![]() |
| কবিতার কালিমাটি ১৫১ |
পদ্মপাতায় দুপুর
সুব্রত সরেন শিরদাঁড়া উঁচিয়ে দাঁড়ালে
আমরা পৌছে যাই
ছোটবেলার খেলাঘরে কাছাকাছি
আমাদের খেলা শুরু হবে জলে
শব্দ ভেঙ্গে কচুরিপানার ভেলা বানাব
নীরব নীল দোলায় ভেসে যাবে
ঘটি-বাটি,
বুদবুদ সাবান
অন্ধকার খুঁড়ে বের করে আনবে শৈশব
আজ এবেলায়
অলৌকিক এই খেলাঘরে
আমাদের হারানোর বেলা
গামছায় পোনা মাছের ছটপট, আঁশটে গন্ধ
জলের সাথে জলের ভিজে যাওয়া
এই দুপুরবেলা
স্তব্ধতার আড়ালে জড়াজড়ি মাখামাখি
পদ্মপাতার দোল
নীলপদ্ম সাক্ষী এই অবেলাও তোমার
আর বুঝি হবে না পাওয়া কোনদিন
আমাদের খেলাঘরের মৃদুধ্বনি এই তো খুব কাছে স্পন্দনে
অনন্তের অতলে...!
আদিবাসী কাব্য
নীরবতা শিমুল তুলার মতো
উড়ে উড়ে তোমার ঘরে পৌছে গেছে কিস্কু মুরাও
আজ নাকি ঢালু গ্রামে বিশাল জনসভা আছে
ওখানে তুষাচাষের উপকারিতা নিয়ে কথা বলার
কথা এক কবির
তার যেতে দেরি দেখে সকলে ফসফস করছে রাগে
আমি মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে
একবীজপত্রী দ্বিবীজপত্রী যা যা পড়া ছিলো
মুখস্তবিদ্যায় ঝেড়ে দিতেই
উতল সিন্ধুর জলে উড়ে গেল উত্তরীয় আমার
ওদিকে কবি তখন শিমুল তুলার পাশবালিশ জড়িয়ে
স্বপ্ন দেখছে অক্সিজেনহীন এই পৃথিবীতে
কোথাও কি নেমেছে বৃষ্টি একটু হাওয়া শীতল
ন্ডা ঠান্ডা শ্বাস,
মিষ্টি বকুল গন্ধ আর দুলে উঠা পাতার মুরমুর
আজ কি হবে যাওয়া মানব সমাবেশে
হবে কি বলা কবিতার শব্দের উৎস থেকে
খুঁজে পাওয়া যায় ঝর্নার অক্সিজেন
যা মানব জন্মের গানের মতো শোনায়।
নৌকার পৃথিবী
বাহ্! কী সুন্দর দোলা দিচ্ছে
একূল ওকূল
কী নবীনা উচ্ছল কোমরের বাঁক
যেন পানকৌড়ির ডুবসাঁতার
নদীতে ডুব দিয়ে জেগে উঠছে স্পন্দনে
এরকম আদুরে নদীর প্রান্ত জুড়ে ভেসে যাই
ওখানেই ভেসে যাবার বাতাস বইছে
ভেসে যাওয়া মন্দ নয়
ইসাবেলা বার্ড-এর সাথে ছুটতে ছুটতে
একদিন এরকম একটি পৃথিবীর সঙ্গে
দেখা
হয়েছিল, আমরা
এমনই নতুন নতুন পৃথিবীর
অন্বেষণে
বেরিয়ে পড়েছিলাম
খুঁজে
পেতে চেয়েছিলাম আমাদের
সেই
অসীম পৃথিবী আছে , কোমল
আলোর দেশ আছে,
পথ
আছে, দ্রুত পৌঁছে যাবার
যন্ত্র আছে শুধু
অতীতের
ছেড়া নকশাটা খালি
পড়ে
আছে
বিচরণ
নেই
জানি
অতীত মানে হারানো নয়;
সে
যেন ষোড়শী বালিকা প্রতিদিনের ঘুম ভাঙা গান,
জন্মাবার
দিন অথবা চায়ের চুমুক
পৃথিবী
চিরকাল ছুটে চলা ঘোড়া
আমি
তার সাথে ছুটে চলেছি...!

0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন