কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৫

সোনালি বেগম

সাইমা-উসমা-র বজরঙ্গি-ভাইজান

উত্তর প্রদেশের রামপুর থেকে আবিদচাচা সপরিবারে এসেছে দিল্লিআশি বছরের আবিদচাচার চশমার কাচ আর কোঁচকানো চর্মাবৃত হাত নিখুঁতভাবে ঘুড়ির কাগজ  কাটতে থাকেদুই মেয়ে সাইমা আর উসমা আব্বুর মতোই ঘুড়ি বানাতে একদম দক্ষ কারিগর

‘জওহারলাল নেহেরুজি জব্ পরধান মন্ত্রী থে মেরে আব্বু উস্ ওয়াক্ত বহুত মসহুর পতংগ বানানেওয়ালে থে’ আবিদচাচার চোখে মুখে উজ্জ্বল আভাঘরের মধ্যে বেশ একটা আনন্দলহরী বেজে উঠল যেনপুরো পরিবার হিন্দিভাষী, যদিও সাইমা উসমা দু’বোন অল্প-সল্প ইংরেজি ও বাংলাতেও কথা বলতে পারে

‘প্রতি বছর জানুয়ারী মাসে রাজস্থানের জয়পুরে আমাদের যাওয়া বেশ আনন্দের বসন্ত পঞ্চমী উৎসবে রঙ বেরঙের ঘুড়ি ওরে আকাশে’ - সাইমা বেশ গর্বের সঙ্গে কাঁধ ঝাঁকালো।  
‘হাঁ বেটাদিল্লি মেঁ তো জুন সে লেকর অগাস্ত তক হর সাল রহনা হমেঁ বহুত আচ্ছা লগতে হ্যায় 
‘স্বাধীনতা দিবসে ঘুড়ির খেলায় রাজধানী মেতে ওঠে’ 
‘প্রতিটা ঘুড়িতে তিন টাকা খরচ হয়। পাঁচ টাকায় সেটা বিক্রি হয়আব্বু, আর একটু দাম বাড়িয়ে দিও’ - উসমার কণ্ঠে অনুযোগ 
‘আবার ঘুড়ি-বিক্রেতা সেই এক একটি ঘুড়ি পঁচিশ টাকায় বিক্রি করে’ - সাইমার চোখে প্রশ্ন

ছোট্ট একটি কামরা ভাড়া নিয়েছে ওরা। স্পষ্ট দারিদ্র্যেও ম্যাজিকাল সুখসৃষ্টি হতে থাকে  এখানে
আবিদচাচা জায়নামাজের মাদুর বিছিয়ে নেয় ‘নামাজ কা ওয়াক্ত হো গ্যায়া হ্যায়। নামাজ আদা করোকাম কো প্যার করনা শিখো, আউর ও তো তুমহারে পাস হ্যায় হি’ 
‘বড়ি আপু, আব্বু ঘুড়িকে ফাইটার বলে ডাকে’ 
‘আমি বলব যে আব্বু নিজেই একজন রিয়াল ফাইটার’ 

মোহন গুপ্তার দোকান ‘মোহন পতংগ সেন্টার’-এ কিছু ঘুড়ি দিয়ে আসে আবিদচাচাএবছরের বিশেষ আকর্ষণ মোদি-ওবামা ঘুড়িআবার বজরঙ্গি-ভাইজান খুবই জনপ্রিয় ঘুড়িবাচ্চাদের বিশেষ পছন্দ কার্টুন ক্যারেক্টার সহ রঙিন ঘুড়িও আছে
‘আজকাল মানঝা মেঁ স্পেশাল কোটিং হোতে হ্যাঁয়উসমে কোঈ মেটাল ইয়া গ্লাস কে কোটিং নহীঁ হোতে 
‘হ্যাঁ আব্বু, ব্যাংগালোরের যমুনা-ইন্ডাস্ট্রিস-লিমিটেড জার্মান-টেকনোলজি ব্যবহার করে এই বিশেষ ধরনের মানঝা তৈরি করেছে’ 
‘একদম গোপনতত্ত্ব’ - উসমা যোগ করে

আম্মু গরম গরম রুটি আর তড়কা নিয়ে আসেবিবর্ণ দসতরখান বিছিয়ে চারজন মিলে খেতে বসে। মোবাইল বেজে ওঠে তখনসাইমা আর উসমা উষ্ণতর আবেগে মোবাইলে কান রাখে আর দেওয়ালে সাজানো নতুন ঘুড়িগুলো নীল আকাশে ওড়ার  জন্য ছটফট করে ওঠে...              
 
                     













0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন