এঁরা কারা?
সম্ভবতঃ ১৯৬৭ সালে একটা বাংলা ছবি এলো এই
উপরের নামে। সমাজের কায়েমি শক্তিদের আসল চেহারা তুলে ধরতে। ‘এঁরা কারা?’ নামের সে
ছবি বেশিদিন চলেনি। লেখার নামটা সেখান থেকেই নিলাম। কারণ এখানেও কায়েমি ধারণার
সঙ্গে একটু লড়াই আছে। মহালয়া গেল। এ লেখা যখন বেরোবে (যদি আদৌ বেরোয়) তখন দুর্গা এসে গেছেন, ঘোষিতভাবে বাঙালির
(আসলে বাঙালি হিন্দুর) প্রধান পুজো ও উৎসব
ঘটাতে। সচেতন ধর্মনিরপেক্ষরা একে শারদোৎসব হিসেবে পালন করতে চাইছেন। যদিও
তাঁদের মনেও রবীন্দ্রনাথের শারদোৎসবের শারদা আর সারদা মাঝে মাঝে গুলিয়েও যাচ্ছে। তো, এই গোলানো নিয়েই এবারের কথনবিশ্বের
ইস্পিচ! দুর্গাপুজোর দুর্গা কে? কে এই মহিলা যিনি চার ছেলেমেয়ে আর একটা হাঁস, পেঁচা,
ময়ূর, ইঁদুর, মহিষ ও ষাঁড়ের মিনি সার্কাস
পার্টি নিয়ে প্রতি শরৎকালে বাপের বাড়িতে
হাজির হন? যাঁকে নিয়ে মেনকার মুখে এত আগমনী গান সে কত কাল ধরে’ বাঙালি মনকে মথিত
করছে! উমা উমা ডাকে কাকে ডাকেন মেনকা? পুরাণ পুরনো সব কথা প্রায়শঃই গোঁজামিলিয়ে
দেওয়ার জন্যই বিখ্যাত। তবুও তাতেও উমা দুর্গা নন। রামায়ণে তিনি মহাদেবের স্ত্রী।
তাঁর পিতা দেবতাত্মা হিমালয়। মাতা সুমেরুকন্যা মেনকা তথা মেনা। আগমনী গানে মেনা
যখন ডাকেন, ‘যাও যাও গিরি আনিতে গৌরী’, তখন সেই গানের উদ্দেশ্য হিমালয় পর্বতের
পাষাণ গলানো। বিধেয় উমাকে বছরকার দিনে বাপের বাড়ি আনা। অর্থাৎ গিরিজাই আসেন
ছেলেমেয়ে কোলে কাঁখে, সগৌরবে, বাপের বাড়ি, তিনটি দিনের তরে। তিনি কি দুর্গা? বোধহয়
না, ইনি তো পার্বতী। সেই পার্বতী যিনি গিরিরাজের গৃহে রাজার দুলালী হিসেবে
যত্নপালিত হয়েও এক ভ্যাগাবণ্ডকে পেতে চূড়ান্ত গ্রীষ্মে উষ্ণস্রোতে, কঠিন শীতে
ঠাণ্ডা জলে গা ডুবিয়ে শিবচিন্তা করে’, একবেলা খেয়ে, শেষে গলিত পত্র পর্যন্ত না
খেয়ে বাজারে অপর্ণার বদনাম কিনে, আদেখলামি আর বিয়েপাগলামির শেষ করে ছাড়লেন! মেনাকে
পর্যন্ত বলতে হলো, ‘উ মা তপ’, আর তাঁকে নাম দিতে হলো উমা! আগের জন্মে তিনিই ছিলেন দক্ষের মেয়ে সতী। দক্ষ হিমালয়ের মতো জামাইভক্ত
ছিলেন না। বাড়িতে যজ্ঞ করলেন অথচ
মেয়ে-জামাইকে দাওয়াতই দিলেন না। অনিমন্ত্রিত স্বয়মাগতা মেয়ের সামনেও এমন
অমরীশপুরীপনা করলেন যে রিজোয়ানুর কাণ্ডের চেয়েও বড় ঝামেলা হলো! অপমানিতা সতী
শিবনিন্দা শুনে দেহত্যাগই করে বসলেন। তারপর ‘দক্ষযজ্ঞ’ তথা ক্যাম্পাস ভায়োলেন্সের মতোন
ঘটনা ঘটল। শিবের
চেহারা যা হলো!
মহারুদ্ররূপে
মহাদেব সাজে। ভভম্ভম ভভম্বম শিঙ্গা ঘোর বাজে।।
লটাপট
জটাজুট সংঘট্ট গঙ্গা। ছলচ্ছল টলট্টল কলক্কল তরঙ্গা।।
ফণাফণ্
ফণাফণ্ ফণিফণ্ণ গাজে। দিনেশপ্রতাপে নিশানাথ সাজে।।
ধক্ধ্ধক্
ধক্ধ্ধক্ জ্বলে বহ্নি ভালে। ববম্বম্ ববম্বম্ মহাশব্দ গালে।।
দলমল দলমল
গলে মুণ্ডমালা। কটি কট্ট সদ্যোমরা হস্তিছালা।।
পচা
চর্ম্মঝুলি করে লোল ঝুলে। মহাঘোর আভা পিনাকে ত্রিশূলে।।
ধিয়া
তাধিয়া তাধিয়া ভূত নাচে। উলঙ্গী উলঙ্গে পিশাচী পিশাচে।।
সহস্র
সহস্র চলে ভূত দানা। হুহুঙ্কারে হাঁকে উড়ে সর্পবীণা।।
চলে ভৈরব
ভৈরবী নন্দী ভৃঙ্গী। মহাকাল বেতাল তাল ত্রিশৃঙ্গী।।
চলে
ডাকিনী যোগিনী ঘোর বেশে। চলে শাঁকিনী প্রেতিনী মুক্তকেশে।।
গিয়া
দক্ষযজ্ঞে সবে যজ্ঞ নাশে। কথা না সরে দক্ষরাজে তরাসে।।
অদূরে
মহারুদ্র ডাকে গভীরে। অরে রে অরে দক্ষ দে রে সতীরে।।
ভুজঙ্গপ্রয়াতে
কহে ভারতী দে। সতী দে সতী দে সতী দে সতী দে।।
এক্কথায় ‘রে সতি!
রে সতি! কান্দিল পশুপতি পাগল শিব প্রমথেশ’। সতীকে কাঁধে নিয়ে, তাঁর দুঃশীল সমাজের
অগ্রভাগে শিবুর হিস্টিরিক তাণ্ডব দেখে বিষ্ণু তো তাঁর চক্র দিয়ে সতীকে একান্ন
টুকরো করে’ ফেললেন, আর কের্মে কের্মে সেখানে এক এক পীঠে এক এক দেবী এলেন। সতীর
বিরহে শিব সব কটি পীঠে তপস্যা করলেন বলে সবেতেই একান্ন ভৈরব আর সতীর দেবাংশী
একান্ন দেবী! এঁদের কারুর নামে ডাইরেক্ট, ওনলি দুর্গা নেই। হিঙ্গুলাতে কোটারী (ব্রহ্মরন্ধ্র);
করবীরপুরে মহিষমর্দিনী (ত্রিনয়ন); জ্বালামুখীতে অম্বিকা (জিহ্বা); ভৈরবপর্বতে
অবন্তী (ঊর্ধ্ব ওষ্ঠ); অট্টহাসে ফুল্লরা (অধরোষ্ঠ); প্রভাসে চন্দ্রভাগা (উদর); জনস্থানে
ভ্রামরী (চিবুক); গোদাবরীতে বিশ্বমাতৃকা (বামগণ্ড); শুচীদেশে দন্তপংক্তিদেবী
নারায়ণী (ঊর্ধ্বদন্ত); গণ্ডকী নদীতে গণ্ডকী
(দক্ষিণ গণ্ড); করতোয়া তটে অপর্ণা (বামকল্প); শ্রীপর্বতে শ্রীসুন্দরী
(দক্ষিণ কল্প); কর্নাতে জয়দুর্গা (কর্ণদ্বয়); বৃন্দাবনে উমা (কেশপাশ); কিরীটে
কিরীটেশ্বরী (কিরীট); শ্রীহট্টে মহালক্ষ্মী (গ্রীবা); নলহাটিতে কালী (গলার নলী);
কাশ্মীরে ক্ষীরভবানী (কণ্ঠ); রত্নাবলীতে কুমারী (দক্ষিণ স্কন্ধ); মিথিলায় মহাদেবী
(বাম স্কন্ধ); চট্টগ্রামে ভবানী (দক্ষিণবাহু); মানসসরোবরে দ্রাক্ষায়নী ( দক্ষিণ
হস্তার্ধ); উজানীতে মঙ্গলচণ্ডী (কনুই); মণিবন্ধে গায়ত্রী (করগ্রন্থি); প্রয়াগে
ললিতা (দশ হস্তাঙ্গুলি); বাহুলায় বাহুলা (বামবাহু); জলন্ধরে ত্রিপুরমালিনী (এক
স্তন); চিত্রকুটে শিবানী (আরেক স্তন);
বৈদ্যনাথে জয়দুর্গা (হৃৎপিণ্ড); উৎকলে বিমলা (নাভি); কাঞ্চীদেশে দেবগর্ভা
(কঙ্কাল); কালমাধবে কালী (দক্ষিণ নিতম্ব); শোন নদে নর্মদা (বাম নিতম্ব);
কামাখ্যাতে কামাক্ষী (দেবীযোনি); নেপালে মহাশিরা (জানুদ্বয়); জয়ন্তীতে জয়ন্তী (বাম
জঙ্ঘা); মগধে সর্বানন্দকারিনী (দক্ষিণ জঙ্ঘা); ক্ষীরগ্রামে যোগাদ্যা (দক্ষিণ চরণের
অঙ্গুষ্ঠ); কালীঘাটে দক্ষিণ চরণের চার অঙ্গুলি (দক্ষিণাকালী); কুরুক্ষেত্রে
সাবিত্রী (বাম চরণের চার অঙ্গুলি); বক্রেশ্বরে
মহিষমর্দিনী (দেবীমন); যশোরে যশোরেশ্বরী (দেবীর পাণিপদ্ম); নন্দীপুরে নন্দিনী
(অস্থি); বারানসীতে বিশালাক্ষী (কুণ্ডল); কন্যাশ্রমে সর্বাণী (পৃষ্ঠদেশ); লঙ্কায়
ইন্দ্রাক্ষী (পায়ের নুপুর); বিরাটে অম্বিকা (পদাঙ্গুলি); ত্রিপুরায় ত্রিপুরেশ্বরী
(দক্ষিণ চরণ); বিতাসকে ভীমা (বাম চরণের গুল্ফ); ত্রিস্রোতায় ভ্রামরী (বাম চরণ);
সুগন্ধায় সুনন্দা (নাসিকা) ইত্যাদি। আমি যেখানে জন্মেছিলুম সেও বায়ান্নতম, লঘু
হলেও এক পীঠ, দুর্গার মালাইচাকি পড়েছিল! তাই নাম্না মেলাইচণ্ডী। কিন্তু অন্য
জায়গাতেও যাঁরা বিরাজমানা তাঁরা সতীদেহী। দুর্গা নন! কেন!
কেনোপনিষদে একটি
আখ্যানে আছে দেবাসুরের একটি যুদ্ধে অসুরদের উপর জয় পেয়ে দেবতারা যখন আনন্দে নৃত্য
করছেন, তখন এক জ্যোতির্ময়ী নারী নেমে এসে তাঁদের নৃত্যপরতার কারণ শুধোলে দেবতারা
নিজের শৌর্য ও পরাক্রম বর্ণনা করার পর তিনি তাঁদের তা দেখাতে বললেন।
বায়ু: আমি
পবনদেব! স্বর্গমর্ত্যরসাতলের সব কিছু ফুঁয়ে উড়িয়ে দিই!
জ্যোতির্ময়ী: প্রদর্শন করো! এই তৃণগুচ্ছ ওড়াও!
তৃণগুচ্ছ উড়িল না!
অগ্নি: আমি
হুতাশন। স্বর্গমর্ত্যরসাতলের সব কিছু দগ্ধ করি!
জ্যোতির্ময়ী:
প্রদর্শন করো! এই তৃণগুচ্ছ পোড়াও!
তৃণগুচ্ছ পুড়িল না!
বরুণ: আমি
জলদেব পর্জ্জন্য। স্বর্গমর্ত্যরসাতলের
সব কিছু সিক্ত, নিমজ্জিত করি!
জ্যোতির্ময়ী: প্রদর্শন
করো! এই তৃণগুচ্ছ ডোবাও!
তৃণগুচ্ছ ডুবিল
না!
ইন্দ্র:
আমি শক্র, মঘবা ইত্যাদি বীরদের পরাক্রমে বিখ্যাত ইন্দ্রপদের অধিকারী, বজ্রক্ষেপী
দেবরাজ। স্বর্গমর্ত্যরসাতলের সব কিছু ধ্বংস করি।
জ্যোতির্ময়ী:
প্রদর্শন করো! এই তৃণগুচ্ছ বিধ্বংস করো।
তৃণগুচ্ছ নড়িল না!
বাদবাকি
দেবতাদেরও একই হেনস্থা হওয়ার পর জ্যোতির্ময়ী তাঁদের ব্রহ্মজ্ঞান দিলেন। সেই
একোহবর্ণ, অদ্বৈত, অনাদি, নিরাকার দেবতাদের সকল শক্তির উৎস! জ্যোতির্ময়ী তাঁরই
প্রেরিতা শক্তিজ্যোতি। সেই জ্ঞানজ্যোতির মাধ্যমে একেশ্বরবাদ, বহুদৈববাদ মিলে গেল!
এঁকে বাপের বাড়ি আসা হিমালয়কন্যা বা দক্ষকন্যার সঙ্গে মেলানোর মতো ভুল বা বোকামি আর
হয়!
কিম্বা দেবী
ভাগবৎ, মার্কণ্ডেয় চণ্ডী অথবা কালিকাপুরাণ অনুযায়ী দুর্গা আদিশক্তি, বিশ্বের আদি
কারণ, পরমাপ্রকৃতি। ব্রহ্মার বরে অবধ্য মহিষাসুরকে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত ও নিধন
করার উপায় জানতে ব্রহ্মা স্বয়ং ও শিব যখন বাকি দেবতাদের নিয়ে বিষ্ণুর কাছে গেলেন,
তখন বিষ্ণু তাঁদের পরামর্শ দিলেন নিজ নিজ স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়ে নিজ নিজ স্ত্রীর তেজের কাছে প্রার্থনা
করতে হবে, যাতে তাঁদের সম্মিলিত তেজ থেকে
এক তেজোময়ী নারীর আবির্ভাব হয় যিনি এই মহিষাসুরকে বধ করতে পারেন! এই প্রার্থনা
থেকে যে জ্যোতির্ময়ীর আবির্ভাব হলো তাঁকে দেবতারা নিজের নিজের অস্ত্র দান করলেন!
এই মাতৃকাকেও শিবপত্নী বানানোর আর হিমালয়কন্যা বা দক্ষকন্যার সঙ্গে মেলানোর কোনো
যুক্তি বা প্রয়োজন নেই।
দুর্গা যদি ভেজাল
তবে ছেলেমেয়েরা? বাঁদিক থেকে ধরা যাক! ঋক বেদে শ্রী ও ঐশ্বর্যের দেবী একাই
লক্ষ্মী। তৈত্তিরীয় সংহিতায় শ্রী আর লক্ষ্মী আদিত্যের দুই স্ত্রী। আদিত্য কে, তা
অবশ্য স্পষ্ট নয়। আদিত্য শব্দে সাধারণতঃ সূর্য বোঝায়। সেই
অর্থে বারোজন আদিত্য হলেন দ্বাদশ সূর্য
বোঝায়। কিন্তু মতান্তরে বারোজন আদিত্য বলতে বারোটি মাসের দ্যোতক। আরো একটি মতে
আদিত্য দেবতাদের সাধারণ নাম। সে যাই হোক, শতপথ ব্রাহ্মণে শ্রী প্রজাপতি সম্ভূতা। রামায়ণ সহ অন্য পুরাণে লক্ষ্মী মহর্ষি
ভৃগুর ঔরসে আরেক দক্ষকন্যা খ্যাতির গর্ভে জন্মান আর নারায়ণের স্ত্রী হন। দুর্বাসার
অভিশাপে ইন্দ্রের স্বর্গ শ্রীহীন হলে’ লক্ষ্মী সমুদ্রে প্রবেশ করেন, আর সমুদ্রমন্থনের
সময় পুনরুদ্ভূতা হন! দক্ষের দৌহিত্রী হিসেবে তিনি ম্যাক্সিমাম দুর্গার বোনঝি! মেয়ে
হলেন কোথায়?
গণেশে গোলমাল কম।
কেবল এক পুরাণে আছে পার্বতীর দিব্য গাত্রমল থেকে গণেশের জন্ম হয়। ফলে তিনি শিবের
পুত্র না হতেও পারেন। অন্য সর্বত্র তিনি শিবপার্বতীর সন্তান। কিন্তু ডানদিকে এলে
গোলমাল অনেক বেশি। সরস্বতী তো কার্তিকের পরেই সবচেয়ে গোলমেলে! ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ
অনুযায়ী সৃষ্টিকালে ঈশ্বরাভিলাষে প্রধানা শক্তি যে পঞ্চভাগে বিভক্তা হন, তাঁদের
মধ্যে ছিলেন রাধা, পদ্মা, সাবিত্রী, দুর্গা ও সরস্বতী। ফলে এঁরা, দুর্গা ও
সরস্বতী, পরিষ্কার বোন। আর এখানেই সরস্বতী বিষ্ণুকণ্ঠ থেকে উদ্ভূতা, পূজিতা ও পরে
কামিতা ও বিবাহিতা। ফলে দুর্গা পরিবারে তিনি সন্তান নন। এবার কার্তিকে তো কেয়স! সপ্তর্ষিদের
পত্নীদের প্রতি অগ্নির গোপন কামের সুযোগ নিয়ে অগ্নির প্রতি কামনায় হিতাহিত
জ্ঞানশূন্য দক্ষকন্যা স্বাহা মহর্ষি অঙ্গিরার স্ত্রী শিবার রূপ গ্রহণ করে অগ্নির
সঙ্গে সহবাস করেন। একবারে কামনা প্রশমিত হয়নি। হবার কথাও নয়। শাস্ত্রেই বলে, ‘ন
যাতু কামঃ কামাণামুপভোগেন শাম্যতি।/ হবিষা কৃষ্ণবর্ত্ম ইব ভূয়া ইবভিবর্ধতে’। ফলে
স্বাহা অন্য পাঁচ মহর্ষিদের স্ত্রীদের রূপ নিয়ে আবার পাঁচবার অগ্নির সঙ্গে সহবাস করলেন। সপ্তমবার হলো না। কারণ বশিষ্ঠের স্ত্রী
অরুন্ধতীর তপোপ্রভাব পথ আটকালো! প্রত্যেকবারই তিনি অগ্নিশুক্র কাঞ্চনকুণ্ডে
নিক্ষেপ করলেন! ইনিই স্কন্দ বা কার্তিকেয়। ইনি পরে শিবের অনুচরী মাতৃকাদের
স্তন্যপান করেন! অন্য মতে, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে, কার্তিকেয় মহাদেবের ও পার্বতীর বিহারকালে
স্খলিত বীর্য থেকে উৎপন্ন হলেও সেই বীজ পড়েছিল পৃথিবীতে। ধরা তাকে ধারণ করতে না
পেরে অগ্নিতে নিক্ষেপ করেন। অগ্নি ফেলেন শরবনে। সেখানে তাঁকে স্তন্য দেন
ষড়কৃত্তিকা। তাই কার্তিকেয় ষড়ানন। সুতরাং কার্তিকেয় দুর্গাপুত্র নন, মহাদেবের
বীর্যসম্ভূত হলেও।
ফলে ‘কস্মৈ দেবায়
হবিষা বিধেম’ এই শাস্ত্রবাক্য মেনেই আমি অঞ্জলি দিতে যাইনি! আপনারা সকলে যাঁরা
যাচ্ছেন তাঁদের সক্কলকে, ‘দুর্গা দুর্গা!’
পুজোর পরে আবার দেখা হবে! আগাম বিজয়ার শুভেচ্ছা!
।
খুব ভালো লাগলো।এ সব আমারও খুব গোলমেলে মনে হয়।লেখক কে আন্তরিক অভিনন্দন।
উত্তরমুছুনখুব ভালোলাগলো লেখাটি। এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। যদিও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়াতে আর সবগুলো হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভালো না জানাতে বেশ কিছু বিভ্রম কাটিয়ে উঠতে পারলামনা। তবু অসাধারন অনুভূতি।
উত্তরমুছুন