কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২১

তৈমুর খান

 

কবিতার কালিমাটি ১১৩


বন্ধু এবং বন্দুক

 

 একটা বন্ধু বন্দুক হয়ে ঝুলে থাকে ঘাড়ে

 নিজেকেই হত্যা করো অথবা ভালোবাসো

 

 আকাশ দুর্লভ হয়ে উঠছে

 ছেঁড়াখোঁড়া স্বরলিপিতে ঢেউ

 এখন নৌকা ভাসাবে তো ভাসাও

 

 পশ্চাৎ আলো করে দাঁড়িয়ে আছে সময়

 সব নগ্ন দৃশ্য লগ্ন হয়ে আছে

 জলজ বিকিরণ থেকে অন্ধ চোখের ইশারা

 বোঝা যায় না ঠিক

 

 বন্ধুরা অস্বচ্ছ তবু হত্যা অভিমুখীন

 কার্তুজময় অগ্নিভ রহস্যবিলাসী

 সংশয়ের মুহূর্তে সতত মদ্যপ

 ভারসাম্যহীন

 

 ত্রিকোণ

 

 খুব সচেতনে ত্রিকোণ প্রেমের ছবি গাঢ় হয়

 রেললাইন পেরিয়ে, স্টেশন পেরিয়ে

 সেই নদীর ঘাটে — ধলাই মুণ্ডেশ্বরী...

 তারপর এই জীবন ঘাস

 

 উপহার একে একে রক্তগন্ধে বদল হয়

 বইপত্রের ভেতর ভাঁজ করা চিঠি

 মেসেজে মেসেজে ক্লান্ত মোবাইল

 পড়ে থাকে শিশির ভেজা সংলাপ

 

 আমাদের পোষা সাপ ত্রিকোণ প্রেমের ত্রিভুজে

 লটকে থাকে — এবিসি

 সমবিন্দুর দূরত্বে একটাই সূর্যমুখী

 রোজ রোজ ফুটে ওঠে

 

 ওর হলুদ লালচে রঙে মৌমাছির গান

 দানা দানা উঁকি দেয়—

 বিহ্বল তাকিয়ে দেখে দূর থেকে

 নতুন উদাসী বাঁকা-জলের নদীকে ডাকে

 

 ত্রিকোণ ভেসে যায় একাকী স্রোতে

 

সর্বনাম

 

 কিছু কিছু আড়াল দরজা খুলে দেয়

 ভেতরে ঢুকি, নীরবে নীরবে কথা হয়

 থইথই ঘাসের বন, মাঠময় জল

 অন্তরা থেমে যায় মগ্ন বৈষ্ণবীর

 রাঙা পায়ে ফুটে ওঠে রামকৃষ্ণের জবা

 জানালায় হাহাকার পাখি

 রোজ ডাকে

 সময় নেই, সময় নেই

 ব্যাখ্যার অতীত গান বাজে

 

 দুই টান

 মাঝে শুধু নুনের সমুদ্দুর

 সংসারের ছোট্ট ডিঙা ভাসে

 বিভা ও আঁধার একসাথে

 বারবার আমাকেই ডাকে

 

 আমি কার সর্বনাম?

 অনেক অনেক আমি ঝরে যাই

 সারাদিন সারারাত ঘোরে ও বেঘোরে…

 

অমোঘ কবিতা

 

 অসমান লাইনগুলি পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে

 ঘুমানো বিদ্রোহী আত্মার কাছে

 শব্দের গান

 বাবা একা রাত জেগে কাশে

 আর চোখের জলে ধুয়ে নেয় চাঁদ

 

শরীর কাব্য

 

সব পোশাক খুলে রাখছি

দেখো শরীরের ভাষা

রক্ত মাংস মেদ-মজ্জায়

কত গহ্বর গান ও রহস্য

ছড়ানো আছে পরতে পরতে

 

 হৃদয় কোথায় আছে শরীর জানে না

 এ শরীর তবুও কাব্যময়

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন