কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / নবম সংখ্যা / ১৩৬

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / নবম সংখ্যা / ১৩৬

বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

দুলাল সরকার

 

কবিতার কালিমাটি ১৫১


গোধূলির সংক্ষিপ্ত ধ্যান

গোধূলির সংক্ষিপ্ত ধ্যানে তৈরি

বীণাটি তোমার বুকে রেখে যাব

তোমার চিন্তার মত একা--

অবিকল অশ্বত্থের পাতা কম্পমান স্হির;

নদীর উপসংহারে লেখা

বিশুদ্ধ নি:শব্দে তৈরি কিছু মূক অভিমানী

নি:সঙ্গ হলুদ, খোলা বোতামের  ভুল

বুকে রাখা মৃত প্রজাপতিটির মত

ছেঁড়া বীণাটির তারে চিত্রিত স্বর,

গোধূলি জড়িত ম্লান বৃক্ষের  ছায়া-- লেখা

অসহ্য এ সমঝোতা উদাসীন আঙ্গুলের

দীর্ঘশ্বাসে তৈরি বীণাটির  ব্যথা--

 

প্রতীক্ষা করে দেখেছ

প্রতীক্ষা করে দেখেছ কেউ আসে কিনা

কোনো সুখী কাক-ঘর চোখে পড়ে কিনা?

হাসতে, হাসতে ওরা ভোর হবার আগে

উজ্জ্বল হয়ে ওঠে কিনা? অথবা কেউ

কাঁদে কিনা, কাক-ঘরে, নির্লিপ্ত আকাশে

উড়তে, উড়তে কারো চোখ মরে যায় কিনা--

 

প্রতীক্ষা করে দেখেছ -- সমঝোতা  ছাড়াই

কেউ চিঠি লেখে কিনা

লিখতে লিখতে হাত অবস হয় কিনা?

ভালোবাসা জমে, জমে পাথর হয় কিনা

পারস্পরিক আস্হার অভাব ঘটে কিনা?

 

অন্তরায়

তুমিই অন্তরায় সৃষ্টি করেছ  জীবনের প্রতি

মুগ্ধ হতে সূর্যের মেধাবী গুঞ্জন শিখতে,

আপত্তি তুলেছিলে দোয়েলের জন্য

নিরাপদ আশ্রয় নির্মাণে জলের অখণ্ডতা

সৃষ্টিতে তুমিই প্রথম বাধা দিয়েছ,

মানব হিতৈষী আকাশ তৈরিতে তুমি কোনো

সহযোগিতার হাত বাড়াওনি  বরং

অস্বীকার করেছ আপাদমস্তক বৃক্ষের

অস্তিত্ব রক্ষার্থে মানুষেরও রয়েছে ভূমিকা;

 

বরং তোমার উন্মাদ হস্তক্ষেপে নিষ্পাপ

জমির বুকে সৃষ্টি হয়েছে আইলের অস্তিত্ব,

শুকিয়ে গেছে তপস্বিনী নদীর উপমা--

 

অথচ আমি কলিঙ্গের যুদ্ধ শেষে

রাতের পবিত্র মুখাবয়ব হতে চেয়েছিলাম।

 

আমি খুশি হয়েছি জেনে

আমি খুশি হয়েছি জেনে যে, তুমি ভোরের সাথে

ঐক্যমত পোষণ করেছ—

ভোরের দিগন্তকে দেখে পুরনো অভ্যাস পাল্টাতে রাজি হয়েছ;

আর তাই ভোরের প্রতি একাগ্র বকুল ও

শিশিরে ভেজা ধান থোড়ের কিঞ্চিৎ আপত্তি সত্বেও তোমাকে মেনে নিয়েছে

এছাড়া সূর্যোদয়ের প্রস্তুতি পর্বে তোমার নীল ঠোঁটের

নৈর্ব্যক্তিক আত্মসমর্পণ ধনী ও দরিদ্রের প্রতি

সূর্যের সমমনোভাবাপন্ন উদয়ের সব মহিমাকেই

আকৃষ্ট করে দেখতে শিখিয়েছে আঁচলের

নিচে কোনো পোষা ক্ষত আছে কিনা 

এবং তা কতটা দুর্বহ--

 

 

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন