কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১২৪

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১২৪

সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০১৪

২১) নভেরা হোসেন

ছাদের পাঁচিলটা আরেকটু উঁচু করে দাও

ছাদের পাঁচিলটা আরেকটু উঁচু করে দাও
ওখানে অনেক ডানাভাঙা পাখি,
মৃত্যুই পারে তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে
জীবন যা পারেনি
রাতের একঘেয়ে ঘুমের কোলে মাথা রেখে
কত মিথচারী ডুবে মরে
অলকানন্দার জলে...
তুমি মুখে কুলুপ এঁটে
দমবন্ধ ঘরে আটকে রাখো নিজেকে,
কলাবতী ফুল কত ফোটে
বাগানের অন্তরালে-
ফোটে কারও জন্য নয়
তুমিও তাদের মতো গোপনে বেড়ে ওঠো
পেছন থেকে জাপটে ধরে প্যারানয়েড সিনড্রোম

ছাদের পাঁচিলটা আরেকটু উঁচু করে দাও
ওখানে অনেক জান্তব দানবেরা
ছাদের পাঁচিলটা আরেকটু উঁচু করে দাও
ওখানে অনেক ডানাভাঙা পাখি...



তোমার কথা


তুমি কি এখনও দেওয়াল খুঁজছো?
জানি না।
তুমি কি এখনও দেওয়াল খুঁজছো পালাবার জন্য?
জানি না।
তুমি কি এখনও গম্ভীর মুখে বসে আছো বারান্দার চেয়ারে?
জানি না।
তুমি কি সত্য জেনেছো?
জানি না।
তুমি কি মিথ্যা জেনেছো?
জানি না তার কিছুই।
তুমি কি মনে করো এখনও বেঁচে আছো?
জানি না।
তবে কি মরে গেছো?
জানি না।
তোমার কবর কোথায় হয়েছে?
জানা নেই।
জীবন তোমাকে শুষে নিয়েছিল কি?
জানি না।
তুমি কি জীবনকে পান করেছিলে?
বলতে পারি না।
জীবন কি তোমাকে?
তাও জানি না।
তুমি কি নীরবতা চাও?
জানি না।
তুমি কি নীরব?
জানি না...



একজন পোড়া নারী
একজন পোড়া যুবক


তুমিও না তোমার মতো আরেকজনও না
কেউ আজ কথা বলছে না
সকলেই মুখ গুঁজে খেয়ে চলেছে ক্লিয়ার স্যুপ,
আস্ত আস্ত গলদা চিংড়ি, সবুজাভ লেটুস
একজন পোড়া মানুষ শুধু চিৎকার করছে

ওখানে অনেক কিউপিড
একটা আমার জন্য রেখো
লালনের ছেঁউড়িতে নকল সাধুরা আজ
তারা সব কল্কে ওড়াচ্ছে
একজন পোড়া যুবক শুধু চুপ করে আছে
সকলেই কথা বলছে তারস্বরে
একজন পোড়া নারী শুধু
দাঁড়িয়ে আছে সিংহদরজা বরাবর।


সিড়িপথ ও চর্যার অবাধ্য মেয়ে

প্রথমে ঘরটা ছিল বেশ গরম
তুমি পাঁচতলা বেয়ে হাঁপাচ্ছো
হার্টবিট বেড়ে গেল দ্বিগুন
চেয়ারে কিছুক্ষণ বসার পর বিট কমছে
একটু বাতাসও বইলো,
গলায় জল ঢালতে কড়া রোদ ধেয়ে এলো চারদিক থেকে
নস্টালজিক হতে হতে কবিতার বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাও
চর্যার অবাধ্য মেয়ে
বেশ নিপুণ কারিগর,
গলায় একটা নীলকণ্ঠ হার
বোঝা যায় ভেতর থেকেই বিষ ঝরছে
বাইরে থেকেও ঢালা হয়েছে অনেকদিন,
বিষণ্নতার বেগুনি অনুভূতিতে তুমি যখন প্রায় নিভে আসছিলে
তখনই আকাশ কালো হয়ে উঠলো
মৃদু সমীরণ
অঝোরে বৃষ্টি ঝরছে
ছাতাহীন তুমি হেঁটে যাও ব্যস্ত রাস্তা ধরে
দূরে কোনো একটা উঁচু গাছ
ওখানে পৌঁছাতে হবে তোমাকে,
হাঁটছো দ্রুত লয়ে
পেছনে তাড়া করে অন্ধরাত্রি
মাথার উপর ভেঙে পড়লো একরাশ চন্দন কাঠ
এসবই স্বপ্ন, সত্যি যা ঘটেছিল
তুমিও সিঁড়ি বাইছো
নিচে নামবে বলে
একটু পরেই উঠছো,
আবার নামছো
উপরে উঠবে বলে।

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন