ব্যারেল, বরবর্ণিনী ও একটি নদী
শ্রদ্ধেয় মান্না দে
অধীর বাগচী মশাইকে দিয়ে একটা গান রেকর্ড করিয়েছিলেন। পুলকবাবুর লেখা। 'যখনই গানের মুখ
মনে আসে না, তোমার মুখটি মনে করি'। এ'রম একটা ব্যাপার আমার সঙ্গেও হয়। একটা লেখা নিয়ে
বসেছি। বিষয় যা কিছু হতে পারে। কিন্তু কীভাবে শুরু করবো, কিছুই মনোমত হচ্ছে না। আমি
তখন ঘনাদার মতো সিগারেট 'ধার' করার প্রমাণিত লাইন ধরে 'আরণ্যক' নিয়ে বসি। যেকোনও একটা
পাতা খুলে। ঘন্টাখানেক ধরে তা পড়ে গেলেই উর্বর শব্দ ও বাক্যবন্ধনীর মুখপাতগুলি পর পর
মনে এসে যায়। এবার শুধু লেখার অপেক্ষা। আমরা বনেদি জংলি জনতা। 'বন-পাহাড়'-এর গল্প যে
কেমন হয়, কেমন হওয়া উচিত, সেটা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দিয়ে বুঝতে পারি। 'সাজানো' জঙ্গলের গল্প
একেবারে টানে না। ফাঁকিবাজি ধরা পড়ে যায়। যেখানে গল্পের গরু গাছ থেকে আম পেড়ে খায়,
গল্পের বাঘ ছররার পিছনে দৌড়োয়, সেসব আমরা খেতে পারি না। বিভূতিবাবুর 'আরণ্যক'-এর 'পবিত্রতা' সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। 'সৎ'
সাহিত্য যেমন হয়।
বাঙালির পর্যটন-প্রিয়তা এক বিখ্যাত পিছুটান। দুটি গন্তব্য নিয়ে বঙ্গীয় জনতার রোমাঞ্চ কিছুতেই কাটতে চায় না। প্রথমটি 'বরফ', দ্বিতীয়টি 'জঙ্গল'। সমতল, জনপদ-প্রধান অঞ্চলের বাসিন্দা এই জাতির লোকজন ‘বরফ’ দেখলেই ঊর্ধ্ববাহু হয়ে নৃত্য করতে শুরু করে। স্বীকার করি, গন্তব্য পাহাড়ের চূড়ায় বরফ, পদতলে বরফ, সবারই এক ধরনের শ্বেত রোমাঞ্চ রয়েছে। কিন্তু তাহা সৌন্দর্যের 'শেষ সত্য' নয়। পাহাড়-পর্বতের অনন্ত রহস্য। তুষার স্বর্গের ছলনা তার মধ্যে একটি গৌণ পর্যায়। শৈল-রোমাঞ্চকে বিষয় করে বাংলায় ধারাবাহিক লেখালেখির দিকপাল জলধর সেন, উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, প্রবোধ সান্যাল, শঙ্কু মহারাজ। এঁরা ব্যতিরেকে কিছু লেখক আছেন, যাঁরা এই রোমাঞ্চকে আংশিক ধরতে পারেন। অপ্রাসঙ্গিক বোধে তাঁদের উল্লেখ আর করছি না।
প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় বঙ্গীয় প্রপঞ্চটি 'জঙ্গল'। বন-পাহাড়-জল-মাটি-রোদ-সবুজ এবং কিছু অংশে বনবাসীদের বৈচিত্র্য। বাঙালি আঁকড়ে থাকে। বিভূতিভূষণের বহু রচনায় এরা আসাযাওয়া করেছে। কিন্তু সর্ব অর্থে সম্রাটের সিংহাসনে আসীন যে গ্রন্থ, তার নাম 'আরণ্যক'। এই বইয়ের প্রসঙ্গ এসে গেলেই অরণ্য সাহিত্যের শিখর কীভাবে ছোঁয়া যায়, তার পাকদণ্ডী স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পাঁচ দশকেরও বেশি হলো।আমি ইশকুল শেষ, বা সদ্য কলেজ। সেই সময়, সেই বয়স আলাদা। একেবারে। সময়কালটি মনে পড়ে যায়। কীভাবে বাংলায় আখ্যান লেখা উচিত তা নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে যখন কথাবার্তা হতো, তিন-চারজন যুবা কথাকার এগিয়ে এসে সামনে দাঁড়াতেন। দুজন গঙ্গোপাধ্যায় এবং জনৈক মুখোপাধ্যায় তখন 'ভৈরব হরষে' মাঠে এসে গিয়েছিলেন। জনৈক 'বসু' ধীরে ধীরে তাঁদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর রাজত্ব শেষ হয়ে যায়নি। বাংলা গদ্যের মূল স্রোত তাঁদের হাতেই নতুন পথ খুঁজছিলো সেই সময়। সুনীল, শ্যামল এবং শীর্ষেন্দুর দুর্ভেদ্য ত্রিভুজ বা সমরেশের বাইরে জনপ্রিয় বাংলা লেখকের অভাব ছিলো না। কিন্তু 'জনপ্রিয়' লেখকদের গদ্য শরৎচন্দ্র, বিমল মিত্র, তারাশঙ্করের ঘরানার বাইরে বেরোতে পারছিলো না। এরকম একটা সময়ে মাঠে একটি উপন্যাস নেমে পড়ে। স্বল্পায়তন রচনাটি লিখেছিলেন বুদ্ধদেব গুহ। পটভূমি পলামুর জঙ্গল। নাম 'কোয়েলের কাছে' (১৯৭০)। 'ভিনি-ভিডি-ভিসি' বললেও কম বলা হবে। উপন্যাসটি বাঙালি পাঠকের কছে অসম্ভব মাত্রায় সমাদৃত হয়েছিলো। জনপ্রিয়তার বিচারে একটা 'কাল্ট' লেখা বলা যায়। আমি তখনও ইশকুলে।আমরা সময় নষ্ট না করে ‘বুগু’ (বুদ্ধদেব গুহ) পড়তে শুরু করে দিই। 'খেলা যখন' নামের রূপকথাটি, বা 'বাতিঘর', শারদীয় সংখ্যায় বাঙালির চমক। আমাদের সেই বয়সে বাম্পার হিট। না পড়লে মনে হতো, পাঠক কী হারাইতেছেন, আপনি জানেন না। নাগরিক রূপকথার বাইরে দেশি বন-পাহাড়ের কথা বলতে গেলে তাঁর 'জঙ্গলমহল' সেকালে ছিলো প্রথম পছন্দ। বেশ কিছুদিন ধরে 'লবঙ্গীর জঙ্গলে', 'বাংরিপোশির দুরাত্তির', ইত্যাদি বাজারে আসতে থাকে। পরের লেখাগুলোতে এসে আমাদের ব্রেক লেগে যায়। 'বুগু' আর 'বিভূ'র ফারাকটা এতো প্রকট হয়ে ওঠে যে আর এগোতে পারিনি। কদিন আগে আবার 'আরণ্যক' পড়তে পড়তে মনে হলো পঞ্চাশ বছর তো হয়ে গেলো প্রায়, আরেকবার 'কোয়েলের কাছে' ট্রাই করা যায়? ইতোমধ্যে আপাদমস্তক বদলে গেছে দুনিয়া। আমরাও নই 'সে তুমি'। দেখি না আরেকবার। এই সময়ের মধ্যে আমি সশরীরে পলামুর জঙ্গলমহল তন্ন তন্ন খেপ মেরেছি। কিছুটা মিলিয়েও দেখা যেতে পারে। সেকালের পাঠকের মনে যে প্লাবিত বিস্ময়বোধের প্রকাশ দেখা যেতো, তার কোনও ঔচিত্য কি খুঁজে পাওয়া যাবে? এতো দিন পর?
বই 'পড়া', ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে, বই 'লেখা'র মতোই একটা শ্রমসংকুল কাজ। জীবনের শুরুতে পাঠকের মন থাকে অসংস্কৃত, একটা খনিজ পাথরের মতো। ক্রমাগত ভাবে তার উপর দিয়ে যখন পঠন-পাঠনের স্রোতধারা বয়ে যায়, পাথরের রুক্ষ ত্বক মসৃণ হয়ে ওঠে। তাতে পালিশ পড়ে। বিমূর্ত কোনও অবয়বী চেতনা রূপ পেতে থাকে। এ এক অনিঃশেষ খেলা। শুরুটা হয়তো মনে পড়ে। বেঁচে থাকতে শেষটা আর ঠাহর হয় না। যে আমি পঞ্চাশ বছর আগে বুগু পড়ে মুগ্ধ হতো, 'মাধুকরী', 'চাপরাশ', আরও কিছু লেখাজোখা, তাতে মস্তো ফুলস্টপ লাগিয়ে চলে গেছে।
'কোয়েলের কাছে' যথেষ্ট 'মন' দিয়ে পড়েও ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে শেষ হয়ে গেলো। কী পেলুম? এখনও যা কিছু ভালো লাগলো, সেটা লিখি আগে,
- প্রকৃতি আর জঙ্গলের বর্ণনা ভালো। মানে বেশ ভালো। এখনও পড়া যায়।
-পলামুর ভূগোল আর ইতিহাস নিয়ে দেওয়া তথ্যগুলি মোটামুটি নির্ভুল।
যা নেওয়া যায় না, তার লিস্টিটা বেশ বড়ো-
- সঞ্জীব চাটুজ্যের 'পালামৌ' আর বুগু'র 'কোয়েল', দুই লেখকেরই দৃষ্টিভঙ্গি এক। অর্থাৎ
আদত বাঙালির 'ড্যাঞ্চি' বাবুর আলখাল্লা পরে পলামুকে বোঝার চেষ্টা। এটা পাল্টায়নি একশো
বছরে।
- শরৎচন্দ্রের ইন্দ্রনাথ,
মহিম ও সব্যসাচী চরিত্রগুলি ভালো করে মন্থন করে একটি 'নায়ক' চরিত্র সৃষ্টি। সঙ্গে শ্রীকান্ত
ও নতুনদা চরিত্ররাও এসেছে। বস্তুত তাঁর কথকতার ভঙ্গিটিই 'শ্রীকান্ত' ঢং-এর। কিন্তু
সেই গভীরতায় পৌঁছোতে পারে না।
- নায়িকারাও শরৎচন্দ্রের
হেঁসেল থেকে এসেছে। রাজলক্ষ্মী থেকে কমল, সবই। তবে তারা 'মেড ইন সাউথ কলকাতা'। তাদের
লক্ষণগুলি দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ, সানি পার্ক, একডালিয়া, সিংহীপার্ক,
ল্যান্সডাউন, গড়িয়াহাট টাইপ হয়ে রয়ে গেছে। বুগু শরৎচন্দ্রের ঢং-কে, বাণিজ্যের ভাষায় 'আপগ্রেড' করেছিলেন।
- পরবর্তীকালে বুগু'র
কাছে যেটা অবসেশন হয়ে দাঁড়িয়েছিলো, অর্থাৎ বন্দুকের ব্যারেলের মাপ ও বাঙালিনীদের বিপজ্জনক ভাইটাল মাপজোপ আকড়ানো বর্ণনার পদশব্দ অন্য সব লেখার মতো এখানেও বেশ মুখর।
- বেশ কিছু জায়গায় অপ্রয়োজনে
জীবন 'দর্শন' ধরতে গিয়ে অত্যন্ত কাঁচা বক্তব্য ও ভাষা ব্যবহার মনস্ক পাঠককে ক্লিষ্ট
করে। 'বিভূ'র থেকে দূরত্বটা পলকে বোঝা যায়। যদিও কোনও মাথার দিব্যি নেই যে বুগু'কে
বিভূ হয়ে উঠতে হবেই। তবে পাঠকের একটা আশা থাকতেই পারে। আর কাউকে তো এ লাইনে আসতেই দেখলুম
না।
- অপ্রাসঙ্গিক শিকারের গল্প শোনানোর প্রবল তাড়না।
জঙ্গলের সঙ্গে শিকার খেলা’কে জড়িয়ে ফেলার দুর্বলতা অতি বিপজ্জনক। করবেট সাহেব কী শেখালেন
তবে?
- থ্রিল আনতে গিয়ে ভোজপুর-শাহাবাদ
থেকে পলামু আসা পাঁড়ে-দুবে-বাবুসাবদের ঠিকেদারি মাফিয়ার সঙ্গে ঢিসুম-ঢিসুমের চিত্রনাট্য।
দূরেই থাকতুম। এতোদিন পর 'কোয়েলের কাছে' এইভাবে বুগু'র থেকে এতো দূরে নিয়ে যাবে, ভাবিনি। একথা ঠিক, তাঁকে কখনও বিমল কর বা রমাপদ চৌধুরীর আসনে বসাবার ধৃষ্টতা করিনি। আবার একথাও ঠিক, এই দুজন কথাশিল্পী বুগু'র প্রজন্মের লেখকদের জন্য বাতিঘরের কাজ করে এসেছেন। উপযুক্ত উত্তরসূরিদের কাছে গুরু'র দক্ষতার কিছুটা আশা করা তো অন্যায় নয়। শুধু 'কোয়েলের কাছে'তে উঁকি দিয়ে একটা অবস্থান নেবার আগে জোয়ান বয়সের মুগ্ধতাটুকুও একটু ঝালিয়ে এওয়া দরকার। ভাবলুম একবার 'একটু উষ্ণতার জন্য' পড়ে নিই। 'কোয়েলের কাছে' ১৯৭০ সালে বই হিসেবে প্রকাশিত হলেও তার আগে 'অমৃত' সাপ্তাহিকে ধারাবাহিক প্রকাশিত হতো বছর দেড়েক ধরে। তখনই প্রথম পড়া। প্রথম কৈশোরের কালে পাঠকের মগজে ধূসর কোষের থেকে অন্তঃস্রাবী গ্রন্থির প্রতাপ অনেক বেশি থাকে। আমিও ব্যতিক্রম ছিলুম না। বই হিসেবে পড়েছিলুম বছর দশেক পরে। তখন অভিজ্ঞতাটি ছিলো 'মিশ্র'। বাংলা 'রোমান্টিক' আখ্যানের একটা জনপ্রিয় মডেল হিসেবে তাকে রেখে দেওয়া যায়। এরকমই মনে হয়েছিলো। কিন্তু এবার এতোটা নিরাশ হবার পর মনে হলো চার-পাঁচ দশক আগের আমি পাঠক হিসেবে কি এই পর্যায় অপরিণত ছিলুম? দীর্ঘকাল ধরে যতোদিন লিখেছেন, তাঁর জনপ্রিয়তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না। বহু পাঠককে (বিশেষত 'পাঠিকা'দের ) তাঁর নামে 'শপথ' নিতে দেখেছি। তাঁরা এখনও আছেন। অতএব তাঁর লেখা নিয়ে কোনও পাঠ-প্রতিক্রিয়া (যদিও একান্ত ব্যক্তিগত) নিতে হলে একটু 'এগিয়ে'ও দেখা উচিত। বুগু'র একটি ব্লকবাস্টার লেখা ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত হয়, 'একটু উষ্ণতার জন্যে'। এটি যখন প্রথম পড়তে গিয়েছিলুম, তখন আমি তিরিশ পেরিয়ে গিয়েছি। দশ-বারো পাতা পড়ে ক্ষান্তি দিয়েছিলুম এটুকুই মনে আছে। এইবার 'গবেষক' হিসেবে মানসিক ভাবে 'প্রস্তুত' হয়ে প্রথম বার পুরোটা পড়লুম। কী বলি? বেশ কষ্ট হলো। কৃত্রিম সাজানো চরিত্র, ফিলমি সেট আপ, যাত্রা টাইপ ক্লাইম্যাক্স এবং কথা, কথা এবং কথা। উদ্দাম জ্ঞানবর্ষা। কেউ বলছে, কেউ লিখছে, কেউ ভাবছে। সবটাই এতো শূন্যগর্ভ, কৃত্রিম, কষ্ট হলো। মানুষের প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে যে এতো ভাসন্ত, ফোঁপরা, অগভীর আখ্যান যে বাংলায় লেখা যায়, ভাবা যায় না। একালের বিস্মরণ চক্রবাত নিঃসন্দেহে এই ঘরানারই ফসল।
আক্ষেপের বিষয় হলেও এটা সত্যি যে আমার কাছে যা 'গ্রহণযোগ্য' মনে হয় না, সেটাই বুগু'র ইউএসপি। একই পটভূমি, অর্থাৎ জঙ্গল নিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বুগুকে আগেই (১৯৬৮) টেক্কা দিয়েছিলেন 'অরণ্যের দিনরাত্রি' নামক কাহিনি লিখে। সুনীলের প্রতিষ্ঠা, জনপ্রিয়তা নিয়ে বুগুর মনে ক্ষোভ ছিলো শুনেছি। কিন্তু শোনা যায়, সেকালে বাঙালি মেয়েরা রণে-বনে-অরণ্যে 'যশয়ন্ত বোস' নামক 'অরণ্যদেব'কে খুঁজে ফিরতো। এখনও কি ফেরে? সুকুমার বোস-রমা-ছুটি ত্রিভুজ নিয়ে যে অর্থপূর্ণ কোনও কথাসাহিত্য হতে পারে, তা বোঝাও আমার নাগালের বাইরে। শরৎচন্দ্রের প্রতি আমার আনুগত্য বিরাট চোট খেয়েছিলো 'শেষ প্রশ্ন' পড়তে গিয়ে। গরম হাওয়ার ফানুসের মতো শুধু ভারি ভারি সংলাপের ভারে দীর্ণ একটি অতি বৃহৎ 'উপন্যাস'। বাস্তব জীবনে মানুষ যেভাবে ভাবে না , যেভাবে কথা বলে না, যেভাবে 'চিঠি' লেখে না সেই সব সংলাপ, বর্ণনা, ভাব সম্প্রসারণ। 'উপন্যাস' আদর্শ প্রচারের মাধ্যম নয়। শ্রীকান্তের স্রষ্টা কীভাবে নিজের কবজির জোরের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলেন, দেখে কষ্ট হয়েছিলো। বুগু'র কবজির জোর নিয়ে নাহয় মৌনই থাকলুম। তিনি হয়তো জনপ্রিয় এখনও। থেকেও যাবেন বহুদিন। 'জনপ্রিয়'তা পেয়েছিলেন, পাঠকের মেধাপ্রিয় হতে পারেননি। পারবেনও না হয়তো আর। তাহাতে এ জগতে ক্ষতি কার?
পাঠকের ঈশ্বর বিভূতিবাবুর অরণ্য জগৎ ছিলো ভাগলপুর, সাঁওতাল পরগনা
আর সিংভূমের পাহাড়-জঙ্গলের তল্লাট। তিনি পলামুর দিকে যাননি। ব্যক্তি আমার ঘনিষ্ট ঘোরাফেরা এই চারটি জায়গাতেই হয়েছে। এখনও হয়। শেষবার যখন 'কোয়েলের কাছে' গিয়েছিলুম,
তার কিছু ছবিছাবা থাক এখানে। দুচার টুকরো ম্যাকক্লাস্কিও। অক্ষর পেরিয়ে যে দৃষ্টির দুনিয়া তার ইশারা
পাওয়া যাবে এই সব পটে।
বুগু'র ক্ষুব্ধ অনুরাগীরা মার্জনা করবেন।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন