কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / তৃতীয় সংখ্যা / ১২৩

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / তৃতীয় সংখ্যা / ১২৩

শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

তৈমুর খান

 

কবিতার কালিমাটি ১৩৮


বিরতি


বিরতির পর আবার দেখা হবে

ততক্ষণ অপেক্ষা করছি বাইরে

ততক্ষণ চায়ের দোকানে একা একা


জীবনটা ভাসছে সময়ের স্রোতে

ভাসতে ভাসতে কোথায় যাচ্ছে কিছুই জানি না

এর মাঝেই বিরতি এল, যা হবে বিরতির পর


কার সঙ্গে দেখা হবে তবে?

যে আসবে আমাকে নিয়ে যেতে

অনেক শূন্যের ভেতর চলে যাব আমি


পৃথিবী ক্রমশ ভূমিকম্পপ্রবণ হয়ে উঠছে

আর আমরা নিজেদের কম্পনমাত্রা মাপছি

আমাদের চাপাপড়া আর্তনাদ কেউ শুনতে পায় না


ব্যস্ত সভ্যতায় সবাই এগিয়ে যেতে চায়

কেউ কেউ নগ্ন অথবা অর্ধনগ্ন

শরীরী পসরায় নিজেদের ফেরি করে ফেরে


মৃত্যু ও জীবন এখন খুব সস্তা

কেউ কেউ কিনে নিচ্ছে সেসব অন্ধকার

আমার সঙ্গেও কথা হবে আপাতত বিরতির পর


বিশ্বদর্শন


ওঠো তুমি আমার ঘাড়ে

তোমায় আমি দেখাবো আকাশ

চন্দ্র-সূর্য গ্রহ-তারা

বাঁশ বাগানের মাথার উপর

কেমন করে পরীরা ওড়ে


এ ঘাড় দীর্ঘ, অনেক উচ্চ

তুমি যদি উঠতে পারো

দেখবে ভুবন এই চরাচর

পায়ের কাছে লুটায় সমুদ্র

বনভূমি ঘাসের মতো কয়েকগুচ্ছ


পাহাড়গুলি টিলার মতো মনে হবে

মানুষগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পিপীলিকা

বাস-ট্রাম দেশলাইয়ের বাক্স

রেলগাড়িগুলি সাপের মতো আঁকাবাঁকা

ঈশ্বর ও নিরীশ্বর সব দেখতে পাবে।


অপমান


অপমান নিয়ে ঘরে এলাম

অপমান ঘুমায়, আমিও ঘুমাই

এক বিছানায়

আজ কোনো আলো নেই

বিদ্যুৎ ও ঝড় বয়ে গেছে

মৃত সব উপলব্ধির জোনাকিরাও


শোকের দরজায় দাঁড়িয়ে বিবেক একা

আজ বিবেকানন্দ খোঁজে

রামকৃষ্ণের পাড়ায় যদিও অনেক জবা ফোটে

জবাদের কোন্ কাজে লাগে কেহই জানে না

শোভারা জানে না সমর্পণ, শুধু শোভা দ্যাখে


আমি ও অপমান আমার স্বজন

চুপচাপ নিরিবিলি পাই

আমরা ঘুমাই যদিও চোখ বুজে থাকি

সারারাত নির্ঘুম কাটাই

অসহ্যরা হাসাহাসি করে

অসহ্যরা ক্ষত জুড়ে নুন-লংকা দেয়


রাস্তাগুলি ক্রমশ পিছল বলে

আমাদের যুবক চিত্ত কেবল আছাড় খায়

এত যে চৈতন্য দোলে তবু হীন রাতে

অপমান এসে আজও গল্প শোনায়...



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন