কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৫

অমৃতা মজুমদার

এখন ও মেঘ করে

(১)
    
কবিতা-                            
আমি আর ঠিক ওইখানে নেই।
রোদেপোড়া গন্ধটা এখনও কালো শ্যাওলা ধরা ছাদে নিয়ে যায় আমায়।
কাপড় বাঁধা কাচের জারে বন্ধ আছে সত্যিগুলো
মেঘটা কোণের দিক থেকে এগিয়ে আসছে
খুব দ্রুত।
এখন মুখের ওপর বুকের ওপর শুধুই বন্যা আছে 
সব ভেসে যাবে হয়তো  
সবটুকু
চমকে ফিরে দেখেছি,
কার্নিশে পায়রাটা পিছিয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে
অনেকটা
আধবোজা দরজাটার ফাঁকে শুধু কালো আছে


(২)

আরও কিছুটা সম্মোহনের পর,
শুকনো পাতার ঝাপসা পাকগুলো
নরম আদরের মতো মনে হবে
চোখের কোণে
চেরা চিবুকের ভাঁজে নিষ্ঠুর থেমে থাকবে রাত
বৃষ্টি হবে না তবু,
একেবারে।
অগোছালো ভালোলাগার লজ্জাটুকুই
দেওয়ার ছিল।
আমার নূপুর তোমার বাঁশি--


()

প্রতি মোড়ের মাথায় দৃশ্যগুলো বদলে যাবে
গেরুয়া সুর ছুঁয়ে থাকবে ইউক্যালিপ্টাস
এখন ও জানে তারপরেও তৃষ্ণা আছে
তারপরেও ভিজে মাটির গন্ধ আছে
হঠাৎ কোনও ভুলের প্রতীক্ষায়
নিভে যাওয়া প্রদীপের মুখে
তখন ভোরের আলো
নাকি আলেয়া!


()

ফুলটা এগিয়ে আসছে
শিশিরের আদরে আলুথালু
সাদা পাপড়িগুলোয় তখনও বেসামাল
ক্রমশ কমে আসছে সাইকেলের বেগ
কাল রাতে ঘুম হয়নি একেবারে
সারারাত হিম ঝরেছে শরীরে
আমাকে ঠিক কীভাবে চেয়েছিলি তুই
ঘুড়ি করে নাকি নোঙর?


()

কুয়াশার পরে  চমকে ওঠা রোদ
আর ফিরে তাকানোর মুহূর্তগুলোর ভেতর
বেশ একটা সূক্ষ্ম মিল অনুভব করছি
আর পরিধিটা বাড়ছে ক্রমশ
আমার রাতের ওয়াইনের
এভাবে পথ কখনও পিছিয়ে দেয়
সাগরের ঢেউয়ের মতো
ফিরে এসে পরে থাকে ধুলোয়  
ফেরারি হওয়া গল্পগুলো
কিন্তু পালানো হলো না কোনোমতে


()

এখন শুরুর রঙগুলো গল্প মনে হয়
পাখিটা তখনও বোগেনভলিয়ার গায়ে দোল খাচ্ছে
নিটোল ফলটার গা বেয়ে গড়িয়ে পছে ষড়যন্ত্র
প্রতীক্ষার ঠোঁট ছুঁতেই
ফুরিয়ে যাবে প্রেম
ডালিম ফুলের মতো লাল লেগে থাকবে
রাতের পায়ের পাতায়
কোনও পরিকল্পনা ছিল না
আমি জানি
কিন্তু কেমন আছিস তুই?
কেমন থাকে এখন,
তোর পিছুডাক?



স্রোত বয়ে যায় শুরুর দিকে

জলের ভিতর ভেসে থাকতে দেখেছি
ঘন কালো হয়ে আসা সবুজ জীবনটাকে
একটা শুধু একটামাত্র কোষ থেকে
নাভিপদ্ম উঠে আসছে শরীর বেয়ে
দেখেছি আমি
ভিজে চুলগুলো তখনও কাঁধের কাছে
জড়িয়ে আছে কালসাপের মতো
তুমি রাত হয়ে থেকো
আমার দরজা ঘেঁষা সোনালি আলোর স্বপ্নগুলোর ভেতর
কোলাহলের মাঝে একলা মুখ গুঁজে
শুকিয়ে যাওয়া দাগটার কথা মনে করে নিতে
হঠাৎ নাড়া দিয়ে উঠবে যখন রঙমাখা তুলিটা
অবাধ্য আঁচড় পরবে ক্যানভাসে
তখন ঠিক তখন বন্যা আসবে দেখো
হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে ফেলবো সব কটা তারা
যারা এতদিন আমায় ছুটিয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে
দারুচিনি বন থেকে আমাজনের জঙ্গলে
আমি আস্ত একটা নদী
বেমালুম বয়ে চলেছি শুনো খটখটে মাটি ওপর
প্রতি ফোঁটা জল অটুট আমার
কোনও পলি জমেনাকো পথে
আমি ভেজাতে পারিনি ওই দুই চোখ
যেখানে মিলিয়ে গেছে চেনা নৌকোর আধবোজা আলো  
ঠিক যেইখানে ফেলে রেখে এসেছিলাম
বাঁশির সুরের মতো ঝরে পরা জল
আর আমার চির নির্ভরতায় গড়া দুই পার
তবু আমি আজও বয়ে যাচ্ছি দেখ
নিটোল উপল রাশির ওপর দিয়ে
একটু আদ্রতার জন্যে
অথচ পুড়ে যাওয়া পথ শান্ত হচ্ছে
আমার শীতল আগুনে
আমি মোহনা চাইনি কোনোদিন
থামতে চাইনি কোথাও
বইতে চেয়েছি তোমায়,
আর তোমার নিভে আসা চোখের নক্ষত্রদের
তবু দেখ
আমি আস্ত একটা নদী
বেমালুম বয়ে চলেছি শুনো খটখটে মাটি ওপর দিয়ে
কোনও পলি জমেনিকো পথে





















1 কমেন্টস্:

  1. সমূহ বিবৃতি পথ আগলে থাকে, শুধু দৃষ্টির ভেতর চোখ চেয়ে থাকে, তাহলে.....

    উত্তরমুছুন