কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯

শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়




গন্ধটা

গন্ধটা প্রথম চিনেছিলাম
বছর তিনেক আগে
আজও ছুঁয়ে আছি সেই গন্ধ
অন্তিম প্রতীক্ষালয়ের যাত্রীর শরীর মেখে
ডানে বামে পাশে দূরে সবার সঞ্চয়েই একই গন্ধ!

আমার ক্ষতের সেদিন শুধু মুখ হয়েছিল
আজ সেখানকার যত পুঞ্জিত ক্ষয়
নিজেকে চেনায় আমায়।

দগদগে আজও গন্ধটা
পোড়াকাঠ সরিয়ে কী যেন ওরা দিয়েছিল
আমার হাতে জোর করে
তন্দুরির গন্ধ পেয়েছিলাম।

চামড়ার নীচে প্রোথিত হয়ে আছে সে অসীম দহন
গন্ধটা খুব চেনা আমার
আমাকে পোড়ালে ওরা সেদিন চিনবে গন্ধটা।


আসলে মুখোশটাই মুখ্য

কাঁধের ঝোলায় লুকিয়ে রেখেছো মুখোশগুলো
এক একটা প্রহরে পালটে নাও ওদের
ভালোমানুষি আবার লুকিয়ে ঝোলাতেই!

সৃষ্টিকে যখন কুয়াশা বলে ডাকো
ভ্রম হয় আমারও
সত্যের চোখে চোখ রাখা কতটা কঠিন
জানে মরা সভ্যতার ইমারতও,
উত্তর দক্ষিণের জানালা খুলে সে
মেঘের আড়াল করে দেয় পচাগলা হাহাকারদের!

যেখানে ঘর ঠিক ঘর হয়ে ওঠেনি
বহুমাত্রিক অসম্পূর্ণতার উদ্বাস্তু চিহ্ন সারা শরীরে মেখে মুখোশ পালটে পালটে নেয় কঠিন কক্ষপথে
অতৃপ্ত আত্মা বারবার দেখে যায় ফেলে আসা ঘর!

তবু রোমকূপে জাগে স্নান
করিডোর ঝলসানো পথে বাচ্চাটা কাঁদে
রোজ রোজ যাকে পুড়িয়ে মারতে চাও
একদিন সে নিজেই পৌঁছে যাবে তার ঠিকানায়।


মুক্তধারা

বারবার ব্যর্থ হতে হতে গণতান্ত্রিক অধিকার চিনেছি
প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করেছি আত্মযাতনার পরকাষ্ঠা জুড়ে
সৌভাগ্যের প্রতিকূলে চলা ডুবন্ত পরিণতি
ওই দূরে মরীচিকা হেসে মিলিয়ে গেছে।

ফাটলের আড়ালে যত্ন করে লুকিয়েছি
আমার না ফেরার গান
বুকের মধ্যে বৈরাগী তবু গেয়ে যায়
বৃথা এ মানবজনম পাবেনা আর

ক্লান্তিহীন পথচলার শেষে যখন দেখি
পথটাই সমুদ্রে মিশেছে
অনধিগম্য নিরুচ্চারে ওল্টাতে থাকি মিছিলের পাতা
রক্তের ছোপ লাগা দিনলিপির আঁকিবুঁকি মনে পড়িয়ে দেয়
ভালোবাসা ফুরোনোর পর সবটাই বর্জ্য হয়ে যায়

বাসি মোড়কে সাতবাসি অন্ধকার পুরে
জীবনকে ধন্য করেছি চৌকোনা এক ঘরে
ভাসান আসে প্রতিবছর
টনটন করে ওঠে ব্যথাতুর অবচেতন!





0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন