কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ১৪ মে, ২০২১

শতাব্দী দাশ

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ৯৬


শূন্যপুর – ৪


ছোট চটিজোড়া দেখলে হু হু কান্না পায়। পায়েরা ইস্কুল যায়। পায়েরা বাড়ি ফেরে।  ইদানিং বন্ধুরা টিটকিরি দেয়।  

-হুই বিদেশি! 

ছোট মানুষের বিষাদ। কোত্থেকে এলাম? তোমার নাম থাকলে আমার কেন নেই, মা?

ওরা টিকার কাগজে খুশি হয়নি। মেয়ের বাপ গিয়ে জন্ম-কাগজও করে আনল।  দপ্তরে হাঁটল বহুবার। ওরা বলল, একবার বাদ গেছে যখন, অনেক হ্যাপা।  ডাক আসবে  শুনানির। ডাক আসবে কবে?

অপেক্ষা। ডাক আসে কই?

লিস্ট বের হয়। ছোট মানুষটার নাম নাই। রিজেক্ট।  নয়টা পোয়াতি মাস। রিজেক্ট।  নজরকাঠি। ঘুনসি। ছোট মশারি। রিজেক্ট। টলোমলো হাঁটা। রিজেক্ট। রাতজাগা  জ্বরজারি। রিজেক্ট। প্রথমদিন খিচুড়ি ইস্কুলে গিয়ে সে কি কান্না! সব রিজেক্ট।

বলা হয়নি সোনাটাকে ডিটেনশন ক্যাম্পের কথা। ভয় পাবে না?

ওরা নাকি যত্নে রাখবে। ইস্কুল বানিয়ে দেবে। খেলার মাঠ। মা ফ্যালফ্যাল করে শোনে। ঘুমন্ত মেয়েকে খুব জোরে জড়িয়ে ধরে। মেয়ে বাঁচবে মা ছাড়া?

এক চরম দিনের অপেক্ষায় মা ফলিডল রেখেছে। নিজে খাবে। তারপর ঢেলে দেবে মেয়ের গলায়। যথেষ্ট ঢেলে দিতে হবে। যাতে কোনোমতে না বাঁচে। মুশকিল একটাই।

ছোট চটিজোড়া দেখলে জোর কমে যায়। আর হু হু কান্না পায়।  

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন