দেখা
হলো দুজনে
একটানা বেশ কয়েক
ঘণ্টা বৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড়ি রাস্তা। চড়াই ভাঙতে ভাঙতে দম বন্ধ হয়ে আসছে। তবুও প্রকৃতির রূপ, রস, গন্ধ উপভোগ
করতে করতে এগিয়ে চললাম। হঠাৎ কার যেন হাতের
স্পর্শে চমকে উঠলাম। আমার হাতখানা বেশ শক্ত করে ধরেছে সে। ‘আরে, অনিমেষ যে!’ আমার বিস্ময়ঘোর
কাটতেই চায় না! কত কত বছরের পর! ‘শম্পা, এই ঘনঘোর বর্ষায় সাবধানে পা ফেলে চল’
অনিমেষের কণ্ঠে আবেগের সুর।
আমি মনের সুখে
ক্যামেরাবন্দি করছি পাহাড়ের ঘর-গেরস্থালি। মুষলধারায় বৃষ্টি। নেপালের হিংকু কেভে আমাদের আশ্রয়
কিছুক্ষণ।
‘এখন আছিস কোথায়,
অনিমেষ?’
‘পৃথিবীর পথে। তুই?’
এরকম কিছু কথা এবং কথাহীনতায় প্রকৃতির সখ্যতায় কাটতে থাকল
সময়। রাস্তা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। উচ্চতার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা
হাওয়ার প্রকোপ বাড়ছে। এই বেড়াতে বেরোনোয় কোনো পরিকল্পিত আধার নেই।
যেদিকে মন চায় সেই দিকেই ছুটে যাই।
গন্তব্যহীন
অন্ধকারে জঙ্গলের পথে টর্চ জ্বেলে হাঁটছি। সামনে বিশাল গিরিখাত। হাত ফসকে অনিমেষ সরে গেল, মনে হল গিরিখাতের অতলে মিশে
যাচ্ছে সে। চিৎকার করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। চাঁদের আলোয় রাস্তা খুঁজছি।
অনিমেষ সেই
ছেলেবেলা থেকেই আমাকে আগলে আগলে রাখতো। একটা সুরক্ষা কবচের মতো। মাঝে কতগুলো বছর সে আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছিলো।
খুঁজে চলেছি
তাকে। হঠাৎ দেখি গাছের গুঁড়িতে ঠেস দিয়ে
দাঁড়িয়ে অনিমেষ আত্মমগ্ন মোবাইল হাতে। অনিমেষকে সত্যিই ফিরে পেলাম আবার, ভাবতে
ভাবতে অনিমেষের দিকে ছুটতে থাকলাম...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন