কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

<<<< সম্পাদকীয় >>>>

 


কালিমাটি অনলাইন / ১২৫ / দ্বাদশ বর্ষ : পঞ্চম সংখ্যা  


আমরা প্রায়ই আলোচনা করে থাকি, মানুষের জন্মের আদিম যুগ থেকে অগ্রসর হয়ে আমরা সভ্যতার আলোকে আজ আলোকিত এবং তাই নিজেদের সভ্য বলে মনে করি। আর সেইসঙ্গে ঘটেছে সংস্কৃতির বিকাশ, তাই আমরা সংস্কৃতিবান। এই ভাবনার মধ্যে খুব একটা ভুল কিছু নেই, কিন্তু আছে অনেক ফাঁক, যা আমাদের সভ্য ও সংস্কৃতিবান হওয়াতে ব্যাঘাত ঘটায়। এবং তখন সভ্য ও সংস্কৃতিবান নিজেদের মেকী বলে মনে হয়। প্রশ্ন জাগে, বহিরঙ্গে আমরা সভ্য ও সংস্কৃতিবান হলেও অন্তরঙ্গে কতটুকু সভ্য ও সংস্কৃতিবান হতে পেরেছি! আদৌ কি কিছু হতে পেরেছি! আমাদের চারপাশের ঘটমান বিষয়গুলোর ওপর দৃষ্টিপাত করলেই উপলব্ধি করি, এসব তো আদৌ প্রচলিত সভ্য সমাজব্যবস্থায় ঘটার কথা নয়, বরং এসবই সভ্যতাবিরোধী! বস্তুতপক্ষে, একটা সুস্থ সমাজব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত জরুরি পারস্পরিক সম্মানবোধ, কর্তব্যবোধ, সহযোগিতাবোধ এবং সততাবোধ। প্রয়োজন ব্যষ্টিস্বার্থ থেকে সমষ্টিস্বার্থে উত্তোরিত হবার জন্য নিবিড় অনুশীলন। ভাবতে আশ্চর্য লাগে, একদিকে যখন সারা বিশ্ব জুড়ে চলছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যাপক চর্চা, অন্যদিকে তখন চলছে মনুষ্যত্ব হারানোর অলিখিত প্রতিযোগিতা। সাধারণভাবে বিচার করলে, মনুষ্যত্বের পক্ষে যা কিছু বিরোধী কাজ বা গুণ, সভ্যতার প্রথম পর্বে যা বজায় ছিল, সভ্যতা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তা আরও বেড়ে চলেছে। মানুষের লোভ, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা, দম্ভ, অহংকার ইত্যাদি যেসব দোষ আছে, তা তাকে প্ররোচিত করে চুরি, ডাকাতি, হত্যা, দাঙ্গা, ক্ষমতা প্রদর্শন, ধর্ষণ এরকম বিভিন্ন অপকর্মে। মানুষ তখন আর মানুষের পর্যায়ে থাকে না, অমানুষের ঘৃণ্য ভূমিকায় উপনীত হয়। 

ইতিমধ্যে আর জি কর কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় মহিলা চিকিৎসককে নৃশংসভাবে হত্যা ও ধর্ষণকান্ডের পর তিনমাস অতিক্রান্ত হয়েছে। কলকাতা পুলিশের হাত থেকে অপরাধ অনুসন্ধানের কাজ  কেন্দ্রীয়সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে গেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত রূপে মাত্র একজনকে সনাক্ত করা হয়েছে, যাকে ইতিপূর্বে কলকাতা পুলিশও সনাক্ত করেছিল। যদিও সবাই সন্দেহ প্রকাশ করছ্র যে, এই হত্যাকান্ড ও ধর্ষণ একজনের কাজ নয়, বরং সম্মিলিতভাবে এই দুষ্কর্ম করা হয়েছে। বিশেষত অপরাধকর্মের যাবতীয় তথ্য ও প্রমাণ লোপ করার জন্য যে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত, তাতেও কোনো সন্দেহ নেই। একথা স্পষ্ট যে, এই ধর্ষণ ও হত্যাকান্ড পূর্বপরিকল্পিত এবং এর পেছনে আছে কায়েমিস্বার্থের কিছু মানুষ। সুতরাং আমাদের জানা নেই যে, অপরাধীদের শাস্তি কী নির্নিত হবে আদালতে। বিশেষত এই ঘৃণ্য অপরাধের পেছনে যে প্রভাবশালী ও ক্ষমতাশালী গোষ্ঠির মদদ আছে, তাদের কি আদৌ আদালতে পেশ করে শাস্তিদান করা হবে, তারও কোনো সঠিক উত্তর জানা নেই। তবু আমরা সুবিচারের আশায় আছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের জয়ের প্রতীক্ষায় আছি। নির্যাতিতা তিলোত্তমাদের পাশে সর্বদা আছি।  

‘কালিমাটি অনলাইন’ ব্লগজিনের প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের জানাই আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

মাদের সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা :

kajalsen1952@gmail.com / kalimationline100@gmail.com

দূরভাষ যোগাযোগ : 9835544675

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন