কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৫

হাসান ইমতি

অমীমাংসিত
গন্তব্যহীন পথে বহু কার্তুজ বিকেল কাটিয়ে
অবশেষে সময় ফিরেছে নিজ বাসভূমে,
অন্তর্বাসের অস্বস্তিকর কৃত্রিম বাঁধন খুলে
রাত্রিও তখন সবে একুশের তরুণী।

কিছুটা ফিচেল হাসি আর গদগদ খুনসুটির
সাথে নীরব ভাব বিনিময় হয়ে গেলে
ঠুনকো পবিত্রতার সব দোআঁশলা দাবী
উপেক্ষার প্রপঞ্চক ডানায় উড়িয়ে দিয়ে
মৃদু সমীরণ তখন অকুণ্ঠ চিত্তে ছুঁয়ে দিল
জমে থাকা পৌরুষের উত্থিত অহংকার।      

না মানে নিষেধ নয় আবার হ্যাঁ মানে আমন্ত্রণও নয়  
এমন একটি মাঝামাঝি চৌখুপীতে নিঃশেষিত
আমাদের একদার অসহ্য বিকেলগুলো সহসা
তীব্র প্রতিবাদে ঝরে গেল বৈরি বাতাসের উস্কানিতে।

আজ তুমি কাকে সুন্দরের পূজনীয় প্রতিমা বলবে বল
সেই আয়ত নয়নাকে যার জন্য নিবেদিত ছিল
তোমার জন্ম জন্মান্তরের সব বিষণ্ণ বিকেলের হাসি?
নাকি একরাতের প্রশ্রয়ে তোমার বিছানায় নিঃশেষিত
টাকিলার মদিরতা ভাগাভাগি করা এই উষ্ণ উর্বশীকে?

ভুল জলছবি
অপটু চিত্রকরের হাত কেঁপে জন্ম নিয়েছে এক ভুল জলছবি,  
আমাদের ভাগ্য সমর্পণের অচ্ছেদ্য বাঁধনে গাঁথা না থেকেও
সে ভুলে আমরা এসে গেছি একে অপরের হৃদয়ের কাছাকাছি,  
বিধিবদ্ধ দস্তাবেজের অভাবহেতু সামাজিক মঞ্জুরি কমিশনের  
সদয় স্বীকৃতি পায়নি সময়ের বন্দরে আলগোছে নোঙ্গর করা
আমাদের স্বল্পদৈর্ঘ্য কুল গোত্রহীন সম্পর্কের নবায়ন ছাড়পত্র,
অঙ্কুরিত তুমি সেই থেকে দণ্ডিত হয়ে আছ যন্ত্রণার নীল মলাটে,
পরিত্যক্ত আমি আশ্রিত হয়ে আছি বাতিল ইতিহাসের সিলেবাসে,  
সম্পর্কের আলো আসার পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে আছে  সভ্যতা।  

এরপর জীবনের ষড়যন্ত্রে একদিন মানুষেরা বেমালুম ভুলে গেছে  
সেদিনের ফেলে আসা যৌবনের ভরা যমুনা বড় বাড়ন্ত ছিল,  
কালো চুলের সে কিশোরী মেঘনা আমার বাল্যের প্রেয়সী ছিল,
অশুদ্ধ পৌরুষের নীল খাজুরাহ দংশনের শাপ খুবলে নিয়েছে
রজঃস্বলা ষোড়শী কুশিয়ারার ভালো থাকার একলার আকাশ,  
আজ রুদ্রাণী পদ্মার অস্থির বুক জুড়ে শুধু কুল ভাঙনের অভিশাপ,  
ভালোবাসার শেষ অঙ্গীকার শুয়ে আছে বিশ্বাসের অন্তিম চাদরে,  
নিয়মের পাশবালিশ পারেনি রুখতে অনিবার্য পতনের বিধিলিপি।

বনসাই রাজকন্যা
তোমার করতল ছুঁয়ে যে নদী সাগরে নেমেছে,
সে তো তোমার স্পর্শকেও বুকে নিয়ে গেছে।
আমি সাগরকে ছুঁয়ে তাই ছুঁয়েছি পাহাড়কেও,
নদী, মেঘ বৃষ্টিকে ছুঁয়েছি, ছুঁয়েছি তোমাকেও।

তোমার বাঁধভাঙ্গা হাঁসি যে বাতাসে মিশেছে  
সে বাতাসও তো তোমার খুশিতে হেসেছে।
সে বাতাসকে ছুঁয়ে আমি ছুঁয়েছি জীবনকেও,
ছোটখাট মানবিক খুনসুটিকে, ছুঁয়েছি তোমাকেও।

তোমাকে যে ছুঁয়েছে মানবিক গভীরতায় সে
কি কভু নিঃসঙ্গ হতে পারে বনসাই রাজকন্যা?

তোমার হাসিতে যে কষ্ট ভুলেছে সে কি কভু
সুদূরের অচিন মানুষ হয় বনসাই রাজকন্যা?













0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন