দাম্পত্য
প্রথমে আগুন ছিলিস, তারপর খিদে
মাঝে গরিবি দেখিয়ে রাস্তায় নামলি ...
রোদে নখের আঁচরে জ্বলে উঠল গা
চামড়া পোড়ার গন্ধ, দিনের পর দিন, দিনের পর দিন -
এভাবে চললে, মেরে ফেলব তোকে।
অথবা তোর নামে কেচ্ছা ছড়াব দোরগোড়ায়-
খুঁটে খাবে কাক ... লোডশেডিং-এ মোম ফেলব হাতে
জানালা খুলে দেখাব পড়শিকে,
সঙ্গমে তাপ কমলেও জোর কমে না
না হলে তো বাঁজা বলবে লোকে!
মেয়ে হলে বাজারে ছাড়ব না
সাহস ক’রে দিল্লি পাঠাব – ছেলে হলে
শেখাব সাবঅল্টার্ন চিত্রকলা, তোকে নগ্ন ক’রে
দেখাব গলা দিয়ে ভাত, মাসমাইনে
অথবা পুরুষাকার, কোথায় কতটা ঢোকে।
বাকি থাকবে নিরাপত্তার পাহাড় – কবিখ্যাতির
ছিটেফোঁটাও ডিঙ্গোনো হবে না তোর – মা কসম
আমারও না, তবু মরব বললে শেকড় ছোঁয়াব
বহেমিয়ানার, মন্ত্র পড়ব বেরোজগারির
যখন খুশি, যেভাবে খুশি বাঁচিয়ে তুলব তোকে।
কাঠুরিয়া ও অচ্ছুতকন্যা
কতকাল কিছু লেখা
হয়নি জানিস
কতকাল ধরে বহু
জন্মের বিচ্ছেদ
তোকে যতবার জড়িয়ে
ধরেছি ঘেন্নায়
ছিটকে দিয়েছি ভালোবাসবার ইচ্ছেয়।
ইচ্ছেগুলো ফড়িং হ’লে
সুমন
ইচ্ছেগুলো পূরণ হ’লে
গল্প
ইচ্ছে হলেই শেষ ঘুমে
রোজ আসবি তো?
এঁটো
ঠোঁট-কাঁধ-বিছানা-বালিশ-নলবন।
বালিশের নিচে কবিতার
খাতা, পিস্তল
বালিশের পাশে চুল
এলো করা ডাইনি
বিছানা জড়িয়ে বেবাক
বসুন্ধরা
অথচ আমি তো পাশের
বাড়িও যাইনি।
বাড়ি বলতে বছর বছর
বদলি
ঘর বলতে বহু মাস হলো যাই না
বুকে ব্যথা হলে
সিঁড়িতেই ব’সে পড়া
মনে ব্যথা হ’লে আমি
খুব বাজে, তাই না?
ব্যথা বলতে
অক্ষরমালা, না লেখা,
লেখা ছিল যা উড়িয়ে
দিতেই দিন শেষ
বড় কবি মানে পিস
হেভেনের জিম্মায়
ছোট কবি মানে একে
ওকে তাকে হিংসে।
কবি মানে কিছু অসুখী
কথার মিছিল
অসুখী সবাই, তবু
সকলেই কবি নয়
কাঁহাতক আর ভালো
লাগে বল আজ
রোজ রোজ শুধু ভালোবাসবার অভিনয়ে!
আদরের আগে অগোছালো
মন, ঘরদোর,
আদরের পরে মেঘ ঢুকে
পড়া চৌকাঠ
আর মেঘ ভেবে কুয়াশায়
ভেজে লোকজন
ভেজে পথঘাট, ভেজে
খেলনার নৌকা।
সেই নৌকায় সোহাগ রাতের ঠিকানা
ভাঙ্গে ইতিহাস, ওড়ে
বেহুলার ওড়না
আয় কাঠ কেটে আগুনে
মেশাই অভিমান
আমি কাঠুরিয়া, তুই
অচ্ছুতকন্যা।
কবিতার গেরস্থালি
আমার কবিতাগুলো
পেরিয়ে গেলি, পড়লি না।
আমিও নূপুরের শব্দগুলো অযত্নে না-পসন্দ লাইনের মতো
এড়িয়ে গেছি।
অনুপ্রাসে উদাসীনতার ওম – তোমার নামে
মিল ক’রে ক’রে যে
অপত্যরা একরাতেই
এত্তটা বড় হলো –
ওদের আর
পৃথিবীর আলো দেখাই
না।
কথা ছোঁড়াছুঁড়ির
নামে
মাঝখানে দেওয়াল গাঁথার নামে
কবিতায় সরাসরি যে
কথাগুলো লিখেছি তোমায়
বোঝনি না?
কী হবে আর,
মাত্রাবৃত্তে কান্নাকাটি করে?
দীর্ঘতম স্পর্শক
রেখেও দেখেছি, পরিধির পর
পরিধি জুড়ে শুধু একা
একা উল বুনে গেছো তুমি –
তবে, ঠাম্মার মতো
ক’রে না ।
কানের পাশ দিয়ে ছুটে
গেছে বিদ্যুৎ আর আমি গোলাগুলির শব্দে
ফিরে পাওয়া শব্দদের
আবার হারাতে গিয়েও
আমি রূপকের আশ্রয়ে
ঢুকে এ যাত্রায় বেঁচে যাই।
তারপর একদিন,
সারা গায়ে ফরমায়েসী কবিতা মেখে
চৌকাঠে হুমড়ি খেয়ে
পড়ি,
জ্ঞান হয়, দেখি
সযত্নে ধুয়ে মুছে গেছে গা
একপাশে শঙ্খবাবু
অন্যপাশে সবেমাত্র খোলাচুল নিয়ে
দারুচিনি দ্বীপের
ভেতর
তুমি যেন আমার সাথে
বহুদিনই অন্তরালবর্তিণী।
সে এক গল্প তৈরি হয়...
উত্তরমুছুন