কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৯

দেবলীনা চক্রবর্তী




বৈরাগ্য 

ঋতু বদলের এই সময়
যখন এসরাজে বেজে যায় পরিচিত মেঘমল্লার তখন ছায়াবিতানে ঘুরে বেড়াতে মন চায়
কিন্তু -
এ আমার এক অপারগতা, বারে বারে ফিরে আসে গভীরে - বিরহ
আর তুমি বলো এ আমার নাকি গোপন অসুখ!

চারিদিকে থৈ থৈ হাঁটু জল, সহজেই পার হওয়া যায়
তবু আমি ঐ অনড় জল কুমিরের মতো রক্তশূন্য - মৃতবৎ হয়ে ডুবে থাকি

সারাদিন ঐ জলজ তীক্ষ্ণ চঞ্চুগুলো আমার  শরীরময় আঁচড়াচ্ছে কামড়াচ্ছে সূচ ফোটাচ্ছে

আমি নির্বিকার;
এ আমার একরকম স্থবিরতা,
ভীষণরকম ফুরিয়ে যাওয়া

তবু একাগ্র পানকৌড়িটির  মতো মুখ গুঁজে
পরে থাকি -
নীল শীতলতার খোঁজে
অথচ এই জল আমার তৃষ্ণার নয়, বৈরাগ্যের


যোগফল

এক একটা বিন্দুর যোগফল এক একটা সমান্তরাল রেখা,
নিরবিচ্ছিন্ন অধ্যায় বিন্দু - চলমান জীবন

আঙুলের আঁচড়ে দাগ কেটে যাই বিন্দু বিন্দু
জলের ওপর
বর্ণময় নকশা জেগে ওঠা মাত্রই পিছলে
যায়, গড়িয়ে পরে জলীয় ধর্মে,

তছনছ হয়ে যায় জলের অক্ষর শরীর!

তবুও চলে জলীয় জীবনের অবাধ বিচরণ


সুরকাব্য

অনর্গল বলে যাওয়া কথার মধ্যেও একপ্রকার
স্থবিরতা আছে

মুহূর্তের ছেদ, কাটাকুটি আঁচড়, দাগ -

তারপরেই ক্ষরণ! বর্ণের, শব্দের!

বাক্যের বিন্যাস
এগিয়ে যেতে থাকে ক্রমশ আধুনিকতার দিকে, আঁকাবাঁকা চলনে

স্রোতের মন্থনে উঠে আসে উচ্ছাস
জন্ম নেয় গৌরে গান্ধার -
শান্ত সুললিত সরগম!

যত গভীরে যাই, ততই তলিয়ে যাই
ভান্ডার ফুরোয় না, অথচ আমি হারিয়ে যাই

আর অন্তর্যাপন করি এই নিরবিচ্ছিন্ন
সুরকাব্যের গতিময় জাড্যতা


পাতার নৌকা

থির জলে ভেসে যাওয়া পাতা নৌকার উল্লাস
আর ভিতর থেকে ডাক দিয়ে যাওয়া নিমগ্ন শৈবাল...  এই গোধূলিবেলায়
সেখানে দৃশ্যরা সব ছায়াময় - কোন যাদুমন্ত্রের
দৌলতে শব্দ জন্ম হয়, কাটাকুটি খেলে, গল্প বলে
কিন্তু এত গভীর যে থই পাওয়া যায়  না কিছুতেই!

অন্যদিকে, গলে যাওয়া সূর্যের দিকে তাকিয়ে তুমি স্থির অথচ বিহ্বল চাহনি তোমার
কারণ সূর্যের ঐ স্থিতিকে ধরে রাখার মতো একটাও পাহাড়ী চূড়া নেই তোমার আশেপাশে

এখন ভরসা শুধু এবং শুধুমাত্র এক প্রস্থ হাওয়ার দমক
যাকে ভিত্তি করে তুমি ঠিক স্থিতু হতে পারবে
ঐ প্রবন্ধের প্রারম্ভে, যেখান থেকে পাতার নৌকায় ভাসতে ভাসতে, গল্পগাছার শুরুয়াত
হয়েছিল!

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন