কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১২৪

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১২৪

রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৫

অপরাহ্ণ সুসমিতো

কোকাকলা

আপনার কোকাকলা খাবার দৃশ্যটা খুব সুন্দরআমি অপেক্ষা করে ছিলাম আপনি কোক খেয়ে ঢেকুর তোলেন কিনা। ওমা তুললেন না! আমার তো বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা হয়

আমার সাহস হয় না, আপনাকে জিজ্ঞেস করি, কোকাকলা পান করবার পদ্ধতি
একবার আপনার সাথে দূরপাল্লার যাত্রায় আমার খুব খিদে পাওয়ায় আমি বাসের  জানালা দিয়ে নরসিংদীর সাগরকলা কিনলাম

আপনি আমার কলা খাবার দৃশ্যে খুব বিরক্ত হলেন


আপনি আমাকে অবাক করে বললেন : শুনুন কলা কখনো বাইরে খেতে হয় না। অশোভন


জন্মের পর প্রথম জানলাম যে, কখনো কোনো মেয়ের সামনে কলা খেতে হয় না


আপনি খুব ভালো ছাত্রী, আমি একদম না। সারাজীবন আমার রেজাল্ট খারাপ। আমার বড়বোন তার বান্ধবীদের সামনে আমাকে দেখিয়ে বলতেন : আমাদের ফ্যামিলি'র সবচেয়ে অকর্মা


মন খারাপ করতাম না একদম। আমার মন খারাপ হয় না


আমি যখন আপনার সাথে ভর্তি হলাম কোনো রকমে, কখনো সামনের সারিতে বসতাম না
আপনি খুব মন দিয়ে ক্লাস করতেন, মাথা গুঁজে নোট লিখতেনআমি দেখতাম লাস্ট বেঞ্চে বসে যে, আপনি আমাদের সেই স্যারটার দিকে কী রকম মুগ্ধ  হয়ে তাকিয়ে থাকতেনস্যারটার মাথাটা শরীরের চেয়ে ছোট বলে আমরা সবাই  ইলিশ মাছ ডাকতামস্যারকে আমার ঈর্ষা হতো খুব

রোদের মাঝে হাঁটতে ভালোবাসতাম আমি
আপনি কালো হয়ে যাবেন বলে রোদে হাঁটেন না। আমি একাকী রোদে হেঁটে হেঁটে কত কী ভাবতাম ‘আউটসাইডার’এর চরিত্রটার মতোইলিশ মাছের মাথা সমৃদ্ধ স্যারটার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে স্বপ্নে আমি টিচার বনে যেতামছাত্র ছাত্রীরা আমার ক্লাসে মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছে। আপনিও

আচমকা ২৫শে মার্চ নেমে এলে আপনারা কোথায় যে হারিয়ে গেলেন! আমাদের যুদ্ধ  হলো
কত রক্ত মৃত্যু আমাদের দেশটাকে ধুয়ে দিয়ে গেল বাংলাদেশ হলো।

আমি সেই যে ২৫টা গোলাপ নিয়ে আপনার জন্য দাঁড়িয়ে আছি এখনো
আপনার সাথে দেখা হলে বলব : আমি এখন শোভন করে কোকাকলা খেতে পারি। প্রকাশ্যে কলা আর খাই না আপনার জন্য ২৫ লাইনের একটা কবিতা লিখে বুক পকেটে নিয়ে স্বাধীন ঘুরছি...


2 কমেন্টস্: