন? শুধুই
পাতার পর পাতা, পাতার পর পাতা ডায়ালগ, মনোলগ। আমি শুধু তার ঐ পোঁদের কাপড় রাখা স্বামী-স্ত্রী
চরিত্র দুটি সরিয়ে দিলাম মাত্র। বরাবরই আমার স্টোরি টেলিং খুব খুব উইক। তাই বাধ্যত
আমায় প্রগল্প বা প্রবন্ধমূলক গল্প ফর্ম আবিষ্কার করে নিতে হয়েছে নিজের তাগিদে। আর শুধু
ওগুলো নয়। কথা বা শব্দ ছাড়াই তো থিয়েটার সিনেমা হচ্ছে। পূর্ণদৈর্ঘ্যের সিনেমা। শুধু
ইমেজারি। আনচিয়েন আন্দালৌ। স্বপ্ন সিনেমা বানাচ্ছে। কে অথর, কে পেন্টার, কে পরিচালক!
অথবা অনেক জমানো ব্যথা, বেদনা দিয়ে একটা বিস্ফোরণ করে দাও। ব্রেথলেস দেখে মন বলছে না,
তুমিও ডিরেক্টর হতে পারো? সত্যজিতের ডকু ডাকছে না, আয় আয়, রামায়ণ নিয়ে ভিজ্যুয়াল কিছু
কর!
#
#
#
কী যে করি-করছি-নিয়মিত
হাওড়া-শিয়ালদা; গুঁদঘাট মিনি-হাইলন্ড পার্ক-এইসব কলকাতা চিনি না। সবাই কেমন ডিগ্রেডেড হয়ে গেছে কলকাতার
ঐতিহাসিক যৌন দর্শনীয়গুলি। সোনাগাছিতে ফুটপাথ জুড়ে মোবাইলের দোকান, রেস্টুরেন্ট, ফুটপাতে
পসার জমিয়ে আর কোনও পসারিণী নেই, অপারেশন ভোগবাদ! সেন্ট্রাল পার্ক খাঁ খাঁ করছে, অযত্নে
যেন জং ধরে গেছে তার লিঙ্গে! স্রেফ বোকাচোদা হয়ে গেছে কলকাতা-তার বর্তমান কখনও গৌরবের ইতিহাস, ঐতিহাসিক হবে না-আলসে পলিটিক্যালি
নাম্ব-পলিটিক্যালি অটিস্টিক...এইসব নবোদিত দ্বীপজ কলকাতাবাসী-ভূগোলকে ধ্বংস করছে,
ভৌগোলিক সম্পদ হরণ করছে-এদের শৃঙ্খল, পিৎজা ও পলিটিক্যাল কারেক্টনেস ছাড়া হারানোর কিছু
নেই-কিসুই নেই-মিমিক্রি করছ! সত্যিই একদিন দেখবে ভ্যানিশ-কলকাতা পালাতেছে নড়িতে
নড়িতে-
মূলত চায়ের দোকানের যে ভাষা আমি শুনেছি
রোদ্দুর রায় তার কাছে শিশু। বো বো কা কা, চো চো দা দা, কোবাচোদা সাকাবোন সাদাচোন। ইত্যাদি
বরানগর মিশনের পেটেন্ট নেওয়া সান ভাষা। চোকাবোদা। তো কী? আফটার অল এলিট! আফটার অল ফিগার।
চায়ের দোকান অ্যানোনিমাস। নিম্নবর্গের খিস্তিমাতের খেলা – Slanguage শব্দটি রিডিসকভার
করি। একজন বলেছিল, মহাদেশ আবিষ্কার করেছে। আমি বলতে চাই রোদ্দুর রায় প্রসঙ্গে। তার
হাতে এত স্বাধীনতা সত্ত্বেও একটি অল্টারনেটিভ আন্দোলন হয়ে যাচ্ছে না কেন? কারণ চায়ের
দোকানে রোদ্দুর রায়ের ঠাকুর্দারা বসে আছে। তিনি না এলিট, না সাবঅলটার্ন। জাষ্ট একটি
সোশ্যাল মিডিয়া ফোনোমেনন। একটি ক্লিশে avatar!
আমি স্থানিক, আমি আত্মজৈবনিক। আমি অকাল্পনিক,
আমিই ধর্মগ্রন্থ—আমি মধ্যপন্থী, আমি সত্যনিষ্ঠ, আমি
গল্প গদ্য নয়—লেখা লিখি, জাস্ট একটা লেখা—আমার বিষয় ডানলপ, আবার বিষয় চায়ের দোকান, আবার
সেই নার্সিসাস সার্থক নামনাদ, আমি আজন্ম
আদিরসাত্মক...
সাবঅলটার্নদের মুখের ভাষার প্রধান
যে লক্ষণ লক্ষ করি তা হল—they
are very much rhythmic, ছড়ার
মতন, শিশুদের মতন। তাদের গালাগালি, সাংকেতিক
ইঙ্গিত, তাদের নিজেদের মধ্যে কমিউনিকেট করার শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করার কয়েনেজ সবই
অন্তমিলগত, রাগিণীসুলভ
সুরবিশিষ্ট এবং
সন্ধ্যাভাষার মতো বহুব্যঞ্জক বহু অর্থ দ্যোতনাময়। তাদের দৈনন্দিনের কথাবার্তা সুষম ছন্দোবদ্ধ এবং শুধু তাই নয়,
বিশেষ বিশেষ সাংকেতিক এক্সপ্রেশন,
খিস্তি, শব্দবন্ধ
ইত্যাদি দেওয়ার সময় এদের চোখ, হাত, আঙুলসহ বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দৈহিক জেসচারও ছন্দোবদ্ধ ও সুনির্দিষ্ট নিয়মে বাঁধা। যেন
স্বরলিপি। যেন কেউ এর অঘোষিত নিয়ম নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। যেন কোনো লোকঐতিহ্যমণ্ডিত
শিল্পকলা এটি। এমনই নাগরিক স্বভাব কবিয়ালিত্বে আশ্চর্য হয়ে যাই।
যৌনউত্তেজনাই সর্বাপেক্ষা বড়ো
শক্তি। সেই শক্তিকে কাজে
লাগানো যায় ক্রীতদাসের মতো কিন্তু কখনও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। যৌন শক্তি ঈশ্বর পাওয়ার
অন্যতম বড় হাতিয়ার। তা ওসো পন্থায় নয়, রামকৃষ্ণ পন্থায়। তুমিও বুঝবে। যৌনতা নিয়ন্ত্রণে
এলে দেখবে চারপাশে এত নারী যে হাঁপিয়ে উঠতে হয়!
#
#
#
যৌনভিক্ষা
আমার এক সিউডো ইন্টেলেকচুয়াল গাণ্ডু
একদিন এসে বলল,
- আই সাপোর্ট LGTV!
- হ্যাঁ, তো LGBT ফুল ফর্ম কি?
- লেসবিয়ান, গে…
- তারপর? B T?
- আরে ইয়ার, বহুত সারে লেসবিয়ান অউর গে।
- একটু যৌনভিক্ষা দেবেন দাদা?
বহুদিন, বহুদিন যৌনতা পাইনি, বড় অনটন, একটু, সামান্য, যা আপনার সামর্থে কুলোয়,
যৌনভিক্ষা দিন না দাদা...
- যৌনভিক্ষা দিন গো দিদি, বালবাচ্চা
আচ্ছা রহেগা, ভালো বিয়ে হবে, আল্লা কি নাম পে একটু উপুড় করে যৌনভিক্ষা দিন,
আপনাদের মতো উচ্চশিক্ষিত বাত্তিওয়ালা এনলাইটেন্ড সমাজ যদি "যৌনাঙ্গ বাড়িয়ে
দিলে আমরা কি ভয় পেয়ে যাব" বলেন, তবে সেই আবর্তেই শৃঙ্খলিত ট্যাবুময় আপনারা,
প্লিজ অল্প যৌনপান পিয়াসী, বড় তৃষ্ণা মেটান গো দিদি, যৌনভিক্ষা দিন...
- খোকাবাবু টুকটুকে গো, তুমি ছাড়া আর
কাকে বলি বলো গোপাল... ভালো হবে, অনেক উঁচুতে উঠবে, যৌনভিক্ষা দাও গো, অন্তত বছরে
১০০ দিন এর জন্য আন্দোলন কর, মোমবাত্তি জ্বালাও, মদনজ্বালা আর সয় না গো, অথর্ব
প্রতিক্রিয়া মস্তিষ্কে আর কোথায় যাই, কিভাবে থাকি...দেখে যাও কর্তা, তোমরা দয়া করো
গো, ভিক্ষা দাও, দরাজ হাতে উপুড় করে যৌনভিক্ষা দাও। গলা তেষ্টায় ফেটে যায়, এক বুঁদ
যৌনপানি, এক দানা যৌনভাত, তোমাদের দয়া মায়া নেই গো বাবু, খোকা, বাপ আমার, দাও,
দাও, দাও, দাও গো...
ভারতবর্ষের পাবলিক ট্রান্সপোর্টে অবলীলায় চলেছে
এই যৌনভিক্ষা চাওয়া পাওয়া বা ছিনিয়ে খাওয়ার খেলা। আমার লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল
ও ট্রানসজেণ্ডার—চার প্রকারেরই বন্ধু ছিল একসময়। এদের মনের কথা যৌনভিক্ষা দাও গো! সুতরাং
এই পোষ্টটি ফেসবুকে দেওয়ার পর ওরা হইহই করে ওঠে। এমনকি এই লেখাটি এদের একজন তার উপন্যাসে
পর্যন্ত ব্যবহার করেছিল!
আর
হয় হোমোগিরি। তা তো বাংলা মার্কেটে খুব প্রচলিত! খুব ভালো পোঁদ দিতে ও নিতে পারে। আর
হোমোফোবিয়া। মূলত আলুর দোষীরা। অনেক দেখলাম। শুধু কিছু শিখলাম না। অথচ লেখা পড়ে কেউ
বলবে!
একমাত্র কৃষ্ণ পুরুষ, আর সকলেই
নারী। সকলেই সখী
হলে তবে পুরুষ ভক্তেও নারীত্ব আরোপ হয়, ফলে উভলিঙ্গ হয়, যাহা তত্ত্বত জানা যায়।
বিরাট পুরুষের ভজনা করে বৈদান্তিক পুরুষই। পুরুষই পুরুষের ধ্যান করে- পুরুষ বলে
একমাত্র পুরুষই সত্য, প্রকৃতি নারী মিথ্যা-অর্থে নারী ছেড়ে পুরুষ কামনা করে বেড়ায়
অতিপুরুষকে। তবে অবতার ভক্তে যে-কোনো সম্পর্কে দেখি প্রচ্ছন্ন সমকামই। এবং
মহাকাব্যে ভুরিভুরি, সৃষ্টিতত্ত্বে উভলিঙ্গ উদাহরণ উভয়তই। ঈশ্বর স্বইচ্ছাময় হয়ে
ইচ্ছাময়ী জগৎ যখন সৃষ্টি করলেন আনন্দ আস্বাদনহেতু, তখন সে আনন্দকে আত্মমিথুনানন্দ
ছাড়া কীই বা বলব? আলেক কাম? আদি পুরুষের দেহ হতেই পুরুষের জন্ম-তো পুরুষে পুরুষ
শরীর মিলে যায়। ভক্ত হলে রাধা হলে চৈতন্য হলে সে বিকট আত্মনিগ্রহে যায়।
ব্রহ্মচর্যে নারীহীন ট্যাবুময়-কেন অমন করে? যাবতীয় যৌনশক্তিকে বিরাট পুরুষ ভজনেই
নিয়োগিত করার বাসনায় চৈতন্যাচ্ছন্নতা হয়। সে পুরুষ শুধু উদাস পুরুষেরই সঙ্গ চায়,
পুরুষ পুরুষে পুরুষে ঢেকে যায়।
এবং পুরুষের স্নান
সেল্ফ হিপনোটিক স্বমিথুন করে।
বক্ষাকাশ, জঙ্গলশরীর, উদরসাগরে প্রাকৃতিক ধাতুবৃষ্টি কাদা কাদা করে দিলে আদিম আদিম
ব্যঞ্জনা হয়। তবে স্নানাগারে যায়। মৃতেঞ্জোদারোর স্নানাগার মনে হয় কাজের পর এই
উঠে যাওয়ার প্রবল প্রযত্ন। ক্রমশ চুল ভেজে, বালী হয়; গ্রীবায় জল আসে, সুগ্রীব হয়;
কণ্ঠায় আসে, নীলকণ্ঠ হয়; হনুতে হনুমান হয়, বক্ষ ভেজে-সাহারায় হড়কার স্নেহ; উদর
ভেজে, আদ্যা হয়; নাভি সীতা হয়; জঙ্ঘা জঙঘুমুনি, পুরুষের নিতম্বসৌন্দর্য নিয়ে একটা
উপন্যাস হয়ে যাক-শরীর বেয়ে নদী বয়ে যায়, নাড়ীর টানে এ শরীর সদাশিব হয়। পুরুষ স্নান
করে সঙ্গোমত্তর। ভেজে সাতমহলা, ভেজে হাতি, ঘোড়া, মকর, সর্প; ভেজে ব্রহ্মা ইন্দ্র
রুদ্র; চাঁদপুরুষের শরীরে বয় গঙ্গা, যমুনা, ওঁ সরস্বতী তম প্রসিদ-চার সমুদ্রের জল
বয়ে যায় নস নস মে। ত্বকে ত্বকে ধান ধান লোম লোম খেত। এ শস্যক্ষেত্রে তবে সেচ হয়
পুরুষের স্নানে-সোনা সোনা ধানের খামার। শীত এসে নষ্ট করে দিয়ে গেলে পরবর্তী গ্রীষ্মে
যা যা ধান, যা যা নদী, যা যা দেবদেবী সব পুনরাবৃত্ত হয়ে গোমুখ আবারও নেমে আসে সাগর
সঙ্গমে-এইভাবে জলের মতো অসংযমী ব্যবহারে সরস্বতীও শুকিয়ে যায়।
#
#
#
ছৌরভ ভালো সাজেশন দিয়েছিল। বলেছিল তোর
আগের ফেজগুলোকেও উপন্যাসে খুব কম করে হলেও আনিস। কোলাজ আকারে। তাতে তোকে পুরো চেনা
যাবে, শুধুই এই সফিস্টিকেটেড বৈদান্তিক বকসীকে নয়, সেই বুলটাই যে ধ্বংসের গঠনমূলক পথ
ডিনামাইট দিয়ে বানিয়ে সবাইকে লিড করেছিল, অথচ তাকে সবাই শেরপা বলেই ডাকত! তোর এই অবাক
ট্রান্সফরমেশন অভ্যন্তরীণ পূর্ণ ধাঁধিয়ে দিক তোর অতীতদের।
#
#
#
- ব্রহ্মচর্য কী?
- ব্রহ্মকে চারণ করা। ব্রহ্মে স্থিতি, ব্রহ্ম আচরণ
ব্রহ্মচর্য।
- এতে দেহশুদ্ধি হয়, চিত্তশুদ্ধি হয় জপ। প্রার্থনায়।
প্রেমে।
- প্রেম তো আসে না! ভীষণ ইগনোর করে, কথাই বলে না!
- বউকে বাচ্চাকে মা’কে প্রেমিকাকে ভালোবাসো
না? স্কুলের বাচ্চাদের ভালোবাসো না? ধায় যদি মোর সকল ভালোবাসা শুধু তার পানে, তবে কতো
কত্তো ভালোবাসা ভাবো! তার পরেও সাধ্য কিবা তাকে প্রেমে ধরতে! তিনি আপনি না বাঁধা পরলে?
- “তস্য বহাম্ অহম্।” আমি আমার শরণাগতকে
বহন করি। লিটারালি। কাঁধে করে। কোইনসিডেন্সে হতবাক হতে হতে আর হই না। গেম কে যেন আগেই
চেঞ্জ করে দেয়। অর্জুন দেখতেন, তার রথের আগে আগে কাল শত্রুহত্যা করতে করতে চলেছেন,
পার্থ নিমিত্তমাত্র হয়ে তীর ছুঁড়তেন।
- সাধুকে অনুসরণ করার নাম সাধুসঙ্গ
– সাধু সঙ্গীত।
সাইকোসিসে ভেবেছিলাম একটি মিশনের ব্রহ্মচারীর
সান্নিধ্য পেলেই জীবন ধন্য হবে ঠাকুর। এখন ফেসবুকে ১৫ এর অধিক সন্ন্যাসী বন্ধু। এবং
তারা সকলে একই প্রশ্নের একই উত্তর দেন। আমি অবাক হয়ে ভাবি রামকৃষ্ণ মিশনের ডিসিপ্লিন।
বিবেকানন্দকে ভারতের শ্রেষ্ঠতম সংগঠক ভাবতে ভালো লাগে। আর দেবাদাকে খচাতে ভালো লাগে
এটা বলেই। শূন্য দশকের বটবৃক্ষ দেবাঞ্জন। আমরা ওয়ার্মরা তার আশ্রয়ে আজো মাটির গভীরে
দেশ-দ্রোহিতার সঞ্চিত সুধা আস্বাদন করি। লাভ ইউ বৈখরী। অন্নপূর্ণা মন্দিরে আমার ফিয়ান্স
বলল, কোথায় কোথায় লেখেন? বললাম, আমাদের ম্যাগাজিন প্রতিষেধক। আর লিখি বৈখরীভাষ্যে।
ও বলল, আমার ফিয়ান্স, বর্তমান স্ত্রী অতীতে বলেছিল, বৈখরী মানে জানেন? বললাম, পরা পশ্যন্তি
মধ্যমা বৈখরী বাক। শিশু, শব্দহীন অবচেতন পরা; শ্রবণ পশ্যন্তি, মধ্যমা তার মাতৃচেতনা,
বৈখরী তার মা অস্তিত্ব, বাক – তার মা ডাক। আমার মেয়ে অবশ্য প্রথম বলেছিল, বাবা। ও দিনরাত
বাবা, বাবা জপ করে। আমায় দেখলে ঠোঁট ফুলিয়ে সবার নামে নালিশ করে। এবং আমি কন্যাস্তিত্ব
পূর্ব সময়ে তিনবার সুইসাইড অ্যাটেমট নিয়েছি। আর কেনা জানে, কাফকা, কামু এতে ইন্ধন জোগান।
বর্তমানে আমার কোনো স্মিস্মৃতি নেই, সুতরাং স্ত্রী কন্যা পিতা মাতা নিয়ে টেস্টে ১০০
বলে ১ রানের দ্রাবিড়ীয় মজবুত বৈদান্তিক ডিফেন্সের স্বপ্ন দেখি।
#
#
#
মঠের দ্বাদশ অধ্যক্ষ ভূতেশানন্দজীকে
আধুনিক যুগে ব্রহ্মজ্ঞানী মানা হত। আমার বাবা মা, তাঁর দীক্ষিত। জ্ঞানেরও চরম, ভক্তিরও
চরম, সদাকৌতুকময় সদাহাস্যময় জীবন্মুক্ত সন্ন্যাসী।
তাঁকে একদিন প্রশ্ন করা হয়:
- মহারাজ, অপেরোক্ষ অনুভূতি হলে মানুষ কী দেখে?
মহর্ষি কহিলা ধীরে, আর কে দেখে!!!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন