কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ২৯ জুন, ২০১৪

২১) অব্যয় অনিন্দ্য


ছায়াপুজো

আলোর অক্ষমতার যন্ত্রণাকে কে যেন নাম দিয়েছে ছায়া। সেই ক্ষোভে কুলবতী ঠাণ্ডা আলো সন্ধ্যা হলেও সূর্যের ডাকে ঘরে ফেরে না। দ্বাররক্ষী  ওজোনের খিল হাট হলে - ছায়াময় নিশিথে পৃথিবীর সাথে ছদ্মবেশে বউছি খেলতে খেলতে তাপ হয়ে যায় - মেরু তুষারকে করে তোলে জ্যোৎস্নার কান্না।

কুলবতী আলোর ক্ষোভে কুলনাশ নিয়ে বিজ্ঞানীরা যত কথাই বলুক না কেন কূটনীতিকগণ তা শুনবেন না। কেননা তাঁদের হাতে এখন অনেক আলো  - উত্তরাধুনিক আলো, ধার্মিক আলো, সাম্যবাদী আলো, গণতন্ত্রী আলো। এত আলো তবু যারা সংখ্যায় কম তাদের দিকে অন্ধকার ছুঁড়ে দিতে নিরন্তর ছায়ার পুজোই করে চলছে লক্ষ-কোটি পেঁচা।  

সবখানে আলো পৌঁছবে - এমন প্রতিশ্রুতি পেয়েই সূর্যটা হিলিয়ামের দহন সহ্য করে পৃথিবীর বুকে দুধ যোগায় - তবুও মানবতার সামনে কেবল ছায়ারই রাজত্ব কেবল পেঁচাদেরই হুলুধ্বনি।


ঘ্রাণ

ইতিমধ্যে পৃথিবী বত্রিশ বার তার পুরো পথটা হেঁটেছে করতলে আমাকে  নিয়ে -- টাট্টি ঘরের পেছনে কড়ই গাছটার যুবতী বুকে বত্রিশটা দাগ বেড়েছে এই সময়ে। গাছটা বুকের দাগ ধুয়ে ফেলতে শেখেনি অথচ ওর   স্থূলতার আড়ালে কত যুবতীর বুকে লালচে-কালচে দাগ হলো -- আবার ধুয়েও গেল ঋতুর আগুনে। ওই যুবতীদের কাছে কড়ইটা ডায়েট করাও শিখতে পারল না -- নিতম্বে বাড়ছে নির্লজ্জের মতো -- গাছেদের ফ্যাশন  টিভিতে মনে হয় ডায়েটের বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে গেছে।

ডায়েটের কথায় মনে পড়ল -- ফুল সম্প্রদায়ের মধ্যে রজনীগন্ধাই সবচেয়ে কার্যকর ডায়েট করে। তার চিকন কোমর অনেকক্ষণ সইতে পারে গন্ধের ভার।

আমি রজনীগন্ধা নই -- এই স্থূল, মোটা আমিকে আর বেতশিদিন বইতে পারবে না পৃথিবী। তবে পৃথিবী কথা দিয়েছে -- আমার সূক্ষ্ম গন্ধটাকে বয়ে চলবে সূর্য নিভে যাওয়া পর্যন্ত। তাই রজনীগন্ধার ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেখ -- একটা অব্যয় অব্যয় গন্ধ।
  

শিল্প

মাননীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী কি জানেন -- নটি বিনোদিনীর অচ্ছুৎ অশ্রু সুচিত্রা সেনে এসে পুজোর ফুল হতে কতবার ঘুরেছে সংস্কৃতির লাটিম?

শোবিজ তারকার মেকুড়-চলন আহা সর্পনিন্দিত দোলন কোমর ভুলে গেছে সেই ঘুপচিকে যা ছিল দোলনের কিংবা দলনের আঁতুড়ঘর। অথচ শিল্পের এভারেস্ট আজো ছুঁয়ে আছে সেইসব নারীর পবিত্র চরণ -- যাদের ক্লেদ, ঘাম, অশ্রু চেটে চেটে সাগরে পার হয়েছে শিল্পকলার ট্রেন।

তাই টকশোজীবিদের বলছি -- রাস্তায় ক্যানভাসারদের লাইনে দাঁড়ান।  

(কবিতায় ‘ক্যাট-ওয়াকএর বাংলা করা হয়েছে ‘মেকুড়-চলন’)  

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন