কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ১৪ মে, ২০২১

আলী আফজাল খান

কবিতার কালিমাটি ১০৬

 


ব্রেকিং নিউজ, বাংলাদেশ

 

পুলিশ পাহাড়ায় ইজ্জত বাঁচানো যাইব না আব্বার

ছি ছি টিভি দিয়া মগজ স্যানিটাইজ অয় না

চাই মগজ বদলানোর সাংস্কৃতিক জোয়ার

লাস্ট দশ বছরে মহল্লায় মহল্লায়, অলিতে গলিতে

চিপায়-চাপায় যে পরিমাণ মাদ্রাসা গজাইছে

অরা লু্ঙ্গি খুইলা দেখব মালডা হিন্দু না মুসলমান

সিনা একটু উঁচা করছে কেবল, ওয়েট করেন

মাইকে আর ইউটিউবে ওয়াজের নামে তাফালিং চলতাছে

 

কচি পোলাগো গোয়া মারতে মারতে মেশিন শক্ত করতাছে

অখন মাঙ্গের পুতেগো কলিজা এত বড় হইছে

আপনার মুখে হাতুড়ি, আপনার তর্জনীতে হাতুড়ি

 

আরে লুটেরার দল সেইদিন চোখ খুলবি

যেইদিন পুটকিতে বাঁশ দিয়া উচা কইরা মিছিল করব?

থালা-বাসন নিয়া যারা ঘুরতাছে তাগো মেডেল দেন

আর তেল নিয়া যারা ঘুরতাছে ওগো হাতে হারিকেন

 

কাইল মধুদা, আইজ বাঘা যতীন

‘মূর্তি না’ কইয়া কেলা সেভ করেন?

 

নেটিজেনরা স্টাটাস লিখতে লিখতে ফেনা তুইলা ফেলতাছে

মাগার হেই ফেনার পানিতে আমার বালও ভিজতেছে না

পঞ্চাশ বছরের লাল সবুজ পতাকাটা হায়েনার বাতাসে তরপাইতাছে

পুলিশ পাহারায় পুটকি বাচবো না, কবে বুঝবেন?

 

দুপুরের রোদে ছায়াকে ছোট লাগে

 

কে জানে তবে ছায়া নয়, গাছটাই চাই

অথচ ছায়াবন্দি আমি দৌড়াতে দৌড়াতে কিছুতেই গাছের কাছে পৌছাতে পারি না

প্রায় অন্ধকার তাড়া করতে থাকি, দৌড়াতে থাকি

পাহাড়ের কাছে, নদীর কাছে, পথের কাছে বলে যাচ্ছি

কোন দূরত্ব অক্লান্ত করে, ডানা ছাড়া উড়তে পারে কোন মানুষ

 

কে জানে তবে ছায়া নয়, গাছটাই চাই

বিকেলের দিকে যেতে যেতে আলোও নিভে আসছে,

অপেক্ষাকে মুক্তি দিয়ে মাটিতে দাগ টানছো তুমি

অথচ তোমার চোখে আমার পৃথিবী আর একটা জীবন

হাওয়ারা ফিসফাস করছে ব্যথায়

আমাকে তাড়া করছে তোমার ছায়া, আমি দৌড়াচ্ছি

ছায়া থেকে একটা বট গাছ হবে?

 

কে জানে তবে ছায়া নয়, গাছটাই চাই

দুইটা চোখ, একটা পৃথিবী আর একটা জীবন

অথচ ছায়ার মাংস চেটেপুটে তুমি একটা পাথর হয়ে যাচ্ছো

 

আঙুল

আঙুলে আংটি না আঙটা?
সময়ের পেয়ালা উঁচিয়ে
কালো ডানাগুলি জেল্লা ছড়ায়
করতলের ফ্রেমে এইসব দৃশ্যাবলী হত্যা বা আত্মহত্যারঃ

হাতকড়া

তিমিরঘেরা প্রহরে
কলস্বরা নদী ধাবমান রাতে
বজ্রকরতালি ভ্যাংচায় স্বরের সঙ্গী
চুশনি বানায় ইথার অবশ...

হাতবোমা

কি বোর্ডে ঝড়
খালে ও নালায় চিৎকার, শীৎকার, অত্যাচার
লীয়মান স্বরে ঘূণিমুখর
ভূ-স্বর, বুনোষাঁড়, গোলাঘর, হ্রেষাধ্বনির গিটার...

হাতখরচ

যৌবন ঘুঙুর
কাচের শহরের বিয়ারের পিঁপে
কুলফি-বরফ, ফিসফাস, স্বপ্ন শিখর
ছায়াধরা ফাঁদে সুনীল ঝালর...

হাত কাঁপে

হর্ম্য মিনারে
হলাহল চুমুকে চুমুকে মদিরা পপলার
বিভোর স্বগত সংলাপ রাঙায় কাঁকর
অটল-অনড় ঘন্টার মতো কন্ঠস্বর...

হাতে তৈরি

পোতাশ্রয়ে অভেদ্য বুনন
ঘূর্ণিমুখর বাষ্পতনুমুখ, উতল গর্জন
গর্তগুলোর রূপান্তর জাদুর লণ্ঠন
গায় ছায়াসঙ্গী পদধ্বনিভরা জাদুগান...

হাতপাখা

জলছবির অ্যালবাম
মনোলোভা ঠান্ডা হীমের কল্পচিত্রমালা
বুনো অট্টরোলে মালগাড়ি
ছায়াধরা ফাঁদে বিবসনা জলপরী...

হাতবই

আঙিনার কারাগার
হাঁপায় দিগন্তে পয়মন্ত রাত
নিয়তির চরকা ভয়ার্ত-বিমূঢ়
আগুন-রতির রাতে চৌকাঠে চক্কর...

হাতড়ানো  

কুয়াশার কটিদেশ
মগ্ন নগ্নতায় বাৎস্যায়ন ফেনা
অনন্ত-ভূষিত এক তূণধারী
এফোঁড়-ওফোঁড় বসায় মুত্যুবাহী ছুরি...

হাতে হাত

আতপ্ত সৈকত
সাঁকো ও সেতুর উড়ন্ত সুঁই
কায়া ও মায়ার আতশী কাঁচ
প্রীতি ও রতির মখমল চাঁদ...

অনামিকায়

প্রগলভ হাওয়া ঘিরে ধরে
হিংস্র পিরনহার আদিগন্ত সুতা
অ্যামবুশ উতল গর্জনের পূর্ণজোয়ারে
এঁটো অবশেষ শিয়রের শুকনো পাতা...

তর্জনী

হিমডালের প্যাঁচা
গম্বুজের চূড়ায় বজ্র-চকিত কিংকোবরা
মনগহনের দীঘলতনুর ভাসন্ত ঘাঘরা
ঊর্ধ্বে ঊর্ধ্ব পাথর খোদাই তোপধ্বনির বাক্সপেটরা...

মধ্যমায়

আলোর বসন্তের পাদটীকা
গভীরে গভীর শব্দবন্ধের সুড়ঙ্গ
সুতার গুটলি মেঘের ছায়ায় বিছায় বিষণ্ণ জাল
ঝিনঝিন বিবশে নীল চাবুক ও শিক...

স্নায়ুর প্রান্তে ঊর্ণনাভের ঢেউশীর্ষ
জানি সূচিমুখে বহ্নিতাপ
যদি ভালোবাসা থাকে ব্রহ্মান্ডে
আলিঙ্গনে চুম্বক আঙুলে আঙুলে

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন